প্রতিনিধি ২০ ডিসেম্বর ২০২২ , ৯:৩৭:০১ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টবাণী: তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মূল কথা হচ্ছে সব ক্ষেত্রে অটোমেশন। মানুষ ব্যস্ততার জন্য যা করতে পারে না, তা-ই যন্ত্রের সাহায্যে দূর থেকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অথবা প্রোগ্রাম সেট করে দেওয়ার মাধ্যমে সুচারু রূপে সম্পন্ন করাই হচ্ছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের গোড়ার কথা।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আমাদের যাপিত জীবনকে অনেক সহজ করে দেবে। তবে এর সুফল পেতে হলে আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষ ও বিশেষজ্ঞ হতে হবে।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ-বাংলাদেশ প্রেক্ষিত’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্য সচিব বলেন, ২০০৯ সাল থেকে আমরা তৃতীয় শিল্প বিপ্লবের সুফল ধরতে পেরেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপরেখা যখন দেন তখন অনেকে বুঝতেও পারেনি এটা কী। বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেছিলেন যে, এজন্য আমাদের প্রযুক্তিতে জোর দিতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশে এখন বাস্তবতা। এর সুফল আমরা ভোগ করছি। এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগ। সহজ কথায় এটা হলো অটোমেশন। মানুষের সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়াই প্রযুক্তির সহায়তায় অনেক কাজ হবে। এটাই চতুর্থ শিল্প বিপ্লব।
তথ্যসচিব বলেন, সরকার যখন ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলেছিল তখন তা অনেকে বুঝতে পারেনি।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের একজন বৃদ্ধা মা’কে প্রবাসী ছেলের সঙ্গে ঘরে বসে সরাসরি কথা বলিয়ে দেওয়ার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, এভাবেই কষ্ট করে তখন ডিজিটাল বাংলাদেশ ধারণা সর্বক্ষেত্রে বোঝানো ও জনপ্রিয় করতে হয়েছিল। আশার কথা হলো- তখনও গণমাধ্যম নতুন এ ধারণাটি প্রচার করে এর সপক্ষে ব্যাপক জনমত তৈরি করেছিল। বর্তমানে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ধারণাটিও তুলে ধরার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে সক্রিয় অংশ নিতে হবে। এর বিস্তারিত তুলে ধরে নতুন এ ধারণাটি মানুষকে বোঝাতে হবে।
তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলায় যেসব উপাদান ভূমিকা রাখবে তার অন্যতম হলো স্মার্ট সিটিজেন। আর স্মার্ট সিটিজেন তৈরিতে গণমাধ্যমকে অতীতের মতো চালকের ভূমিকা নিতে হবে।
তথ্যসচিব বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে মানুষের সমস্যা অটোমেটিক চিহ্নিত হয়ে তা সে উপায়েই সমাধান হবে। রোবোটিক বা সেন্সর সেটিংস এর মাধ্যমে মানুষের সব কাজ হবে। ফলে ইকোনমি সেভ হবে, সময় বাঁচবে, নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি বাইরে থেকেও মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করা যাবে।
তিনি বলেন, যন্ত্র এগিয়ে এলে মানুষ বেকার হয়ে পড়বে-এমন ভাবার কোনো কারণ নেই, কেননা ১০ লাখ লোক বেকার হলে ১ কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তখন মানুষ নিজ যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী আয় করবে। গ্রেডভিত্তিক আয়ের সুযোগ আর থাকবে না। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এ ধারণাটি নিজ দায়িত্বে প্রচারের জন্য তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের অনুরোধ জানান।
বিটিভির মহাপরিচালক সোহরাব হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজাউল করিম।
বক্তব্য দেন বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার মাহফুজা আক্তার। সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক নেতা, জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা সেমিনারে অংশ নেন। সেমিনারের বিভিন্ন সেশনে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় করণীয় বিষয়ে অংশগ্রহণকারীরা সুপারিশ তুলে ধরেন।
এর আগে তথ্যসচিব বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। তিনি একটি গাছের চারাও রোপণ করেন।