• খেলাধুলা

    দ্বিতীয় দিন শেষেই জয়ের সুবাস পাচ্ছে বাংলাদেশ

      প্রতিনিধি ৫ এপ্রিল ২০২৩ , ১১:৪৭:৪৪ প্রিন্ট সংস্করণ

    খেলাধুলা ডেস্ক: মিরপুর টেস্টের সবে শেষ হয়েছে দ্বিতীয় দিনের খেলা। তবে এরই মধ্যে জয়ের সুবাস পাচ্ছে বাংলাদেশ। ১৫৫ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শেষ বিকেলে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছে আয়ারল্যান্ড। স্কোরবোর্ডে ২৭ রান যোগ করতেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে সফরকারীরা। চারটি উইকেটই ভাগাভাগি করে নিয়েছেন দুই স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও সাকিব আল হাসান। তৃতীয় দিনে আগামীকাল ১২৮ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাট করতে নামবে আইরিশরা।

    ‘মর্নিং শোজ দ্য ডে’ প্রবাদটা খাটল না। বুধবার (৫ এপ্রিল) ফিল্ডিংয়ে নেমে শুরুটা দারুণ করেছিল আয়ারল্যান্ড। আগের দিন শেষ বিকেলে বাংলাদেশ শিবিরে দুই আঘাতের পর এদিন সকালে দলীয় ৬ রান যোগ করতেই আউট হন মুমিনুল। তবে এরপরের গল্পটা কেবল বাংলাদেশের। দারুণ সেঞ্চুরি উপহার দিলেন মুশফিকুর রহিম। তিন অঙ্ক ছোঁয়ার সম্ভাবনা জাগালেও তা করতে পারেননি সাকিব আল হাসান। তবে ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে করা ফিফটিতে দলকে চাপমুক্ত করেন অধিনায়ক। শেষ দিকে লড়াকু ফিফটিতে লিড বাড়ান মেহেদী হাসান মিরাজ।




    এক সেঞ্চুরি ও দুই ফিফটিতে আয়ারল্যান্ডের ২১৪ রানের জবাবে ৩৬৯ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকদের লিড দাঁড়ায় ১৫৫ রান। শেষ বিকেলে ব্যাট করতে নেমে টাইগার বোলারদের তোপের মুখে পড়ে আয়ারল্যান্ড।

    প্রথম ইনিংসে বল করতে এসেছিলেন ৬০ ওভারের পরে। তবে দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম ওভারেই বল হাতে তুলে নেন সাকিব। সাফল্যও পেলেন হাতেনাতে। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়তে পড়তেও কোনো রকমে রক্ষা পান মারে কমিন্স। চতুর্থ বলে জেমস ম্যাকলামের বিরুদ্ধে আবার এলবিডব্লিউর জোরাল আবেদন করে বাংলাদেশ। আম্পায়ার সাড়া না দেওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন সাকিব। ব্যাটে খেলতে পারেননি ম্যাককলাম, বল আঘাত হানে প্যাডে। বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায়, বল লাগতো লেগ স্টাম্পে। গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ পান আইরিশ ওপেনার।

    সাকিবের পর দারুণ এক ডেলিভারিতে মারে কমিন্সকে এলবিডব্লিউ করেন তাইজুল ইসলাম। অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করা ডেলিভারি শার্প টার্নে ঢুকছিল স্টাম্পের দিকে। ব্যাট নামাতে দেরি করে ফেলেন কমিন্স। বল আঘাত হানে প্যাডে। পরে রিভিউ নিয়ে শেষ রক্ষা মেলেনি। ১২ বলে তিনি করেন ১ রান।




    বাংলাদেশের দুই বাঁহাতি স্পিনারের সামনে রীতিমতো ধুঁকছিল আয়ারল্যান্ড। আর তাতে বাকি কাজটাও সহজ হয়ে যায়। দিন শেষের আগেই আরও দুই উইকেট তুলে নেন টাইগার দুই স্পিনার। যেন বলেকয়ে উইকেট তুলে নিচ্ছিলেন।

    তাইজুল ইসলামের আর্ম ডেলিভারি পেছনের পায়ে দাঁড়িয়ে খেলার চেষ্টা করেছিলেন আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নি। কিন্তু বল তার ব্যাটের বাইরের কানা ছুঁয়ে আঘাত হানে অফ স্টাম্পে। যা ক্যাচ নেন লিটন দাস। ১২ বলে তিনি করেন ৩ রান।

    গোধূলিলগ্নে শেষ আঘাত হানেন সাকিব। টাইগার অধিনায়কের সামান্য ঝুলিয়ে দেওয়া ডেলিভারি সামনের পায়ে ডিফেন্ড করতে চেয়েছিলেন কার্টিস ক্যাম্পার। কিন্তু ঠিকঠাক খেলতে পারেননি। ব্যাটের বাইরের কানা ছুঁয়ে বল জমা পড়ে লিটনের গ্লাভসে। মাত্র ১৩ রানেই চার চারটি উইকেট হারায় সফরকারীরা। অবশ্য এরপর বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টা চালালেন ক্রিজে থাকা দুই ব্যাটার হ্যারি টেক্টর (৮) ও পিটার মুর (১০)।




    এর আগে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দিন শেষে ৩৪ রানে ২ উইকেট হারিয়ে অস্বস্তিতে ছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে দ্বিতীয় দিনে আজ (বুধবার) বাংলাদেশকে টেনে তোলার ভার ছিল মুমিনুল হক ও মুশফিকের কাঁধে। কিন্তু আগের দিনের চেয়ে মাত্র ৬ রান যোগ করতেই বোল্ড হয়ে ফেরেন মুমিনুল।

    অবশ্য সেই চাপে স্বাগতিকদের ভেঙে পড়তে দেননি সাকিব ও মুশফিক। দুজনেই মিলে গড়েন ১৫৯ রানের অনবদ্য এক জুটি। অবশ্য সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে ফিরতে হয়েছে সাকিবকে। শতরান থেকে মাত্র ১৩ রান দূরে থাকতে অফ-স্টাম্পের অনেক বাইরের বল টেনে লেগে খেলতে গিয়ে উইকেটরক্ষকের তালুবন্দী হয়েছেন তিনি। এর আগে সাদা পোশাকে সর্বশেষ সেঞ্চুরি করেছিলেন ২০১৭ সালের ১৪ মার্চ। দীর্ঘ ৬ বছরের সেঞ্চুরিখরা তার আজও কাটানো হলো না।




    সাকিব আক্ষেপ নিয়ে ফিরলেও দিনটা রাঙালেন মুশফিক। মার্ক অ্যাডায়ারের বল পেছনে কাটব্যাক করেই চারের বাউন্ডারি। আর এর মাধ্যমে পূর্ণ করলেন সাদা পোশাকে নিজের দশম সেঞ্চুরি। শতরানের দেখা পেতে তিনি খেলেছেন ১৩৫ বল। অবশ্য দুর্দান্ত খেলতে থাকা মুশফিকও থেমেছেন ব্যক্তিগত ১২৬ রানে। অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে তিনি কামিন্সে তালুবন্দী হন।

    শেষ দিকের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে লড়াই করছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ক্যারিয়ারের চতুর্থ টেস্ট ফিফটি পূর্ণ করে সাজঘরে ফেরেন তিনিও।

    সংক্ষিপ্ত স্কোর:

    আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২১৪

    বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩৬৯

    আয়ারল্যান্ড ২য় ইনিংস: ১৭ ওভারে ২৭/৪ (কমিন্স ১, ম্যাককলাম ০, বালবার্নি ৩, টেক্টর ৮*, ক্যাম্পার ১, মুর ১০*; সাকিব ৭-২-১১-২, তাইজুল ৭-৪-৭-২, মিরাজ ২-১-১-০, এবাদত ১-০-৪-০)




    আরও খবর 16

    Sponsered content