প্রতিনিধি ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৯:০৮:৪০ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টবাণী: সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের পাঁয়তারা করলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ার করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নগরের প্রধান পূজামণ্ডপ হিসেবে বিবেচিত জেএম সেন হল পরিদর্শনকালে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি বলেন, পূজা উপলক্ষে কোনো সুনির্দিষ্ট হুমকি নেই। তবে প্রতিটি নিরাপত্তার ক্ষেত্রেই আমরা প্রত্যাশা করি ভালো হবে। কিন্ত আমরা যেকোনো খারাপ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি রাখি। গতবার জেএমসন হলে হামলায় জড়িত ৭৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বর্তমানে তারা জামিনে চলে এসেছে। চট্টগ্রামে গতবছর দুর্গাপূজার মণ্ডপে হামলার যেসব আসামি জামিনে মুক্ত আছেন, তারা নজরদারিতে আছেন।
তিনি আরও বলেন, আইনের হাত অনেক লম্বা। কেউ কেউ হয়তো, কোনো কোনো সময় কিছু একটা কাজ করে আমাদের বিভ্রান্ত করছে, অশস্তিতে ফেলছে। আইনের চূড়ান্ত বিচারে অবশ্যই তারা পরাজিত হবেন। অতীতের ঘটনা নিয়ে আইনগতভাবে যেভাবে এগোনোর দরকার সেভাবেই এগোচ্ছি। পুলিশের পক্ষ থেকে কড়া বার্তা দিতে চাই, কেউ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের জন্য কোনো ষড়যন্ত্র করলে অবশ্যই আইনের আওতায় আসবেন, তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। পাশাপাশি আমি বিশ্বাস করি অসাম্প্রদায়িক শক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকলে এই বিষয়গুলো যদি তারা আমলে নেয়, সবসময় সতর্ক থাকে, তাহলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য যারা পাঁয়তারা করে গুটিকয়েক লোক তারা কখন সফল হতে পারবে না।
সিএমপি কমিশনার সাংবাদিকদের জানান, এ বছর মহানগরীতে ২৬৬টি পূজামণ্ডপে পূজা হচ্ছে। এসব মণ্ডপে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি মণ্ডপে পোশাকী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশি নজরদারি থাকবে। পাশাপাশি স্ট্যান্ডবাই হিসেবে থাকবে সোয়াট। দুইটি বিষয়ে আমরা নিরাপত্তার কাজ করি, যার একটি শৃঙ্খলা। শৃঙ্খলা ব্যবস্থা যত ভালো হয়, নিরাপত্তা দেওয়া তত সহজ হয়। শৃঙ্খলা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে প্রতিটি মণ্ডপ এলাকায় জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে শৃঙ্খলা কমিটি করা হয়েছে। তারা পুলিশের সঙ্গে কাজ করবে। সবার উপস্থিতিতে সর্বজনীন এ উৎসবকে সর্বজনীন নিরাপত্তায় শেষ করতে চাই। প্রতিটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানোর সময় আমরা প্রত্যাশা করি সবকিছু ভালো হবে। কিন্তু যেকোনো খারাপ পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রস্তুতিও আমাদের আছে। প্রতিটি মণ্ডপে পূজা কমিটিকে সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী নিয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ’
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতসহ ৯টি স্থানে এ বছর প্রতিমা বিসর্জনের দিনে আলাদা নিরাপত্তা পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানান তিনি। সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন শেষ করার অনুরোধ জানান সিএমপি কমিশনার।
পরিদর্শনের সময় সিএমপি কমিশনারের সঙ্গে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত উপ কমিশনার (দক্ষিণ) নোবেল চাকমা, কোতোয়ালী জোনের সহকারী কমিশনার মুজাহিদুল ইসলাম, কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুল কবীর, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি আশীষ ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।