প্রতিনিধি ২৩ আগস্ট ২০২৪ , ৪:৫৭:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টবাণী ডেস্ক: ফেনী জেলার ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া, সোনাগাজী, দাগনভূঁঞা ইত্যাদি উপজেলার ১৯ হাজার ৯০০ পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ লাখ ১ হাজারের বেশি মানুষ।
জেলায় ৮০০ মেট্রিকটন চাল, ৩২ লাখ টাকা, ২ হাজার ৯৯৮ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) পর্যন্ত বিতরণ করা হয়েছে ২৫০ মেট্রিকটন চাল, ২২ লাখ টাকা, ২ হাজার ৯৯৮ প্যাকেট শুকনো খাবার।
ফুলগাজী উপজেলায় ১ জন মারা গেছে। ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) চট্টগ্রাম জেলা তথ্য অফিস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। উজান থেকে আসা পানি ও ভারী বর্ষণ-দুটো মিলেই বিভীষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তিন জেলায়।
কুমিল্লা জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে এ পর্যন্ত ১২টি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি রয়েছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৬৬১টি পরিবার, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬০০ জন। জেলায় ৫৮৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে, গঠন করা হয়েছে ৯৪টি মেডিক্যাল টিম।
এ জেলায় ১ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিকটন চাল বরাদ্দের বিপরীতে বিতরণ করা হয়েছে ৪১ হাজার মেট্রিকটন। নগদ ১২ লাখ টাকা বরাদ্দের বিপরীতে বিতরণ করা হয়েছে ৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা।উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
খাগড়াছড়ি জেলার সদর মহালছড়ি, দীঘিনালা, পানছড়ি, রামগড়, মাটিরাঙা, মানিকছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি, গুইমারা ইত্যাদি উপজেলায় এ পর্যন্ত ২৭টি ইউনিয়ন ও ৩টি পৌরসভা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি রয়েছে ৩৩ হাজার ৫১২ পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৭১৮ জন। দুর্গত মানুষের জন্য ৫০২ মেট্রিকটন চাল, নগদ ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে ১৮ হাজার ৩৩০ মেট্রিকটন চাল, ৪ হাজার ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার ও নগদ ৭০ হাজার টাকা। এ জেলায় ৩৬২ মেট্রিকটন চাল ও ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা মজুদ রয়েছে।
এ জেলায় ৯৯টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ৯ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। জেলার সদর, রামগড় ও দীঘিনালা উপজেলায় পানি বাড়ছে। মাইনী ও চেঙ্গী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ছাত্র প্রতিনিধি, রেড ক্রিসেন্ট, অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী দল এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ ও আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিত মানুষের মধ্যে শুকনো খাবার ও খিচুড়ি বিতরণ চলমান রয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলামের সভাপতিত্বে গুগল মিট প্লাটফর্মে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বিভাগের সব জেলা প্রশাসক ও কমিটির সদস্যরা অংশ নেন।
সভায় জানানো হয় কুমিল্লা, ফেনী, খাগড়াছড়ির অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। অন্যান্য জেলাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব জেলায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন আশ্রয় নিচ্ছেন। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বেসামরিক প্রশাসন, ছাত্র ও স্বেচ্ছাসেবীরা উদ্ধারকাজ পরিচালনা করছেন ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের পাশে রয়েছেন।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, বন্যাদুর্গত মানুষদের শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, পানি বিশুদ্ধকরণ টেবলেট ও রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
তিনি জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্টদের ভারী বর্ষণ ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার নির্দেশ দেন।
সভায় বিদ্যুৎ, চিকিৎসাসেবা, বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ, গবাদি পশু ও ফসল রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানানো হয়। চট্টগ্রাম ও পার্বত্য এলাকার জেলা প্রশাসকদের পাহাড়ধসের বিষয়ে সজাগ থাকার নির্দেশনা দেন বিভাগীয় কমিশনার।