প্রতিনিধি ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৮:৪৭:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টবাণী: দেশ যখন সাফজয়ী ফুটবলারদের সাফল্যে ভাসছে তখনি বিষাদময় ঘটনা ঘটলো চট্টগ্রামে। নগরের ইয়াকুব আলী দোভাষ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কাবাডি টিমের ছাত্রীদের শারীরিক নির্যাতন, ম্যাচে খেলতে না দেওয়ার প্রতিবাদে নিজের চুল কেটে প্রতিবাদ জানিয়েছেন এক শিক্ষিকা।চাকরি থেকে অব্যাহতিও নিয়েছেন তিনি।
বিষয়টি শরীরচর্চার শিক্ষক জাহিদা পারভীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে জানানোর পর ভাইরাল হয়ে যায়। নিন্দার ঝড় ওঠে। তবে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নিপা চৌধুরী সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
জাহিদা পারভীন সাংবাদিকদের বলেন, থানা পর্যায়ের গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য ইয়াকুব আলী দোভাষ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১২ ছাত্রীর একটি কাবাডি দল গঠন করা হয়। গত ৮ সেপ্টেম্বর ম্যাচ ছিল। কাবাডির নিয়ম অনুযায়ী চুলে ক্লিপ লাগানো যায় না। চুল চোখের সামনে চলে আসায় মেয়েদের খেলতে অসুবিধা হয়। এ কারণে তারা ফ্রেঞ্চ স্টাইলে বেণী করে।
তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী ম্যাচের এক দিন আগে অংশগ্রহণকারী দলের ছবি তুলে কো-অর্ডিনেটরের কাছে জমা দিতে হয়। ওই দিন (৭ সেপ্টেম্বর) ছাত্রীদের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষে ছবি তোলার জন্য ছাত্রীদের জার্সি পরে তৈরি হতে বলি। তারা বেণী করে জার্সি পরে তৈরি হয়। এর মধ্যে আমি টয়লেটে যাই। সেখান থেকেই আমাদের স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার চিৎকার-চেঁচামেচি শুনতে পাই।
টয়লেট থেকে বের হয়ে শুনি প্রধান শিক্ষিকা ছাত্রীদের বকাঝকা করেছেন। কয়েকজন ছাত্রীকে চুল ধরে মারধর করেছেন। তখন দুই মেয়েকে কান্না করতে দেখি। প্রধান শিক্ষিকাকে জানাই যে, আমি ছাত্রীদের বেণী করতে বলেছি। এ কথা শুনে তিনি আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। পরে ছাত্রীদের সান্ত্বনা দিই। প্রধান শিক্ষিকার কারণে পরের দিন ম্যাচে অংশ নিতে দেরি হয়। এতে প্রতিপক্ষ ওয়াকওভার পেয়ে যায়।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীদের বকা, অপমান ও চুল ধরে টানাটানির প্রতিবাদে মাথা ন্যাড়া করেন জাহিদা। এ নিয়ে ২২ সেপ্টেম্বর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নিপা চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ছাত্রীদের বকাবকি বা মারধর করিনি। ছবি তোলার আগে তাদের বলেছিলাম, এভাবে (ফ্রেঞ্চ স্টাইলে) বেণী করলে তো হবে না। স্কুলে সবসময় যে বেণী করে আসো, সেভাবে করো। শুধু এটুকু বলেছি। এখানে মারামারি বা বকাঝকার কোনো ঘটনা ঘটেনি।
কোতোয়ালী থানা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জিয়াউল হুদা ছিদ্দিকী বলেন, এ ঘটনার বিষয়টি আমরা অবগত আছি। কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যেভাবে বলবে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক সিরাজউদ্দিন মো. আলমগীর ফেসবুকে লিখেছেন, ধিক্কার জানাই খেলাধুলায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী প্রধান শিক্ষিকা ও স্কুল ম্যানেজমেন্ট কমিটিকে। এদের কারণেই স্কুল পর্যায়ে খেলাধুলা আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না।