প্রতিনিধি ২৮ নভেম্বর ২০২৪ , ১১:৫০:০৮ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টবাণী : এবারের বইমেলার কলেবর আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত অমর একুশে বইমেলা আয়োজনের এক প্রস্তুতি সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মেলার কলেবর বৃদ্ধির অংশ হিসেবে সভায় সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের নেতৃবৃন্দ মেলার ভেন্যু নগরের জিমনেসিয়াম মাঠে করার প্রস্তাব দেন। এছাড়া, মেলার সময়সূচি ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে ২৬ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করার অনুরোধ জানান।
চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন মেলার ভেন্যু নির্ধারনের চিঠি দেয়া এবং প্রস্তাবিত সময়সূচি নির্ধারণের কথা বিবেচনার ঘোষণা দেন।
সভায় মেয়র ডা. শাহাদাত বলেন, অমর একুশে বইমেলা আমাদের সংস্কৃতি, ভাষা এবং মুক্তচিন্তার প্রতীক। এটি জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সর্বাত্মকভাবে এই মেলার সুষ্ঠু আয়োজন নিশ্চিত করবে। বই জ্ঞান ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে বিধায় তরুণ প্রজন্মকে মাদক, মোবাইল আসক্তি, কিশোর গ্যাং কালচার থেকে দূরে রেখে নৈতিক চিন্তাসমৃদ্ধ হিসাবে গড়ে তুলতে চসিক পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের বইমেলায় সম্পৃক্ত করব। প্রকাশকদের প্রস্তাবসমূহ আমরা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে।
তিনি জানান, জিমনেসিয়াম মাঠে মেলা আয়োজন এবং সময়সূচি নির্ধারণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমি আশা করি, এই মেলা চট্টগ্রামের মানুষের মধ্যে জ্ঞানের প্রতি আকর্ষণ এবং নতুন প্রজন্মের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ জাগাতে সহায়ক হবে।
‘চসিকের আওতাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের বইমেলায় সম্পৃক্ত করতে হবে। এর মাধ্যমে তারা বইয়ের প্রতি আগ্রহী হবে এবং জ্ঞানের জগতে প্রবেশের সুযোগ পাবে। আমরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষার্থীদের মেলা পরিদর্শন এবং বিভিন্ন সাহিত্যকর্মে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেব। বইমেলা হবে তাদের জন্য একটি নতুন অভিজ্ঞতার দ্বার উন্মোচন। ’
মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, মোবাইল আসক্তির ফলে নতুন প্রজন্ম শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা বই পড়ার অভ্যাস হারাচ্ছে, যা তাদের জ্ঞানচর্চা এবং সৃজনশীলতার জন্য বড় বাধা। বইমেলা শুধু বই কেনা-বেচার জায়গা নয়; এটি একটি চর্চার কেন্দ্র, যেখানে নতুন প্রজন্মকে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করা সম্ভব। তাই, মোবাইল আসক্তি থেকে দূরে রাখতে শিক্ষার্থীদের বইমেলায় সম্পৃক্ত করতে হবে। এতে তারা বইয়ের প্রতি আগ্রহী হবে এবং প্রযুক্তির অপব্যবহার থেকে বিরত থাকতে শিখবে। চসিক এই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, বইমেলাকে সফল করতে এবং পুরস্কার বিজয়ীদের তালিকা নির্ধারণের জন্য কয়েকটি উপ-কমিটি গঠন করা হবে। এসব কমিটি সঠিকভাবে কাজ করলেই বইমেলা সার্থকভাবে আয়োজন করা সম্ভব হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। বইমেলার সাফল্যের জন্য প্রয়োজন সকলের সমন্বিত প্রয়াস। এখানে ব্যক্তিগত ইগো বা স্বার্থের স্থান নেই। একমাত্র সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই আমরা একটি সফল, প্রাণবন্ত এবং স্মরণীয় বইমেলা উপহার দিতে পারব।
প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রকাশক ডা. মাহফুজুর রহামন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু, চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন, কবি ও প্রকাশক রাশেদ রউফ, মুহাম্মদ শামসুল হক, চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি মো. সাহাব উদ্দীন হাসান বাবু, সাধারণ সম্পাদক আলী প্রয়াস, কবি ও প্রকাশক রুহু রুহেল, চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সহ-সভাপতি রেহেনা চৌধুরী, মিজানুর রহমান শামীম, প্রকাশক ফারহানা রহমান শিমু, মঈন ফারুক, মুহাম্মদ নুরুল আবসার, গাজী মুহাম্মদ জাহেদ, এম জসিম উদ্দিন, লিটন শীল, শামসুদ্দীন শিশির, ওমর ফারুক, আরিফ রায়হান, শিফা রাসেল, মো: শহিদুল করিম চৌধুরী, সুব্রত কান্তি চৌধুরী, একরাম আজাদ, নিয়াজ মো: শিহাদ, মনিরুল মনির, গোফরান উদ্দীন টিটু, ড. সৌরভ শাখাওয়াত, মুহাম্মদ আজিম উদ্দীন, আবু নাছের মুহাম্মদ তৈয়ব আলী, আফছার উদ্দিন লিটন, মিনহাজুল ইসলাম মাসুম।