• খেলাধুলা

    মুশফিকের ফিফটিতে লড়াই করার পুঁজি পেল বাংলাদেশ

      প্রতিনিধি ৯ মে ২০২৩ , ৮:৩০:০০ প্রিন্ট সংস্করণ

    খেলাধুলা ডেস্ক: ইংল্যান্ডের বাউন্সি কন্ডিশনে ইনিংসের শুরুতেই বাংলাদেশকে চেপে ধরেছিল আইরিশ পেসাররা। জশ লিটল-মার্ক অ্যাডায়ারের তোপের মুখে সুবিধা করতে পারেননি দুই ওপেনার তামিম ইকবাল-লিটন দাস। তবে মিডল অর্ডার ব্যাটাররা প্রতিরোধ গড়লেও কেউই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত মুশফিকের হাফ সেঞ্চুরিতে লড়াই করার পুঁজি পেয়েছে বাংলাদেশ।

    চেমসফোর্ডে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৪৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬১ রান করেন মুশফিক। ৬১ রানে ৩ উইকেট হসিকার করে ইনিংসের সেরা বোলার লিটল।

    ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতে ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। আইরিশদের হয়ে বল হাতে ইনিংস ওপেন করা জশ লিটল প্রথম ওভারেই বেশ ভুগিয়েছেন বাংলাদেশি ব্যাটারদের। নতুন বলে এই পেসারের বাড়তি সুইং আর পেস সামলাতে পারেননি লিটন। ইনিংসের চতুর্থ বলটি অফ স্টাম্পের ওপর ইয়র্কার করেছিলেন লিটল, সেখানে সোজা ব্যাটে ডিফেন্স করতে গিয়ে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি লিটন। তাতে বল আঘাত হানে তার প্যাডে। আর আম্পায়ার তাতে আঙ্গুল তুলতে খুব একটা সময় নেননি।




    লিটনের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তামিম ইকবালও। যদিও শুরুটা ভালোই করেছিলেন এই ওপেনার। দুই বাউন্ডারিতে ভালো শুরুর আভাস দিয়েও থিতু হতে পারেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলটি অফ স্টাম্পের অনেকটা বাইরে ফুলার লেন্থে করেছিলেন মার্ক অ্যাডায়ার। সেখানে বড় শট খেলতে গিয়ে তামিমের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল চলে যায় উইকেটকিপার লরকান টাকারের গ্লাভসে। তাতে আউটের আবেদন করেন আইরিশরা। কিন্তু আম্পায়ার তাতে সাড়া দেননি। ফলে রিভিউ নেয় তারা। তাতে সিদ্ধান্ত বদলে আউট দিত্যে বাধ্য হন আম্পায়ার।




    দুই ওপেনারের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন সাকিব আল হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত। তাদের দৃঢ়তায় দলীয় অর্ধশতক পূরণ করে বাংলাদেশ। কিন্তু শুরুর পাওয়ার প্লে শেষে আর বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না সাকিব। ১২তম ওভারের প্রথম বলে গ্রাহাম হিউমকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ব্যাটে বলে করতে পারেননি সাকিব। তাতে বল সরাসরি আঘাত হানে তার উইকেটে। সাজঘরে ফেরার আগে ২১ বলে ২০ রান করেছেন এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার।

    সাকিব ফিরে যাওয়ার পরও দুর্দান্ত ব্যাটিং করছিলেন শান্ত। শুরুতে কিছুটা ধীরগতির ব্যাটিং করলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। হৃদয়ের সঙ্গে চতুর্থ উইকেট জুটিতে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করে ব্যাক্তিগত হাফ সেঞ্চুরির খুব কাছেই ছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর মাইলফলক ছুঁতে পারেননি। ২২তম ওভারের চতুর্থ বলে কুর্টিস ক্যাম্পারকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সীমানায় অ্যাডায়ারের হাতে ধরা পড়েন শান্ত। ৭ চারে ৬৬ বলে ৪৪ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে।




    দেশের মাটিতে সর্বশেষ সিরিজে দুর্দান্ত খেলেছিলেন তাওহিদ হৃদয়। নিজের অভিষেক সেই সিরিজের ফর্ম টেনে নিতে পারলেন না ইংল্যান্ডে। আইরিশ পেসারদের সামলে উইকেটে থিতু হলেও ইনিংস বড় করতে পারলেন না এই তরুণ ব্যাটার। ২৭তম ওভারের তৃতীয় বলটি অফ স্টাম্পের বাইরেফুল লেন্থে করেছিলেন গ্রাহাম হিউম। এই পেসারকে ডিফেন্স করতে গিয়ে আউট সাইড এইডজে ধরা পড়েন হৃদয়। উইকেটের পেছনে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়েছেন লরকান টাকার। সাজঘরে ফেরার আগে ৩১ বলে ২৭ রান করেছেন হৃদয়।

    ১২২ রানে পঞ্চম উইকেট হারানোর পর দায়িত্ব বেড়ে গিয়েছিল মিরাজের। সেটার ছাপও ছিল তার ব্যাটিংয়ে। অভিজ্ঞ মুশফিকের সঙ্গে দেখে-শুনেই খেলছিলেন এই তরুণ অলরাউন্ডার। কিন্তু হঠাৎ মাথা গরম করে বআইপড ডেকে আনেন তিনি! ৩৮তম ওভারের তৃতীয় বলে জর্জ ডকরেলকে স্লগ সুইপ করেন মিরাজ। কিন্তু ব্যাটে-বলে ঠিকমতো টাইমিং না হওয়ায় এইডজ হয়ে বল ওপরে উঠে যায়। তাতে ধোহেনির হাতে ধরা পড়েন ২৭ রান করা মিরাজ।




    জন্মদিনে খেলতে নেমে ট্যাক্টরের কাছ থেকে যেন উপহার পেলেন মুশফিক! ৩১তম ওভারের চতুর্থ বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে লেন্থ ডেলিভারী ছিল, মুশফিক কাট করার পর হাওয়া ভাসতে ভাসতে বল চলে যায় ব্যাকওয়াড পয়েন্টে। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা হ্যারি ট্যাক্টর জায়গায় দাঁড়িয়ে বলের নাগাল পেলেও হাতে জমাতে পারেননি। তাতে ১৯ রানে জীবন পাওয়া মুশফিক ৬৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। তার ব্যাট থেকে এসেছে সর্বোচ্চ ৬১ রানের ইনিংস। যা এই মাঠে ওয়ানডেতে কোনো ব্যাটারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যাক্তিগত ইনিংস।

    ৪৫তম ওভারে মুশফিক ফিরে গেলে অলআউটের শঙ্কায় পরে বাংলাদেশ। তবে শেষদিকে তাইজুল ইসলাম ও শরিফুল ইসলামের ব্যাটে ভর করে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৪৬ রান তোলে তামিমের দল।