নিজস্ব প্রতিবেদক: নগরের ব্যস্ততম নিউমার্কেট মোড় থেকে ফলমণ্ডিতে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে ফুটপাত, রাস্তা, নালা উদ্ধার করায় মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) টাইগারপাসের চসিক কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় মেয়রকে ধন্যবাদ জানিয়ে ব্যবসায়ীরা কোনো চাপের মুখেই যাতে এ অভিযান বন্ধ না হয় সেই দাবি জানান।

ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র রেজাউল সাহসিকতার সঙ্গে নিউমার্কেট মোড় থেকে ফলমণ্ডিতে উচ্ছেদ অভিযান চালানোয় জনগণ ও প্রকৃত ব্যবসায়ীরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে। আমরা ব্যবসায়ীরা ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে, সরকারকে লাখ লাখ টাকা ট্যাক্স দিয়ে ব্যবসা করতে বসেছি।

কিন্তু হকার নেতা নামে কিছু চাঁদাবাজের কাছে আমরা জিম্মি ছিলাম। চট্টগ্রামের লাখ লাখ মানুষ এদের কাছে জিম্মি হয়ে ফুটপাতে হাঁটতে পারত না। আপনি উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে ফুটপাত দখলমুক্ত করায় নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসার আড়ালে যে চুরি-ছিনতাই হতো তা বন্ধ হয়ে গেছে।

নিউমার্কেট মোড়ে অতীতে প্রশ্রয় পেয়ে ধীরে ধীরে টেরিবাজারের আশপাশেও একটি চক্র চাঁদার বিনিময়ে হকার বসাচ্ছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় এই চক্রটি ফুটপাতসহ সরকারি ভূমি দখল করছে। তাদের উচ্ছেদ করতে বললে তারা পুনর্বাসনের দাবি জানায়। তাদের যতই পুনর্বাসন করা হোক হকার ব্যবসার আড়ালে রাস্তা-ফুটপাত দখল বন্ধ হবে না। কারণ দখলের মধ্যে একটা মধুর হাঁড়ি আছে। চাঁদাবাজির মধুর হাঁড়ি ভেঙে দিতে হবে। আমরা জানি উচ্ছেদ অভিযান ঠেকাতে একটি অপশক্তি মেয়রসহ প্রশাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছে। তবে, চট্টগ্রামের প্রকৃত ব্যবসায়ীরা মেয়র মহোদয়ের সঙ্গে আছেন।

ব্যবসায়ীদের বক্তব্যের পর মেয়র রেজাউল বলেন, উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করতে অনেক হুমকি-ধামকি আসছে, কিন্তু কোনো লাভ হবে না। আমি পদ-পদবির ধার ধারি না। আল্লাহ দিলে পদ থাকবে, নইলে থাকবে না। কিন্তু কোনো অন্যায়ে আপস করব না। প্রয়োজনে শুক্র-শনিবার হলিডে মার্কেট করে দেব অন্য কোনো স্থানে, কিন্তু ফুটপাতে না।

পুনর্বাসন প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, হকারদের পুনর্বাসনে জহুর হকার মার্কেট গড়ে তোলা হয়েছিল, কিন্তু সেখানে এখন কয়জন হকার আছে? হকাররা ব্যবসা করুক। কিন্তু ফুটপাত দখল করে হকাররা বসতে পারবে না। দিনেও না, সন্ধ্যায়ও না। আমাদের দাবি একটাই, দখলমুক্ত ফুটপাত চাই। ফুটপাতে হকার থাকবে না, এটাই ফাইনাল।

এ সময় মেয়র ফুটপাত রক্ষায় ব্যবসায়ী এবং গণমাধ্যমের সহযোগিতা চান।

সভায় বক্তব্য দেন তামাকুমণ্ডি লেইন বণিক সমিতির সভাপতি সরওয়ার কামাল ও সাধারণ সম্পাদক আহমদ ফরিদ দুলাল, রিয়াজউদ্দিন বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম, টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমিনুল হক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দীন, চিটাগং মেট্রোপলিটন শপ ওনার্স অ্যাসোশিয়েশন সভাপতি আবুল কাশেম ও সাধারণ সম্পাদক মনজুর আলম চৌধুরী, চট্টগ্রাম বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম গ্রুপের সভাপতি-ইলিয়াছ খাঁন আইয়ুব, আগ্রাবাদ সিঙ্গাপুর ব্যাংকক মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সালেহ আহমদসহ নগরীর বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় উচ্ছেদ অভিযানের মাধ্যমে নিউমার্কেট মোড় থেকে ফলমণ্ডির ফুটপাত, সড়ক হকারদের দখলমুক্ত করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।