প্রতিনিধি ৭ আগস্ট ২০২৩ , ৯:৫৩:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামে টানা ৪র্থ দিনের বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে অধিকাংশ নিচু এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, অলি-গলি, নিচতলার বাসাবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ডুবেছে। জলাবদ্ধতায় বাসাবন্দী হয়ে পড়ছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ডুবে যাওয়ায় বন্ধ ঘোষণা করা হয় নগরীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা গিয়ে ফেরত আসে।
গতদিনের মত আজ সোমবার ও বৃষ্টি-জোয়ারের পানিতে ডুবে গেছে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, অলি-গলি, নিচতলার বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। জলাবদ্ধতার কারণে বিদ্যুতায়ন এড়াতে বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘ সময় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন বাসিন্দারা।
গতকাল (রবিবার) বিকেল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের রেকর্ড অনুযায়ী বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ২৩১: ৪ মিলিমিটার এবং আমবাগান আবহাওয়া অফিসের ছিল ১৯৬ মি:মিটার।
এদিকে আজ দুপুরের (সোমবার) পর্যন্ত পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে। গতকাল (রবিবার) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ৩০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করেছে । যা গত ৩০ বছরের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত বলে জানিয়েছেন আবাহওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ বাবু উজ্জ্বল কান্তি বলেন, চলতি আগস্ট মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টি হওয়ার কথা ৫৩০ দশমিক ৬ মিলিমিটার। কিন্তু গত ছয়দিনেই ৫৪৭ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। রবিবার (গতকাল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৩০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করেছে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস। যা গত ৩০ বছরে সর্বোচ্চ।
তিনি আরো বলেন, চলমান বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে সোমবার (আজ) এবং আগামীকাল (মঙ্গলবার) পর্যন্ত। আরো দু’দিন ভারী বৃষ্টির আভাস দিয়েছে চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিস।এরপর থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কিছু টা কমতে পারে।
এছাড়া বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে আজ ও ডুবো ডুবো অবস্থা ছিল নগরীর বহদ্দারহাট, মুরাদ পুর, বাকলিয়া, চকবাজার, চাক্তাই -খাতুনগঞ্জ,আগ্রাবাদ ,গোসাইলডাংগা ,মা ও শিশু হাসপাতালের এলাকা, হালিশহর বড়পুল, হালিশহর কাট্টলী, ফৌজদারহাট, পাহাড়তলী ঝর্ণাপাড়া, বন্দরের ২৬,২৪,৩৬,৩৭,৩৮, ইপিজেডের দক্ষিণ হালিশহর (নিউমুরিং), নয়ারহাট নেভীহল রোড, সিমেন্ট ক্রসিং নিচু এলাকা, আলী শাহ পাড়া, আকমল আলী রোড নিচু এলাকা, নারিকেল তলা এলাকা, হিন্দু পাড়া, খেজুরতলা বেড়ীবাধ,চরপাড়া, পতেংগার হাদিপাড়ি ,হোসেন আহমদ পাড়া,নাজির পাড়া, দক্ষিণ পতেংগা মাইজপাড়া রাজা পুকুর লেইন,বিজয় নগর এলাকা সহ উপকূলীয় অঞ্চলের আশ-পাশের নিচু এলাকায় তীব্র জলযট সৃষ্টি হয়েছে।
এসব এলাকার সাধারণ মানুষের কষ্ট ও দূর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। তারা গত কয়েকদিন ধরেই জলাবদ্ধতার কারণে বাসাবাড়িতে রান্না বান্না, খাবার তৈরি করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন। কেউ কেউ ২/৩ রাতে নির্ঘুম কাটছে এবং অনেকে কাজ কর্মে যেতে পারছেন না জানায়।
অনেক ভুক্তভোগী লোকজন উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য জলাবদ্ধতা কে দায়ী করে ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন,শতশত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ড্রেন-নালা খাল সময় মত না হলেও মানুষের কষ্ট লাঘবের কোন সংস্থা তাদের দায়িত্ব পালন করছেন না।বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা অতি জরুরী।অন্যতায়, আগামী দিনে আরও ব্যাপক দূ্র্যোগ আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন।