• মহানগর

    চট্টগ্রামে জমিয়তুল ফালাহ্ জাতীয় মসজিদে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত

      প্রতিনিধি ২৯ জুন ২০২৩ , ৯:১৪:৪৫ প্রিন্ট সংস্করণ

    0Shares

    চট্টবাণী: মুসলিম জাহান ত্যাগের মধ্য দিয়ে সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে নিজেকে সমর্পণ করে সিরাতুল মুস্তাকিমের পথে চলার অঙ্গীকারে প্রত্যয়ী হওয়ার এক সফল অনুষ্ঠান পবিত্র ঈদুল আজহা।

    প্রতিবারের মতো এবারও চট্টগ্রামে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে জমিয়তুল ফালাহ্ জাতীয় মসজিদে।

    সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় নগরীর ঐতিহ্যবাহী এ মসজিদে প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয় বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) সকাল সাড়ে ৭টায়।




    প্রথম ও প্রধান জামাতে ইমামতি করেন খতিব সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দীন আল কাদেরী।

    ঈদের নামাজ আদায় করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রী মীর মো. নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দক্ষিণ আফ্রিকার অনারারি কনসাল জেনারেল সোলায়মান আলম শেঠ, সাবেক মেয়র ও জাতীয় পার্টির নেতা মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।

    এসময় শিক্ষা উপমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ঈদের নামাজ আদায় করে প্রধানমন্ত্রী এবং দেশবাসীর জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া কামনা করেছি। মানুষের অধিকার আদায়ের জন্যই আমাদের রাজনীতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর দীর্ঘায়ু কামনা করেছি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি চেয়েছি। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে এবং সবাইকে সঙ্গে নিয়েই হবে।




    একই স্থানে দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৮টায়। দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেন পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা আহমদুল হক।

    ঈদের জামাত শেষে খুৎবা পাঠ করা হয়। এরপর অনুষ্ঠিত হয় দোয়া ও মোনাজাত। মোনাজাতে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনার পাশাপাশি সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ’র গুনাহ মাফ চেয়ে দোয়া কামনা করা হয়েছে। যেকোনো বিপদ থেকে দেশকে হেফাজতের জন্য আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করা হয়েছে।

    সকালে জমিয়তুল ফালাহ্ মসজিদে প্রধান ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করার জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে মুসল্লিরা আসেন। নামাজের পর একে অপরকে আলিঙ্গন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।




    ঈদের খুৎবা-পূর্ব বয়ানে খতিব কোরবানির গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করেন। হিংসা বিদ্বেষ থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, ইসলামী মূল্যবোধের অন্যতম বিষয় হলো- যা কিছু ঘৃণা ও হিংসা বিদ্বেষ সৃষ্টি করে এবং যা কিছু আমাদের পারষ্পরিক সৌহার্দ্য ও সম্পর্ক বিনষ্ট করে তা থেকে দূরে থাকা। আর আমাদের আচার আচরণে পারষ্পরিক ভালোবাসা ও মায়া-মমতা বিদ্যমান থাকা। এসকল মূল্যবোধ আল্লাহর রজ্জুকে শক্তভাবে ধারণ করার চূড়ান্ত পদক্ষেপ হিসেবেই বিবেচিত।

    ‘মূল উদ্দেশ্য হলো, হৃদয়েও যদি কোনও পশুসুলভ আচরণ থাকে সেই পশুত্বকে জবাই করতে হবে। হাদিসে আছে, পশু জবাই খোদার নৈকট্য লাভের একটি মাধ্যম। তবে তা ওই ব্যক্তির জন্য, যে নিষ্ঠার সাথে কেবল আল্লাহতায়ালার ভালোবাসায়, তাঁর ইবাদতের উদ্দেশ্যে ঈমান সহকারে পশু জবাই করে। এমন কোরবানিকে আরবিতে ‘নুসক’ বলা হয়েছে, যার আরেকটি অর্থ ‘অনুগত’। আত্মত্যাগের মহিমায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যারা আল্লাহর নামে কোরবানি করে, তাদের জন্য সীমাহীন সওয়াবের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রাসুলুল্লাহ (সা.)’।




    এদিকে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া পাড়া ও মহল্লার জামে মসজিদ এবং সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে প্রায় ১৬৪টি জামে মসজিদ ও ঈদগাহ ময়দানে ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়। কেন্দ্রীয় ঈদ জামাত কমিটির উদ্যোগে প্রায় শতাধিক ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

    নগরের লালদীঘি শাহী জামে মসজিদ, হযরত শেখ ফরিদ ঈদগাহ মসজিদ, সুগন্ধা আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, চকবাজার সিটি করপোরেশন জামে মসজিদ, জহুর হকার্স মার্কেট জামে মসজিদ, দক্ষিণ খুলশী আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, আরেফিন নগর কেন্দ্রীয় কবরস্থান জামে মসজিদ, সাগরিকা গরুর বাজার জামে মসজিদ, মা আয়েশা সিদ্দিকী চসিক জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।




    ঈদের নামাজের পরই আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে পশু কোরবানি করা হয় নগরের বিভিন্ন স্থানে। চসিকের পক্ষ থেকে পশু জবাইয়ের জন্য নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে ৩০৪টি স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও যত্রতত্র কোরবানি দিতে দেখা গেছে।

    জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় ঈদ জামাত কমিটির উদ্যোগে নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের সামনে সকাল ৮টায় ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইমামতি করেন বাইতুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসার সাবেক প্রিন্সিপ্যাল মাওলানা অধ্যক্ষ ড. সাইয়েদ মুহাম্মদ আবু নোমান।




    0Shares

    আরও খবর 25

    Sponsered content