• মহানগর

    সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের দাবি পূজা উদযাপন পরিষদের

      প্রতিনিধি ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৮:৫৪:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ

    চট্টবাণী: সারাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির ও ঘরবাড়ি সংস্কার এবং আইনি ব্যবস্থার নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, চট্টগ্রাম মহানগর।

    মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ১৪ দফা দাবি তুলে ধরেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল।



    সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য্য।

    সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সাবেক সভাপতি সাধন ধর, বিমল কান্তি দে, অ্যাড. চন্দন তালুকদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অর্পণ কান্তি ব্যানার্জী, সুমন দেবনাথ, শ্রীপ্রকাশ দাশ অসিত, সহ-সভাপতি প্রদীপ শীল, বিপ্লব চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক মিথুন মল্লিক, সজল দত্ত, অ্যাড. নটু চৌধুরী, বিপ্লব সেন, অর্থ সম্পাদক সুকান্ত মহাজন টুটুল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক স্ট্যালিন দে, সহ-পূজা বিষয়ক সম্পাদক প্রিয়তোষ ঘোষ রতন, সদস্য সঞ্জয় ভৌমিক কনকন, অয়ন ধর, প্রিয়তোষ বল, লিটন দাশ, রাসেল দত্ত, সমীরণ মল্লিক, অর্পণ চক্রবর্তী, রুবেল কান্তি নাথ প্রমুখ।



    লিখিত বক্তব্যে হিল্লোল সেন উজ্জ্বল বলেন, বিগত দিনে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম যাতে সাম্প্রদায়িক ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে এবং তার আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। তারপরও আমরা লক্ষ্য করছি দেশের কিছু কিছু স্থানে মৌলবাদী ধর্মান্ধ গোষ্ঠী সনাতনী সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও নির্যাতন চালিয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন স্থানে জবরদখল, মন্দিরে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুরের মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা এখনো ঘটে চলেছে। গত বছর ১৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীর দিন চট্টগ্রামের প্রধান পূজামণ্ডপে জে এম সেন হলে হামলা হয়। এসময় বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয় সংগঠন প্রতিবাদ জানালে প্রশাসনের সহযোগিতায় ৮ ঘণ্টার মধ্যে সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রায় ৭৬ জনকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়। পূজা পরিষদের আইনী সেলের মাধ্যমে আদালতে জোড়ালো আবেদনের প্রেক্ষিতে আসামিরা দীর্ঘদিন জেলহাজতে ছিলেন। পরে উচ্চ আদালত থেকে আসামিরা একে একে জামিনে বের হয়ে আসায় আমরা শঙ্কিত।

    তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা পোস্ট দিয়ে সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা থেকে বিরত ও সজাগ থাকতে হবে। আমরা প্রত্যাশা রাখি বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের সার্বিক সহযোগিতা ও বলিষ্ঠ ভূমিকায় এবারের শারদোৎসব সুষ্ঠু ও শান্তি-শৃঙ্খলার মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।



    সংবাদ সম্মেলনে ১৪ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিসমূহ হলো-৭২’র সংবিধানের আলোকে সকল সম্প্রদায়ের সম-অধিকার নিশ্চিত করা, মঠ-মন্দির, ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ, হত্যা, লুটপাট, হামলা ভাঙচুরসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে শাস্তির ব্যবস্থা করা, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৪দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা, শত্রু (অর্পিত) সম্পত্তি আইন কার্যকর করে প্রকৃত ভূমি মালিকদের ফেরত দেয়া, সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড, পুলিশ প্রশাসন ও সচিবালয়সহ সকল সরকারি-আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানে সংখ্যালঘু প্রতিনিধিদের আনুপাতিকহারে নিয়োগ, সরকারি সংস্কৃত কলেজ স্থাপনের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন, বাংলাদেশ হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টকে ফাউন্ডেশনে উন্নীত করা, সীতাকু-কে জাতীয় তীর্থস্থান ও ঢাকেশ্বরী মন্দিরকে জাতীয় মন্দির হিসেবে রাষ্ট্রীয় ঘোষণা, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে রাজনীতি ও নির্বাচনে ধর্ম এবং সাম্প্রদায়িকতার ব্যবহার নিষিদ্ধ করা, চন্দ্রনাথ ধাম ও কক্সবাজার আদিনাথ মন্দিরে সরকারি সহায়তায় উন্নয়নের ব্যবস্থা এবং দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণ আইন দ্রুত প্রণয়ন করা, দক্ষিণ কাট্টলীর বারুণী স্নানের জন্য রানী রাসমনি ঘাটের ৫ একর জায়গা বরাদ্দ দেয়া, শারদীয় দুর্গোৎসব চলাকালীন সরকারি-বেসরকারি সকল স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা, সারাদেশে জেলা ও মহানগর পর্যায়ে একটি করে মডেল মন্দির নির্মাণে ভূমি বরাদ্দ দেওয়া।

    এবছর জেএমসেন হলসহ ১৬টি থানায় ব্যক্তিগত/ঘট পূজাসহ প্রায় ২৮৩টি পূজা মণ্ডপে ১ অক্টোবর থেকে ৫ অক্টোবর পাঁচদিনব্যাপি দুর্গোৎসব উদযাপিত হবে।

    আরও খবর 25

    Sponsered content