• মহানগর

    চ্যালেঞ্জ ডিঙিয়ে সাফল্য ছোঁয়ার প্রত্যয়ে নববর্ষের শুভেচ্ছা

      প্রতিনিধি ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ , ৮:২০:৪৫ প্রিন্ট সংস্করণ

    চট্টবাণী: দুয়ারে নতুন বছর, গগনে ভাতিছে নবারুন রেখা। নবপ্রভাতে নবজীবনের গান গেয়ে বিশ্ব বরণ করে নিল ইংরেজী নববর্ষ ২০২৩। বিগত দিনের যত সফলতা তার প্রেরণা থেকে সঞ্চারিত শক্তি আর বিফলতার শিক্ষাকে অভিজ্ঞতায় নিয়ে এগিয়ে চলার দৃঢ় সংকল্পে নবযাত্রা শুভ হোক।

    চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ও আমার ব্যাক্তিগত পক্ষ থেকে সকলকে জানাই ইংরেজী নববর্ষের শুভেচ্ছা।



    নতুন বছরটি হবে আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জের ও সম্ভাবনার। এ বছরেই আমরা চট্টগ্রামবাসী পেতে চলেছি বেশ কিছু কাজের চুড়ান্ত রূপ। কর্ণফুলি নদীর তলদেশে নির্মিত দক্ষিন এশিয়ার সর্ববৃহৎ সুড়ঙ্গ সড়কে যান চলাচল উম্মুক্ত হবে অচিরেই। বিমান বন্দর হতে লালখান বাজার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের আংশিক (বিমান বন্দর হতে নিমতলা পর্যন্ত) চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এ বছরটিতেই।



    চট্টলদরদী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুতনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে চট্টগ্রামকে গুরুত্ব দিয়ে চট্টগ্রাম মহানগরের জন্য শতভাগ জিওবি তহবিল থেকে ২ হাজার ৪ চারশত ৯১ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেছেন বিগত বছরেই।চট্টগ্রাম মহানগরের বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।



    এ প্রকল্পের অধীনে ৭৬৯ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন, ৩৮টি ফুট ওভারব্রিজ, ১টি ওভারপাস, ১৪টি ব্রিজ, ২২টি কালভার্ট, ১০টি গোলচত্বর নির্মাণ করা হবে। যার অন্তত ৫০ ভাগ কাজ ২০২৩ সালে এবং ২০২৪ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ সমাপ্ত করা হবে। ২০২০ সালে বিশ্ব মুখোমুখি হয়েছিল সম্পূর্ণ অজানা এবং অদৃশ্য ভাইরাস কোভিড ১৯ করোনা ভাইরাসের। বিশ্বমহামারী করোনার থাবায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বিশ্বের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড। বাংলাদেশেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল অনেকটাই। বিশ্বকে অবাক করে লাফিয়ে বাড়তে থাকা বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির ধারায় কিছুটা ছেদ পড়ে।



    এমন কঠিন পরিস্থিতিতে আমি চট্টগ্রাাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে অধিষ্ঠিত হয়। রুটিন কাজের পাশাপাশি কোভিড-১৯এর সাথে যুদ্ধ করেই আমার দায়িত্বের একটি কেটে যায়। আল্লাহর অশেষ রহমত ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শী পরিকল্পনা ও দৃঢ় পদক্ষেপের কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বহুলাংশে কম ক্ষতির সম্মূখীন হয় বাংলাদেশ এবং কৃষি, শিল্প ও নানাখাতে নানামুখী প্রনোদনায় আবারো ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের অর্থনীতি।



    এমন সময়ে আবারো বিশ্ব অর্থনীতিতে মরার উপর খরার ঘা হয়ে দেখা দেয় রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ। বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে আবারো বিশ্ব অর্থনীতি। স্বভাবতই বাংলাদেশেও পড়ে এর নেতিবাচক প্রভাব, চাপ পড়ে মুল্যষ্ফীতিতে। বারবার বলা সত্বেও বলতে হয়, আমাদের আছেন একজন শেখ হাসিনা। যিনি জাতির জনকের কন্যা, জাতির ভবিষ্যত নির্মানের প্রধান স্থপতি, আপাদমস্তক দেশপ্রেমিক ও জনদরদী এবং আমাদের প্রিয় মাতৃকা বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। বৈশ্বিক অর্থনীতির এ মন্দার মধ্যেও দেশের উন্নয়ন কাজে এতটুকু ছেদ পড়তে দেননি তিনি। বিশ্বের সবচেয়ে ক্রিটিক্যাল স্থাপত্য কলায় নির্মিত পদ্মাসেতুর মত বিশাল চ্যালেঞ্জিং প্রকল্পের কাজ সুসম্পন্ন করে বিগত বছরে উদ্বোধন করার পাশাপাশি একসাথে শত সেতুর উদ্বোধন করা হয়।



    বছর শুরুর প্রাক্কালে যানজটের ঢাকা শহরের বুকে চালু করা হয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এলিভেটেড মেট্রো রেল। সবগুলো স্টেশন চালু হয়ে এ বছরেই মেট্রোরেলের পূর্ন সুবিধা পাবে রাজধানীর মানুষ। সবগুলো প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে আমার এ শুভেচ্ছা বার্তার কলেবর বাড়াতে চাইনা। বলেছি, এ বছরটি হবে চ্যালেঞ্জের ও সম্ভাবনার। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এখনো চলমান। যার কুপ্রভাব বাড়ছে দিনে দিনে। বিশ্বের স্বীকৃত সংস্থাগুলো বিশ্বে চরম খাদ্য সংকটের ইংগিত দিয়ে যাচ্ছে।



    মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রতি ইঞ্চি মাটিকে উৎপাদনের আওতায় এনে দেশের মানুষের খাদ্য দেশেই উৎপাদনের উপর জোর দিচ্ছেন। তাছাড়াও এখন থেকেই বিশ্বের সম্ভাব্য সকল দেশ থেকে পর্যাপ্ত চাল ও গম এনে মজুদ করছেন। সা¤প্রতিক সময়ে আবারো সংকটকে ঘনীভূত করে তুলছে করোনার নতুন আরেকটি ভ্যারিয়ান্ট। চীনে ইতিমধ্যেই এর প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়েছে। পাশ্ববর্তী দেশ ভারতেও এ নতুন ভ্যারিয়ান্টে আক্রান্ত হওয়ার প্রবনতা দেখা দিয়েছে এবং অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন।



    ২০২৩ সাল আরো একটি কারণে আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতায় আগামী ২০২৪সালের জানুয়ারী মাসেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

    তাই, ২০২৩ সালটা হবে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহনের সময়। উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে নানা অপপ্রচার, ষড়যন্ত্র ও নাশকতার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে একটি চক্র। তারা যাতে এ বছরটাতে ষড়যন্ত্রের পথে অপতৎপরতা বাড়াতে না পারে সেজন্য আমাদেরকে অত্যন্ত সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে। যেখানেই অশুভ তৎপরতা পরিলক্ষিত হবে, সেখানেই রুখে দিতে হবে। সবকিছু মিলিয়ে কঠিন পরিস্থিতিকে সামলাতে হবে আমাদের। আমাদেরকে হতে হবে সাহসী, হতে হবে সচেতন ও পরিশ্রমী।



    সবকিছুকে সামাল দিয়েই সফলতার সাথে এগিয়ে যাব আমরা, এ শুভ প্রত্যাশা ব্যক্ত করে সকলকে আবারো ইংরেজী শুভ নববর্ষ ২০২৩ এর শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করছি। সকলে সুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন।

    জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয়তু শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ চিরজীবি হোক।

    লেখক : বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জ্যেষ্ট সাধারন সম্পাদক, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ
    মেয়র: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।



    আরও খবর 25

    Sponsered content