প্রতিনিধি ৯ জুন ২০২৩ , ১২:২১:৫৪ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টবাণী: বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটস্কি বলেছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে রাশিয়ার কোনো হস্তক্ষেপ নেই। তাই আগামী নির্বাচন নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।
তবে সম্প্রতি গাজীপুরের সিটি করপোরেশনের নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তাই আগামী সংসদ নির্বাচনও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে বলে আমার বিশ্বাস।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি সালাহ্উদ্দিন মো. রেজার সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক।
প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ারের সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ এবং রাশিয়ার অনারারী কনসাল স্থপতি আশিক ইমরান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোর রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার কারণে বাংলাদেশসহ রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন নানা দেশ বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা বাধাগ্রস্ত করছে।
ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশে রাশিয়ার সহায়তায় তৈরি পরমাণুূ বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ পিছিয়ে যাবে কিংবা বাধাগ্রস্ত হবে কিনা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে চলতি বছরের অক্টোবরেই পূর্বনির্ধারিত সিডিউল মোতাবেক পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহ শুরু করবে রাশিয়া। পাবনার কাছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে এই পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র ২ দশমিক ৪ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত করবে। ইতিমধ্যেই গত ২০২০-২১ সালে এই প্ল্যান্টের উভয় রিএ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি বলেন, রাশিয়ার বৃহত্তম গ্যাস অনুসন্ধানকারী প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমের সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশের গ্যাসক্ষেত্রে সফলভাবে কূপ খনন করছে। সম্প্রতি ভোলা দ্বীপে ২০তম কূপ খননের কাজ শেষ হয়েছে। গ্যাজপ্রম বাংলাদেশে তার কার্যক্রমের পরিধি আরও বাড়াতে ইচ্ছুক। রাশিয়া বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
২০২২ সালে আমাদের সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থাগুলো প্রায় ৯ লাখ ২০ হাজার মেট্রিকটন গম সরবরাহ করেছে, যা বাংলাদেশের আমদানির ৪২ শতাংশ। এছাড়া, ২০১৪ সাল থেকে রাশিয়াই বাংলাদেশের পটাশ সারের অন্যতম প্রধান রপ্তানিকারী দেশ। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে রাশিয়ায় বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন এবং রাশিয়ান কোম্পানি ন্যাশনাল গ্রুপ এলএলসির মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে । এতে বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় আলু এবং অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করা যাবে। রাশিয়ার বাজারে বাংলাদেশে তৈরি ওষুধ, পাট, চামড়া এবং সামুদ্রিক খাবারের চাহিদা রয়েছে এবং এর যথেষ্ট সম্ভাবনাময় বাজার রয়েছে।
প্রেস ক্লাব সভাপতি সালাহ্উদ্দিন মো. রেজা বলেন, বাংলাদেশ ও রাশিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এ সম্পর্ক আগামীতে আরও দৃঢ় হবে।
এসময় প্রেস ক্লাবের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন হায়দার, ক্রীড়া সম্পাদক এম সরওয়ারুল আলম সোহেল, গ্রন্থাগার সম্পাদক আহমেদ কুতুব, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খোরশেদুল আলম শামীম, কার্যকরী সদস্য মো. মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু, স্থায়ী সদস্য নির্মল চন্দ্র দাশ, স্বপন কুমার মল্লিক, পংকজ কুমার দস্তিদার, মইনুদ্দীন কাদেরী শওকত, জাহিদুল করিম কচি, সাইফুদ্দিন খালেদ, তাপস বড়ুয়া রুমু, জিয়াউদ্দিন এম এনায়েতউল্লাহ, মুজাহিদুল ইসলাম, রোকসারুল ইসলাম, ই পারভেজ ফারুকী, মুহাম্মদ শামসুল হক, সুভাষ কারণ, দেব প্রসাদ দাস দেবু, মাহবুব উর রহমান, নুরউদ্দিন আহমেদ, সান্টু কুমার দাশ, সাজ্জাদ হোসেন, আরিচ আহমেদ শাহ, মাখন লাল সরকার, মো. সাইদুল আজাদ, রূপম চক্রবর্তী, মুস্তফা নঈম, আবুল কালাম বেলাল, অমিত বড়ুয়া, সুমন গোস্বামী, নাজমুল আলীম সাদেকী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন সাংবাদিক নুরুল আলম, মো. শহীদুল ইসলাম, বিপুল বড়ুয়া, কামাল উদ্দিন খোকন, হাজেরা শিউলী, নুরউদ্দিন আলমগীর ও হামিদুল ইসলাম।