প্রতিনিধি ১০ জানুয়ারি ২০২৩ , ৭:৩৭:৪৪ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টবাণী : ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী নেতা মাষ্টারদা সূর্যসেনের অন্যতম সহযোদ্ধা প্রয়াত বিনোদ বিহারী চৌধুরীর ১১২তম জন্মদিনে তাঁর স্মৃতি রক্ষায় চট্টগ্রাম নগরীতে তাঁর নামে অন্তত একটি সড়ক ও দৃশ্যমান স্থানে একটি ভাষ্কর্য স্থাপনের দাবি জানানো হয়।
গত মঙ্গলবার ১০ জানুয়ারি সকালে নগরীর মোমিন রোডে প্রয়াত এই বিপ্লবীর সাবেক বাসভবনে তাঁর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নাগরিকবৃন্দ এ দাবি তোলেন।
সকালে দি চিটাগাং এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে তার প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়। এসময় ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি চট্টগ্রামের সহ-সভাপতি দীপংকর চৌধুরী কাজল, দি চিটাগাং এসোসিয়েশনের সহ-সাধারন সম্পাদক সাংবাদিক সমরেশ বৈদ্য, কোষাধ্যক্ষ বিবেকানন্দ আচার্য, সমাজসেবক সুভাষ চৌধুরী, শিক্ষক অশোক বিজয় দে প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপিকা রীতা দত্ত’র নেতৃত্বে সারদা সংঘের উদ্যোগেও প্রয়াত এই বিপ্লবীর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এছাড়া সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকগণ প্রয়াত এই বিপ্লবীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও দি চিটাগাং এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম নগরীর জে.এম সেন হল প্রাঙ্গণে প্রয়াত এই বিপ্লবী বিনোদ বিহারি চৌধুরীর একটি আবক্ষ ভাষ্কর্য স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে আমরা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের কাছে নগরীর একটি প্রধান সড়ক প্রয়াত এই বিপ্লবীর নামে নামকরণের জোর দাবি জানাচ্ছি। আমরা আশা করি চট্টগ্রাম সিটি মেয়র এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যাবস্থা নেবেন।
চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলায় ১৯১১ সালের এই দিনে তিনি জন্মগ্রহন করেন। তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময়ই কেটেছে বিভিন্ন কারাগারে। কারাগারে থাকা অবস্থাতেই স্নাতক পাশ করেন তিনি। ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল থেকে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত চট্টগ্রাম যুববিদ্রোহের মহানায়ক মাস্টারদা সূর্যসেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম যে ৪ দিন (স্বাধীন ছিল) ব্রিটিশদের শাসন থেকে মুক্ত ছিল, সেই যুববিদ্রোহের অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন বিনোদ বিহারি চৌধুরী। সেই যুদ্ধে তিনি কন্ঠনালীতে গুলিবিদ্ধ হলেও সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। বাংলাদেশের বেসরকারি সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত বিনোদ বিহারি চৌধুরী তার জীবদ্দশায় ছাত্র পড়িয়েই জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেছেন।
২০১৩ সালের ১০ এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরন করেন। ব্রিটিশ-পাকিস্তান এবং স্বাধীন বাংলাদেশেও সমাজ-রাষ্ট্রের নানা অনিয়ম-অসঙ্গতির বিরুদ্ধে, শোষন-বঞ্চনার বিরুদ্ধে আজীবন লড়াই করে গেছেন বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরী।