• বিনোদন

    ‘পাঠান’ ঝড়ে বিধ্বস্ত কলকাতা, ক্ষোভ ঝাড়লেন নির্মাতা কৌশিক

      প্রতিনিধি ২৫ জানুয়ারি ২০২৩ , ৯:৩২:০৭ প্রিন্ট সংস্করণ

    চট্টবাণী: কলকাতায় মুক্তি পেল শাহরুখের ‘পাঠান’। আর পাঠান ঝড়ে বিপর্যস্ত গোটা কলকাতা।

    বুধবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল থেকেই চার বছর পর কিং খানকে রূপালি পর্দায় দেখতে উন্মাদনা ছড়াচ্ছে কলকাতাজুড়ে। যে কারণে কলকাতাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করেও যানজট সামাল দেওয়া যায়নি।

    শাহরুখ ভক্তদের এমন বাড়তি উন্মাদনার মধ্যেও ক্ষোভের দেখা মিলেছে। জনপ্রিয় পরিচালক ও অভিনেতা কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো কলকাতার অনেকের মধ্যে এ ক্ষোভ বিরাজ করছে।



    পাঠান দেখাতে কলকাতার হলগুলো থেকে বাংলা সিনেমা সরিয়ে নেওয়ায় ক্ষুব্ধ তারা।

    কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, করোনা মহামারিতে হল মালিক, এক্সিবিউটর, ডিস্ট্রিবিউটররা বসিয়ে বসিয়ে তাদের কর্মচারীদের বেতন দিয়েছেন। কাজেই স্বাভাবিকভাবেই এই ক্ষতির পরিমাণ পুষিয়ে নিতে তাদের হিন্দি ছবি চালাতেই হচ্ছে। তারা নিরুপায়। কিন্তু কার নির্দেশে পাঠানের জন্য কলকাতায় বাংলা সিনেমা সরিয়ে দেওয়া হলো। সম্প্রতি কয়েকটা বাংলা ছবি যথেষ্ট ব্যবসায়িক সফলতা দিচ্ছিল। ওদের সাহস হয় কী করে এ কথা বলার যে, আমাদের ছবি (পাঠান) চালাতেই হবে, এখন অন্য কোনো ছবি দেখানো যাবে না। নইলে ভবিষ্যতে আর কোনো ছবি দেব না। যার জেরে একপ্রকার অসহায় হয়ে হল মালিকরা পাঠান নিয়েছেন।



    তিনি আরও বলেন, দেব-মিঠুনের প্রজাপতি’র মতো ছবি রমরমা ব্যবসা করছিল। সেটাকেও সরিয়ে ফেরা হলো শাহরুখের পাঠানের জন্য? কী অদ্ভুত তাই না?

    এমনটা শাহরুখ খান নিজেও চাইতেন না বলে মন্তব্য কৌশিকের। এ নির্মাতা বললেন, শাহরুখ জানলে হয়তো বলতেন, ভাই পশ্চিমবঙ্গকে ছেড়ে দাও। ওদের একটা-দুটো নিজেদের ছবি চালাতে দাও। বাংলা ইন্ড্রাস্ট্রিকেও তো টিকে থাকবে হবে!

    এদিকে পাঠান কে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই তীব্র যানজটের কবলে কলকাতা শহর। দক্ষিণ কলকাতার সিনেমা অঞ্চল হাজরা থেকে রাসবিহারী মোড় বিপর্যস্ত যান চলাচলে।



    শাহরুখ ফ্যানদের প্রবল ভিড় সামলাতে আজ বাড়তি জনবল নিয়ে নামে কলকাতা পুলিশ। সকাল থেকেই হাজরা এলাকার ‘বসুশ্রী’ সিনেমা হলের সামনে শাহরুখ ফ্যানদের উল্লাস ছিল চোখে পড়ার মতো।

    প্রথম শোয়ের অনেক আগেই পুলিশের অনুরোধে সিনেমা হল খুলে দেন কতৃপক্ষ। পুলিশের বক্তব্য, অফিস টাইমে ভিড় সামাল দিতেই হল মালিকদের এই অনুরোধ করা হয়েছিল।

    শহরের অপর হল রাসবিহারী অঞ্চলের ‘প্রিয়া সিনেমা’। হলের সামনে সকাল থেকেই শাহরুখ ফ্যান ক্লাবের ভিড় এবং সড়কে যানযট। ফ্যান ক্লাবের পক্ষে হলের সামনে চলে সেলিব্রেশন। শাহরুখের ছবির সামনে নারকেল ফাটিয়ে হলে প্রবেশ করেন ফ্যানেরা।



    এদিন সকাল থেকে গোটা কলকাতার রাজপথ ছিল বলিউড বাদশার ফ্যানেদের দখলে। পাঠান সমর্থনে মহানগরে চারদিকে বের হয় মিছিল। ভক্তদের স্লোগান, ‘ইন্ডিয়া কা শান, শাহরুখ খান’। চারিদিকে বাজতে থাকে পাঠানের গান।

    এদিন রাজপথে শাহরুখের অনুরাগীরাদের ভিড়ে একপ্রকার খেই হারিয়ে ফেলেন কলকাতা পুলিশ। পুলিশের মতে, ভিড় হবে ধারণা ছিল। তবে এতটা হবে তা ভাবনার বাইরে।



    শহরের সিনে মাল্টিপ্লেক্সগুলোয় পাঠান শুরু হয় স্থানীয় সময় সকাল ৭টারও আগে। কোথাও সকাল ৬.৪৫ মিনিটে, কোথাও ৬.৫০ এ। সাত সকালের ছবি দেখার জন্য মাল্টিপ্লেক্সগুলো ছিল হাইজফুল।

    রাসবিহারী অঞ্চলের লেক মলের আইনক্সের কর্তৃপক্ষ বলেন, সাধারণত হলিউড ছবির ক্ষেত্রে আমরা সকাল ৭টায় শো দিই। কিন্তু হিন্দি ছবির ক্ষেত্রে অনেক বছর পর এত সকালে শো দেওয়া হল। তাও হাউজফুল। শাহরুখের পাঠান কলকাতায় এক ইতিহাস তৈরি করল।