• মহানগর

    চট্টগ্রাম আদালতে কঠোর নিরাপত্তা বলয়

      প্রতিনিধি ২১ নভেম্বর ২০২২ , ৯:১৮:০২ প্রিন্ট সংস্করণ

    চট্টবাণী: ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণ থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার পর চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

    সোমবার (২১ নভেম্বর) সকাল থেকে চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় নিরাপত্তার অতিরিক্ত ১৪ জন পুলিশ সদস্য মোতায়ান করা হয়।এছাড়া কারাগার থেকে জঙ্গি আনা নেওয়ায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।



    চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রশিকিউশন) মো. কামরুল হাসান বলেন, আজ সোমবার সকাল থেকে আদালতে কঠোর নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলা হয়েছে। আদালতে আগের তুলনায় অতিরিক্ত ১৪ জন্ বেশি পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

    তিনি আরও বলেন, কোনো জঙ্গিকে আদালতে আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ সবসময় সতর্ক অবস্থানে থাকে। জঙ্গি পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে আরও বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আদালত এলাকায় দিন-রাতে পুলিশ সদস্যরা মোতায়েন থাকে।



    চট্টগ্রাম মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. আবদুল রশীদ বলেন, চট্টগ্রাম আদালত এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে আমরা এখনো পর্যন্ত সন্তুষ্ট। জঙ্গি পালিয়ে গেছে, সেটা নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হলে চলবে না। কিন্তু জঙ্গিরা বাইরে থাকলে তারা সংগঠিত হওয়ার সুযোগ আছে। এই ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারী আরো বাড়াতে হবে।

    তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম কারাগার থেকে জঙ্গি আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আর কারাগারে থেকে মোবাইলে কথা বলার সুযোগ রয়েছে, সেখান থেকে জঙ্গিরা মোবাইলে কথা বলে সংগঠিত হওয়ার সুযোগ আছে। জঙ্গিরা মোবাইলে কথা বলার সুযোগ থাকলে সেটা বন্ধ করতে হবে।



    এনিয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (জনসংযোগ) পংকজ দত্ত বলেন, আমাদের নিয়মিত চেকপোস্ট চলমান রয়েছে। চেকপোস্টে করার সময় বিশেষভাবে সর্তক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকার ঘটনার পর চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারাগার থেকে জঙ্গি আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের প্রিজন ভ্যানের সামনে আর পিছনে পুলিশের স্কট থাকবে। আর আদালত এলাকায় তখন বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।



    এর আগে রোববার (২০ নভেম্বর ) ঢাকার সিএমএম ভবনের ৮ তলার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালে মোহাম্মদপুর থানার একটি মামলা চার্জগঠনের জন্য ছিল। সেজন্য পালিয়ে যাওয়া মইনুল হাসান শামীম ও আবু সিদ্দিক সোহেলসহ কারাগারে থাকা ১২ জনকে আদালতে হাজির করা হয়। হাজিরা শেষে চারজনকে ঢাকা সিএমএম আদালতের হাজতখানায় নেওয়ার জন্য নিচে নামিয়ে ভবনের মূলগেটের বাইরে নিয়ে আসেন চার জন পুলিশ। ওই সময় দুটি মোটরসাইকেলে চার অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী প্রথমে পুলিশের চোখে স্প্রে মারে। এরপর একজন পুলিশ সদস্যকে মারধর করে পালিয়ে যাওয়া দুজন নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের (সাবেক আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) সদস্য। তাঁরা জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন এবং লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এই জঙ্গি সংগঠনের নেতা মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ জিয়াউল হক। যাঁর পরিকল্পনায় ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত একাধিক লেখক, প্রকাশক, ব্লগার ও সমকামী অধিকারকর্মীকে হত্যা করা হয়। ইতোমধ্যেই দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার পর বেনাপোল স্থলবন্দরসহ দেশজুড়ে ‘রেড অ্যালার্ট’জারি করা হয়েছে। জঙ্গিদের ধরিয়ে দিতে পারলে ১০ লাখ টাকা করে মোট ২০ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।