• খেলাধুলা

    এমি মার্টিনেজের সাফল্যের পেছনে যে মনস্তত্ত্ব

      প্রতিনিধি ২২ ডিসেম্বর ২০২২ , ১০:১৩:৪০ প্রিন্ট সংস্করণ

    0Shares

    খেলাধুলা ডেস্ক: দীর্ঘ ৩৬ বছর পর বিশ্বমঞ্চে শিরোপা জিতল আর্জেন্টিনা। দলের এ সাফল্যে বড়সড় অবদান এমিলিয়ানো মার্টিনেজের। ফাইনাল ও কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াইয়ে টাইব্রেকারে দলকে পথ দেখিয়েছেন তিনি। আর তাই বিশ্বকাপের সেরা গোলরক্ষকের গোল্ডেন গ্লাভস গেছে তার হাতেই।

    নকআউট পর্বের দুই ম্যাচে দুটো করে পেনাল্টি ঠেকিয়ে আর্জেন্টিনার জয়ের নায়ক এমি। অনেকেই তাই সর্বকালের অন্যতম সেরা পেনাল্টি স্পেশালিস্ট গোলরক্ষক বলছেন তাকে। কিন্ত, কিভাবে পেনাল্টিতে এতো সফল এমি? ফ্রান্স ও নেদারল্যান্ডসের মতো দলকে কীভাবে পেনাল্টিতে ফিরিয়ে দিলেন তিনি, কী মনস্তত্ত্ব কাজ করেছে তার- সেটা ব্যাখ্যা করেছেন মনস্তত্ত্ববিদ গেইর জরডেট।



    নরওয়ের স্কুল অফ স্পোর্টস সায়েন্সের অধ্যাপক জরডেট ফুটবল মনস্তত্ত্ববিদ হিসেবে বেশ পরিচিত। তার দাবি, বিশ্বকাপ ফাইনালের পেনাল্টি শ্যুটআউটে আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক মার্টিনেজ যে মনস্তাত্ত্বিক খেলা খেলেছিলেন, তা ডিকোড করে ফেলেছেন তিনি।

    জরডেটের দাবি, পেনাল্টি শ্যুটআউটের শুরু থেকেই ফ্রান্সকে স্নায়ুর চাপে রেখেছিলেন মার্টিনেজ। পেনাল্টি বক্সে ঢুকেই এমন ভাব করছিলেন যে, তিনি যেন ওই বক্সের সম্রাট। ফ্রান্স গোলরক্ষক লরিস টস জিতলেও তার আগে পেনাল্টি বক্সে ঢুকে যান মার্টিনেজ। সেখানে দাঁড়িয়ে লরিসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। টসে জিতে যেখানে আগে গোলপোস্টে যাওয়ার কথা লরিসের, সেখানে তার আগেই সেই জায়গা দখল করে মার্টিনেজ অপেক্ষা করেছিলেন। ভাবখানা এমন যেন, কাতারের ওই মাঠ তার হোমগ্রাউন্ড, আর সেই হোমগ্রাউন্ডে লরিসকে তিনি স্বাগত জানাচ্ছেন!



    মার্টিনেজের দ্বিতীয় মনস্তাত্ত্বিক খেলা ছিল করমর্দন। লরিস পেনাল্টি বক্সে পৌঁছতেই মার্টিনেজ এগিয়ে গিয়ে তার সঙ্গে করমর্দন করেন। পেনাল্টি কিকের আগে এমবাপের সঙ্গেও ঠিক একই কাজ করেছিলেন তিনি। জরডেটের দাবি, এটা আপাতদৃষ্টিতে সৌজন্য মনে হলেও এই করমর্দনের নেপথ্যে ছিল অন্য মনস্তাত্ত্বিক খেলা।

    জরডেট মনে করেন, পেনাল্টির শুরুতেই প্রতিপক্ষের লক্ষ্যকে বার বার নাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন মার্টিনেজ। পেনাল্টি নেওয়ার জন্য ফ্রান্সের পালা আসতেই মার্টিনেজ গোলপোস্ট ছেড়ে পেনাল্টি পয়েন্টে চলে আসছিলেন। এটাও প্রতিপক্ষের মনোসংযোগ নাড়িয়ে দেওয়ার কৌশল ছিল তার।



    ফরাসি ফুটবলার কোম্যান পেনাল্টি শ্যুটের জন্য আসলে বল ঠিকঠাক বসানো হয়েছে কিনা তা নিয়ে রেফারিকে জিজ্ঞেস করেন মার্টিনেজ। এটাকে জরডেট বলছেন প্রতিপক্ষের ফোকাস নাড়িয়ে দেওয়ার কৌশল। আশ্চর্যজনকভাবে কোম্যানের সেই পেনাল্টি ফিরিয়েও দিয়েছিলেন মার্টিনেজ।



    শুয়ামেনির পেনাল্টিতেও মনস্তত্ত্বের খেলা খেলেছেন মার্টিনেজ। শুয়ামেনি যখন পেনাল্টি মারতে আসেন তখন পেনাল্টি পয়েন্টে চলে যান তিনি। বলটা তুলে নিয়ে স্টেডিয়ামের দিকে তাকিয়ে সমর্থকদের আওয়াজ তুলতে বলেন তিনি। এবং রেফারি দু’জনেই তখন অপেক্ষা করছিলেন। এরপর বলটা শুয়ামেনির হাতে তুলে না দূরে ছুড়ে দেন, যা মনোযোগ নষ্ট করতে যথেষ্ট। শট লক্ষ্যেই রাখতে পারেননি রিয়াল মাদ্রিদের তারকা।



    মনস্তাস্ত্বিক লড়াইয়ে মার্টিনেজের এই ভূমিকাই জয় অনেকটা সহজ করে দিয়েছে আর্জেন্টিনার। ফলে ইতিহাস গড়ে শিরোপাটা নিজেদের করে নিতে পেরেছে লিওনেল মেসির দল।

    0Shares

    আরও খবর 16

    Sponsered content