প্রতিনিধি ১২ জুলাই ২০২৩ , ১১:০৫:২০ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টবাণী: মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, দেশের রাজনীতিতে আলোচিত ও চ্যালেঞ্জিং সময় অতিক্রম করছি। চট্টগ্রাম-১০ আসনে উপ-নির্বাচন বানচালের আশঙ্কা আছে।
বিএনপি-জামায়াতকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, তাদের প্রতি আহ্বান- যা করবেন নিয়ম মেনে করবেন। নির্বাচন বানচাল করার মতো কোনো ইচ্ছা থাকলে সেখান থেকে সরে আসবেন।
বুধবার (১২ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ অনেক বড় সংগঠন উল্লেখ করে আ জ ম নাছির বলেন, একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন থেকে বিরত আছে। শুধু তা নয়, ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ভুল থেকে শিক্ষা নেয়নি, অতীতের জ্বালাও পোড়াও আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতেও একই পন্থা অবলম্বনের অপচেষ্টায় আছে। এখানে যোগ্য লোকের অভাব নেই। ২৯ জন মনোনয়ন পত্র নিয়েছিলেন। বাকি ২৮ জন প্রার্থীকে সহায়তা করছে।
দেশ ও মানুষের নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত জানিয়ে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, যাতে মানুষের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়। সহিংস পথ পরিহার করে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিবেন, এ আহ্বান করবো রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি। বিদেশি প্রতিনিধিরা তাদের প্রতিক্রিয়া দিবে। আমরা একটা স্বাধীন দেশ। এখন আমরা অর্থনৈতিক মুক্তির লড়াইয়ে আছি। সেই লক্ষ্যও অর্জিত হবে।
আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, আজ ঢাকায় দুটি সমাবেশ। যতটুকু জানি উনারা এক দফার সমাবেশ করবেন। আর আরেকটি শান্তি সমাবেশ। নির্বাচন ঘিরে কোনো সহিংস পরিস্থিতি আমরা আন্তরিকভাবে চাই না। ৩৭টি দলকে অনুরোধ করবো, রাজনীতিকে রাজনীতিতেই রাখবেন। কোনো সহিংসতাকে যেন উস্কে দেওয়া না হয়। গতবার সমাবেশের আগে তারা আমার সাথে যোগাযোগ করেছিল। যেখানে চেয়েছে সেখানে সমাবেশ করেছে। কিন্তু যাওয়ার সময় বঙ্গবন্ধুর দেওয়াল চিত্র ভেঙে দিয়ে তাদের নিচু মানসিকতার প্রকাশ ঘটিয়েছে। সেরকম কিছু চাই না। কেউ নিজে থেকে ভোটে না এলে সেটা তাদের বিষয়। ভোটে পর্যবেক্ষণ থেকে শুরু করে যা কিছু সব নির্বাচন কমিশন করবে।
তিনি আরও বলেন, নগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ৩ কোটি সুবিধাভোগীর মধ্যে কতজন এই নগরে কি সুফল ভোগ করছেন তা তালিকা করে মানুষের কাছে পৌঁছে দেবো।
ভোটারদের ভোটদানে অনাগ্রহ বিষয়ে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, সাংগঠনিক সর্বশক্তি দিয়ে প্রত্যেক ভোটারের কাছে ৫-৭ বার করে যেতে চাই। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক হবে।
হিরো আলম বা নুরের মতো তথাকথিত নেতার উত্থানে এদের নেপথ্যে থেকে সহযোগিতা করছে বিএনপি। তারা চায় না, দেশ সমৃদ্ধ হোক। তারা রাজনীতিকে ভিন্ন ধারায় পরিচালিত করছে। গুলশান-বনানীতে হিরো আলমের প্রার্থী হওয়া কি স্বাভাবিক? এটা দুঃখজনক, আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। মানুষকে এসব বিষয় জানাতে চাই, জনগণ যেন মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত না হয়।
চট্টগ্রাম-১০ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু বলেন, চট্টগ্রামের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ও লক্ষ্য অর্জনে আমরা একসঙ্গে বহুবার কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছি। ৪২ বছর আগে রাজনীতি শুরু করেছি। অতীতে চট্টগ্রামের রাজনৈতিক আদর্শ প্রতিষ্ঠায় শুধু নয় সকল ক্ষেত্রে মানুষের বঞ্চনা মেটাতে মহিউদ্দিন চৌধুরীর সংগ্রামে সামিল হয়েছি। এটাই চট্টগ্রামের রাজনৈতিক ইতিহাস। আমি নির্বাচিত হলে শুধু নৌকার বিজয় হবে তা নয়, সুশাসনেরও বিজয় হবে। নৌকার বিজয়কে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা থেকে ছিটমহল পর্যন্ত নিয়ে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামের কিছু নির্দিষ্ট কষ্ট আছে, কিছু অপ্রাপ্তি আছে। কষ্ট লাঘবে সরকার অনেক উদ্যোগ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি চট্টগ্রামের ওপর আছে। এখানকার দুঃখ বেদনা তিনি জানেন। প্রত্যাশার সাথে সমস্ত রাষ্ট্রীয় প্রচেষ্টাকে যুক্ত করেছেন। নির্বাচিত হলে মানুষের প্রত্যাশা পূরণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাজ করবো। সবার প্রচেষ্টা আন্তরিক হলে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, দলীয়ভাবে শৃঙ্খলা অনুসরণ করি। কর্মীদেরও অবশ্যই তা অনুসরণ করাতে যা করণীয় তা করবো। দল ও নেতার স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রক্ষা করতে সচেষ্ট থাকবো।
নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন মশিউর রহমান চৌধুরী, চন্দন ধর, শফর আলী, নঈম উদ্দিন আহাম্মদ, ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, শফিক আদনান, শফিকুল ইসলাম ফারুক, শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, বখতেয়ার উদ্দিন খান, দিদারুল আলম চৌধুরী, জহর লাল হাজারী, ড. নেছার উদ্দিন আহমদ মনজু, ফরিদ মাহমুদ, দেলোয়ার হোসেন খোকা প্রমুখ।