• আন্তর্জাতিক

    মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিন গ্রেপ্তার

      প্রতিনিধি ৯ মার্চ ২০২৩ , ১০:৩৯:৪৩ প্রিন্ট সংস্করণ

    0Shares

    আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশটির আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করেছে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হবে বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন সংস্থা।

    এক বিবৃতিতে মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশন (এমএসিসি) বলেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিনকে তার সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন চালু করা একটি অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রকল্প নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

    ২০২০ থেকে ২০২১ সালে ১৭ মাসের জন্য মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মুহিদ্দিন ইয়াসিন। ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অর্থপাচার সংক্রান্ত আইনে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হবে বলে জানিয়েছে এমএসিসি।



    সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী ও তার দল ওই ব্ছরের নভেম্বরে ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের কাছে হেরে যাওয়ার পর দুর্নীতির তদন্তের মুখোমুখি হয়েছে।

    করোনাভাইরাস মহামারি চলাকালীন কাজ পাওয়ার বিনিময়ে নির্মাণ ঠিকাদাররা মুহিদ্দিন ইয়াসিনের বারসাতু পার্টির অ্যাকাউন্টে অর্থ জমা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগের বিষয়ে বৃহস্পতিবার সকালের দিকে স্বেচ্ছায় দেশটির দুর্নীতি দমন কমিশনে জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নিতে যান ৭৫ বছর বয়সী মুহিদ্দিন।



    এর আগে, বৃহস্পতিবার সকালের দিকে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা বারনামাকে এমএসিসির প্রধান আজম বাকি বলেছেন, শুক্রবার আদালতে হাজিরা দেবেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিন।

    এমএসিসির কার্যালয়ে যাওয়ার আগে মুহিদ্দিন ইয়াসিনকে নামাজ আদায় করতে দেখা যায়। এ সময় দলের কর্মী-সমর্থকরা তাকে ঘিরে রাখেন। পরে এমএসিসির কার্যালয়ে যাওয়ার সময় নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

    একই অভিযোগের বিষয়ে বারসাতুর আরও কয়েকজন রাজনীতিবিদকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং দু’জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।



    প্রধানমন্ত্রীর আসন থেকে বিদায় নেওয়ার পর মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসাবে অভিযুক্ত হতে যাচ্ছেন মুহিদ্দিন ইয়াসিন। ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছিল দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে। চূড়ান্ত আপিলে হেরে যাওয়ার পর গত বছরের আগস্ট থেকে ১২ বছর মেয়াদের কারাদণ্ড শুরু হয়েছে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর।

    ২০১৮ সালের নির্বাচনে নাজিব রাজাক হেরে যাওয়ার পর থেকে মালয়েশিয়ার রাজনীতি বিভিন্ন ধরনের ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশটির স্বাধীনতা লাভের পর ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউএমএনও পার্টির নিরবচ্ছিন্ন দেশ শাসনের অবসান ঘটে ওই বছর।

    নির্বাচনে জয়ী হওয়ার আগে আনোয়ার ইব্রাহিম দুর্নীতি ও সমকামিতার দায়ে কারাগারেও যান। তবে তিনি সেই সময় জোর দিয়ে বলেছিলেন, ক্ষমতা থেকে দূরে রাখার জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আনা হয়েছে।



    মুহিদ্দিন ও তার দল নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর দুর্নীতির তদন্তের মুখোমুখি হয়েছে। দেশটির দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা দলের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং অর্থনৈতিক প্রকল্পে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে দুই নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে।

    অভিযুক্ত দু’জনের একজন হলেন ওয়ান সাইফুল ওয়ান জান। তিনি বলেন, বিরোধীদলকে দমন-পীড়নের মাধ্যমে পঙ্গু করার লক্ষ্য নিয়েছে আনোয়ার সরকার।

    সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে ওয়ান সাইফুল বলেন, ‘আনোয়ার সংস্কারপন্থী নন। তিনি একজন পুরোনো প্রতিহিংসাপরায়ণ সুবিধাবাদী।’



    তবে মুহিদ্দিন ইয়াসিনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের কার্যালয়ের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার সকালের দিকে তিনি বলেছিলেন, মুহিদ্দিনের দুর্নীতির মামলায় তিনি কোনও ধরনের হস্তক্ষেপ করছেন না। তার বিরুদ্ধে আইনপ্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।

    ‘এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে বলাটা ঠিক নয়,’ বলেন আনোয়ার ইব্রাহিম।

    সূত্র: রয়টার্স, আলজাজিরা, বারনামা।



    0Shares

    আরও খবর 15

    Sponsered content