• পার্বত্য চট্টগ্রাম

    আর কত বছর পর্যটন বন্ধ থাকলে স্বাভাবিক হবে থানচির জনপদ ?

      প্রতিনিধি ৬ এপ্রিল ২০২৫ , ৯:৪৯:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ

    0Shares

    মোঃ শহিদুল ইসলাম শহীদঃ কয়েক বছর ধরে বান্দরবানের কয়েকটি উপজেলাতে পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধ রয়েছে নিরাপত্তা জনিত কারণে। তার একটি সুন্দরের লীলাভূমি নামে খ্যাত থানচি।মনোরম সুন্দরের আকৃষ্ট হয়ে প্রতি বছর দেশের নানা প্রান্ত হতে ছুটে আসে হাজার হাজার ভ্রমণ পিপাসুরা।

    করোনা মহামারী,সশস্ত্র সংগঠন কুকিচীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা এবং সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানের ফলে পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে উপজেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতে ভ্রমণে নিষেধ রয়েছে কয়েক বছর ধরে।

    দীর্ঘ সময় ধরে পর্যটকদের ভ্রমণ চালু না হওয়ার ফলে পর্যটন সংশ্লিষ্ট বোটচালক, গাইড,তেল বিক্রেতা,হোটেল মোটেল ব্যবসায়ী,স্থানীয় পাহাড়ে পণ্য কুটির শিল্প বাঁশ বেত আসবাবপত্র ফসল ইত্যাদি বিক্রয়ের সাথে জড়িত শত শত কিশোর যুবক যুবতী দীর্ঘদিন ধরে বেকার হয়ে পড়েছে। যার কারণে পারিবারিক অভাব অনটন দেখা দিয়েছে, উপরোক্ত পেশার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফোনে বোট চালক কোসাই মারমা বলেন,সাংগু নদীতে প্রায় দুইশতাধিক বোট রয়েছে। সেই হিসেবে প্রতি বোটে ড্রাইভার হেল্পার দুইজন হিসেবে মোট ৪০০ এর অধিক লোক এই পেশার সাথে জড়িত। কুকিচীন সমস্যা হওয়ার পর থেকে পর্যটকদের আসা-যাওয়া বন্ধ থাকায় সবাই বেকার, বোট চলাচল নাই বললেই চলে।

    সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় পদ্মগিরি হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টের মালিকের সাথে। তার দোকান বন্ধ থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাই আর কতদিন লস দিয়ে দোকান খোলা রাখবো ?এভাবে মাসের পর মাস পর্যটকদের আনাগোনা বন্ধ থাকলে আর কয়দিন পর ভিক্ষা করা ছাড়া উপায় হবে না ।

    তাহ্ জিং ডং আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ী মহম্মদ আসলাম বলেন, হোটেল কর্মচারী বেতন কারেন্ট বিল ও প্রতিদিনের খরচ মিলিয়ে প্রতিমাসে লসের খাতায় নাম তুলতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে হোটেল বিক্রি করে দিতে হবে। কথা হয় মোটরসাইকেল চালক সাথে তিনি বলেন, চল্লিশটির মত ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক রয়েছেন আগের মতো ভাড়া এখন আর নাই।

    পর্যটকদের উপর নির্ভরশীল থানচি তমা তুঙ্গী লিক্রী সড়ক, রেমাক্রি-আলীকদম-বান্দরবান । এই উপজেলায় প্রায় একশটির মতো মাহিন্দ্রা ভিসেভেন্টি রয়েছে তাদেরই একই অবস্থা।

    সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় সড়কের দাঁড়িয়ে থাকা চালক মানিকের সাথে। তিনি বলেন, ভাই কি বলবো, আগের চাইতে ভাড়া অর্ধেকই নেমে এসেছে। যেখানে ভাড়ার জন্য কোন টেনশন করতে হতো না সেখানে এখন যাত্রীর আশায় সড়কের দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।

    এ বিষয়ে জানতে জানতে চাইলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ৩৮ বিজিবি বলিপাড়া জোন কমান্ডার লেঃকর্ণেল মোঃ জহিরুল ইসলাম বলেন, এটি রাষ্ট্রিয় একটি বিষয়। রাষ্ট্রের প্রয়োজনে যখন অনুমতি দিবে তখন পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা দিয়ে পর্যটন স্পটগুলোতে নিয়ে যাওয়া হবে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন সহ বিভিন্ন পর্যায়ে কথা হচ্ছে।পর্যটক সংশ্লিষ্টদের বেকার সমস্যা সমাধানের কথা চিন্তা করে জেলা উপজেলা প্রশাসন সহ বিভিন্ন পর্যায়ে এ বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা হয়েছে। অতি শীঘ্রই নির্দিষ্ট এলাকায় চলাফেরা বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

    এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল বলেন, এখনো পর্যন্ত অনুমতি দেওয়া হয়নি, এই বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে কথা হয়েছে অনুমতি পেলে পর্যটকদের যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে এবং তা জানানো হবে।

    উল্লেখ্য যে, দীর্ঘ সময় ধরে থানচিতে পর্যটক যাতায়াত বন্ধ ও পর্যটন সংশ্লিষ্টদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে।

    0Shares

    আরও খবর 29

    Sponsered content