• মহানগর

    বিজিবি-বিএসএফের চার দিনব্যাপী সীমান্ত সম্মেলন সম্পন্ন

      প্রতিনিধি ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৯:১৭:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ

    চট্টবাণী: বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সরাইল, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার এবং ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) ত্রিপুরা, মিজোরাম ও কাচার এবং মেঘালয় ফ্রন্টিয়ারের ফ্রন্টিয়ার আইজি পর্যায়ে চার দিনব্যাপী সীমান্ত সমন্বয় সম্মেলন শেষ হয়েছে।

    বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামে এ সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠান হয়েছে।




    বিজিবির চট্টগ্রাম রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজেদুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশ নেন। বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে বিজিবির সরাইল রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহিদুল ইসলামসহ সব রিজিয়নের অধীনস্থ সংশ্লিষ্ট সেক্টর কমান্ডার, বিজিবির স্টাফ অফিসার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, যৌথ নদী কমিশন এবং জরিপ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

    বিএসএফ মেঘালয় ফ্রন্টিয়ারের ফ্রন্টিয়ার আইজি শ্রী প্রদীপ কুমারের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশ নেন। ভারতীয় প্রতিনিধিদলে বিএসএফ মেঘালয় এবং মিজোরাম ও কাচার ফ্রন্টিয়ারের আইজি ছাড়াও সংশ্লিষ্ট সেক্টরের ডিআইজি, বিএসএফের স্টাফ অফিসার, ভারতের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও ছিলেন।




    গত ১১ সেপ্টেম্বর বিকেলে চট্টগ্রামের হালিশহরে বিজিবির চট্টগ্রাম রিজিয়ন সদর দপ্তরে সীমান্ত সম্মেলন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা নিরসন, অবৈধ অনুপ্রবেশ, মাদকপাচার, মানবপাচার রোধ, স্বর্ণ ও অস্ত্র চোরাচালান রোধসহ বিভিন্ন ধরনের আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমন, সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ এবং পারস্পরিক সম্প্রীতি ও আস্থা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়। চার দিনব্যাপী অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা শেষে যৌথ আলোচনার দলিল স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে সম্মেলনটি শেষ হয় বৃহস্পতিবার।

    সম্মেলনে বিজিবি সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা/আহতের ঘটনা জোরালো ভাবে তুলে ধরে। এ প্রসঙ্গে বিজিবি বিএসএফকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় আনার জন্য আহ্বান জানায়। সীমান্ত হত্যা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বিএসএফের পক্ষ থেকে নন-লেথাল নীতি অনুসরণের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। উভয়পক্ষ সীমান্তে পেশাদারিত্বের সঙ্গে যৌথভাবে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তে রাত্রিকালীন যৌথটহল বৃদ্ধি, সীমান্তবর্তী এলাকার জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, জনসচেতনতা ও জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি গ্রহণ, অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদানের ব্যাপারে সম্মত হয়।




    আন্তঃসীমান্ত অপরাধ যেমন- মাদক পাচার, অবৈধ অনুপ্রবেশ, মানব পাচার, স্বর্ণ, অস্ত্র, জাল মুদ্রার নোট প্রভৃতি চোরাচালান রোধে সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের ওপর উভয় পক্ষ গুরুত্বারোপ করে। সীমান্ত অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সম্পর্কে তথ্য আদান-প্রদান এবং তাদের সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে মাঠ পর্যায়ে শেয়ার করতেও উভয়পক্ষ সম্মত হয়।

    আন্তর্জাতিক সীমানা লঙ্ঘন করে উভয় দেশের নাগরিকদের অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম রোধকল্পে সীমান্তবর্তী এলাকায় জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ব্যাপারে উভয় পক্ষ গুরুত্বারোপ করে।

    উভয়পক্ষ পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ও আস্থা বৃদ্ধির জন্য গৃহীত নানামুখী উদ্যোগ বাস্তবায়নে পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে একমত হন। উভয়পক্ষ আগামী দিনে যৌথ খেলাধুলা, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বিনিময়সহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে সম্মত হয়েছেন।




    উভয়পক্ষ পূর্বানুমতি ব্যতীত সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কোনো ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ না করার ব্যাপারে পারস্পরিক সম্মতি জানান। এছাড়া সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে বন্ধ থাকা উন্নয়নমূলক কাজগুলো জয়েন্ট ভেরিভিকেশনের মাধ্যমে দ্রুত সমাধানের ব্যাপারে সম্মত হন।

    উভয়পক্ষ পরবর্তী সীমান্ত সম্মেলন সুবিধাজনক সময়ে ভারতে অনুষ্ঠানের ব্যাপারে একমত পোষণ করেন।

    সম্মেলন শেষে বিকেলে ভারতীয় প্রতিনিধিদল ভারতের উদ্দেশ্যে প্রত্যাবর্তন করে।




    আরও খবর 25

    Sponsered content