প্রতিনিধি ২৮ জুলাই ২০২৩ , ৯:৩৫:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টবাণী ডেস্ক: রাজধানীর গুলিস্তানে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এক জন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তবে তার বয়স ২৫ বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। আহতরা হলেন- মো. আরিফুল (১৮), মো. জোবায়ের (১৮), মো. রনি (৩২) ও মো. মোবাশ্বের (১৮)।
প্রত্যক্ষদর্শী সোহাগ নামে এক ব্যক্তি জানান, আওয়ামী লীগের সমাবেশ শেষে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের সমর্থক এবং কেরানীগঞ্জের শাহিন চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া চলে। ওই সময় বিএনপির কয়েকজন কর্মী ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। ফলে ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এতে কোন গ্রুপ চাকু দিয়ে আঘাত করে তা আমি বলতে পারব না। আমি আমার বন্ধু আরিফুলকে গুরুতর আহত অবস্থায় দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসি।
আহত যুবক আরিফুল জানান, আমার গ্রামের বাড়ি নওগাঁ জেলার সাপাহার থানার গৌরীপুর গ্রামে। আমি আমার এলাকার এক ভাইয়ের সঙ্গে পল্টনে বিএনপির সমাবেশে এসেছিলাম। পল্টন থেকে পায়ে হেঁটে গুলিস্তানে বাসে ওঠার উদ্দেশ্যে এলে হঠাৎ দেখি ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া চলছে। প্রাণ বাঁচাতে আমি দৌড় দেই। এমন সময় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন যুবক ছুরি দিয়ে আমার পিঠে আঘাত করে। তখন আমি দৌড়ে একটি রিকশা নিয়ে আমার এক বন্ধুকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে আসি।
আহত জোবায়ের জানান, আমি আমার বন্ধুদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমাবেশে যাই। সেখান থেকে ফেরার পথে আমার মোবাইলের জন্য একটি কাভার কিনতে গোলাপ শাহ মাজার এলাকায় গেলে দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার মাঝে পড়ি। তখন কে বা কারা আমার ডান হাতে ছুরি দিয়ে আঘাত করে বলতে পারি না। পরে আমি সেখান থেকে দৌড়ে রিকশা নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে আসি। আমাদের বাড়ি বংশালের নতুন বাজারে। আমার বাবার নাম মফিজুল ইসলাম।
অপর আহত যুবক মো. রনি জানান, আমি কেরানীগঞ্জ থেকে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ভাইয়ের পক্ষ হয়ে আজ আওয়ামী লীগের মিছিলে আসি। পরে সমাবেশ শেষে গোলাপ শাহ মাজার এলাকা দিয়ে ফেরার পথে হঠাৎ দেখতে পাই দুই গ্রুপে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছে। প্রথমে আমরা জানতে পারি আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। পরে দেখি বিএনপির সঙ্গেও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছে। এই ঘটনা দেখে আমি দৌড় দিলে অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন লাঠি দিয়ে আমাকে বেদম মার দেয়। এ সময় আমি দৌড়ে সেখান থেকে একটি রিকশা নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে আসি।
গুরুতর আহত মোবাশ্বের জানান, আমি বিএনপির একজন কর্মী। সমাবেশ শেষে একটি মোবাইল কেনার জন্য গুলিস্তান মাজার এলাকায় গেলে হঠাৎ দেখি সেখানে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছে। আমি কোনো কিছু না বুঝে দৌড় দিলে কয়েকজন যুবক আমার তলপেটে ছুরিকাঘাত করে। আমি কোনোরকম রিকশা নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে আসি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (ঢামেক) পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি সন্ধ্যার পর গুলিস্তানে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মরদেহ হাসপাতালে এসেছে এবং চারজন আহত অবস্থায় এসেছে। এই দুই গ্রুপের রাজনৈতিক পরিচয় কী, এ মুহূর্তে আমরা বলতে পারছি না। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম বলেন, আমরা শুনেছি গুলিস্তানে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহত একজনকে হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা গেছেন। কোন দল এরকম সংঘর্ষের ঘটনা ঘটিয়েছে আমরা এখনো সুনির্দিষ্টভাবে জানতে পারিনি। তবে ধারণা করছি আওয়ামী লীগের কোনো দুই গ্রুপ হতে পারে।