প্রতিনিধি ২৫ এপ্রিল ২০২৪ , ৯:৩৬:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টবাণী: ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলায় নতুন চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার হোমনা থানা এলাকার বাঘা শরীফ বলী। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে অনুষ্ঠিত বলী খেলার ১১৫তম আসরের ফাইনালে মুখোমুখি হয় কুমিল্লার বাঘা শরীফ ও রাশেদ।
এর আগে প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়ে রাঙামাটির সৃজন চাকমাকে হারিয়ে ফাইনালে যান রাশেদ। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে রাসেলের এর প্রতিপক্ষ ছিলেন বাঘা শরীফ।
ফাইনালে প্রায় ১১ মিনিট লাড়াইয়ের পর বাঘা শরীফের কাছে হার মানতে হয় রাশেদের।
এদিকে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে জয় পান সৃজন চাকমা। এনিয়ে টানা তৃতীয়বার তৃতীয় স্থান অধিকার করেন তিনি।
শিষ্যকে সুযোগ দিলেন গুরু:
এবারের আসরে খেলার কথা ছিল গত আসরের চ্যাম্পিয়ন শাহ জালাল বলীর। নামও দিয়েছিলেন জমা। কিন্তু শেষ মুহুর্তে শিষ্যকে সুযোগ দিতে নিজেই সরে দাঁড়ালেন আসর থেকে। জীবন বলী শারীরিক অসুস্থতায় নিজের নাম প্রত্যাহারের পর বাঘা শরীফের নাম প্রস্তাব করলেও তাকে নিতে রাজি হয়নি বলী খেলা কমিটি। কিন্তু দ্বিতীয়বার তাকে আবারও সুযোগ দিতে গুরু শাহ জালালও সরে দাঁড়ান। তাই তো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর কুস্তির রিংয়ে দাঁড়িয়ে গুরুর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুলেননি শরীফ।
তিনি বলেন, আমি প্রথমবার খেলতে এসেছি। গতবারের চ্যাম্পিয়ন শাহ জালাল ভাই আমার গুরু। তিনি না খেলে আমাকে খেলার সুযোগ করে দিয়েছেন। উনি অনেক বড় মনের মানুষ। আপনারা উনার জন্য দোয়া করবেন।
গত আসরের রানারআপ জীবন বলী বলেন, আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। তাই নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছি। আমার পরিবর্তে বাঘা শরীফকে খেলানোর নাম প্রস্তাব করেছি।
এর আগে বিকেল চারটায় শুরু হয় বলী খেলার ১১৫ তম আসর। এতে ৮৪ জন বলী অংশ নেন।
আসর শুরু আগেই দর্শকদের আগমনে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় লালদীঘির ময়দান।
১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের সনামধন্য ব্যবসায়ী আব্দুল জব্বার সাওদাগরের এ বলী খেলার সূচনা করেন। সেই থেকে প্রতি বছরের বৈশাখ মাসের ১২ তারিখ এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ব্যতিক্রমধর্মী এ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য ব্রিটিশ সরকার আবদুল জব্বার মিয়াকে খান বাহাদুর উপাধিতে ভূষিত করলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।
সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৫ এপ্রিল আয়োজিত জব্বারের বলী খেলার ১১৪তম আসরে কুমিল্লার শাহজালাল বলীর কাছে হেরে ছিলেন চকরিয়া উপজেলার তরিকুল ইসলাম জীবন।
এবার জব্বারের বলী খেলা ও বৈশাখী মেলাকে ঘিরে লালদীঘি ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।