• জাতীয়

    আমেরিকা না গেলে কিচ্ছু আসে যায় না: শেখ হাসিনা

      প্রতিনিধি ৩ জুন ২০২৩ , ১০:১৫:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ

    চট্টবাণী ডেস্ক: পৃথিবীতে বন্ধুত্ব করার আরও অনেক মহাদেশ আছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ওই আমেরিকা না গেলে কিচ্ছু আসে যায় না!

    শনিবার (০৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের নবনির্মিত কার্যালয়ের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘কে আমাদের ভিসা দেবে, কে আমাদের স্যাংশন দেবে, ও নিয়ে মাথাব্যথা করে কোনো লাভ নাই।




    ২০ ঘণ্টা প্লেনে জার্নি করে ওই আটলান্টিক পার হয়ে ওই আমেরিকা না গেলে কিচ্ছু আসে যায় না। ’

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীতে আরও অনেক মহাসাগর আছে, অনেক মহাদেশ আছে, সেই মহাদেশের সঙ্গে মহাসাগরেই আমরা যাতায়াত করব, বন্ধুত্ব করব। আমাদের অর্থনীতি আরও মজবুত হবে, উন্নত হবে, আরও চাঙা হবে। ’

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভোট যারা চুরি করে, ভোট নিয়ে যারা চিরদিন খেলেছে, জনগণের ভাগ্য নিয়ে যারা খেলেছে, আমি তাদের (আমেরিকা) বলব—ওই সন্ত্রাসী দলের দিকে নজর দেন। ’

    তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসী এবং দুর্নীতির দায়ে এই আমেরিকাই কিন্তু তারেক জিয়ার ভিসা দেয় নাই। এখন তারা (বিএনপি) আবার তাদের কাছে ধরনা দেয়। ’




    টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নিজের পায়ে চলব, নিজের দেশকে গড়ে তুলব। কারো মুখাপেক্ষী হয়ে না। ’

    আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘জনগণের প্রতি আমার আস্থা আছে, বিশ্বাস আছে। তারা জানে একমাত্র নৌকায় ভোট দিলেই তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। ’

    তিনি বলেন, ‘নৌকায় ভোট দিয়ে (জনগণ) স্বাধীনতা পেয়েছে, নৌকায় ভোট দিয়েই উন্নত জীবন পেয়েছে, নৌকায় ভোট দিয়েই ডিজিটাল বাংলাদেশ পেয়েছে। নৌকায় ভোট দিয়েছে বলেই আজকে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ সব কিছুর উন্নতি হচ্ছে। আওয়ামী লীগ থাকলে সবার সেবা করে, সবার কাজ করে। ’

    আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের এটিই বলব, জনগণের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে ত্যাগ স্বীকার করলে জনগণ কিন্তু সেটার মর্যাদা দেয়। এই কথাটাই মনে রাখতে হবে। ’

    আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ত্যাগ করতে এসেছে। ভোগে বিশ্বাস করে না। সেই কথা মাথায় রেখে, জনগণের সেবক হিসেবে আমি কাজ করে যাচ্ছি। জাতির পিতা কাজ করে গেছেন। ’

    আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী করার নির্দেশনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। এ সমস্ত অশুভ শক্তি বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে যেন আর ছিনিমিনি খেলতে না পারে সেভাবে এদের করালগ্রাস থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করা এটাই আমাদের দায়িত্ব। ’




    বিদ্যুতের লোডশেডিং বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গরমে অনেকের কষ্ট হচ্ছে, আমরা লোডশেডিং সম্পূর্ণ দূর করে দিয়েছিলাম। কিন্তু এই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ যদি না হতো, আর করোনা ভাইরাস যদি দেখা না দিত, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা না দিত, মুদ্রাস্ফীতি দেখা না দিত তাহলে কোনো কষ্ট হতো না। ’

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বিদ্যুৎ শতভাগ দিতে পেরেছি। কিন্তু এখন যেহেতু তেলের দাম বেড়ে গেছে, গ্যাসের দাম বেড়ে গেছে, কয়লার দাম বেড়ে গেছে, সবচেয়ে অবাক কয়লাই পাওয়া যাচ্ছে না। আগে এক সময় যারা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা করে বেড়িয়েছে আন্তর্জাতিকভাবে, তারাই এখন আবার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করছে। ফলে কয়লা কিনে আনতে সমস্যা হচ্ছে। ’

    জ্বালানি সংকট নিরসন নিয়ে সুখবরের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাই হোক সুখবর হচ্ছে কাতার এবং ওমানের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়ে গেছে। আমরা আরও কয়েকটা দেশের সঙ্গে করছি। যাতে আমরা গ্যাস কিনতে পারি, আনতে পারি। ’




    বাজেটের আকার নিয়ে সমালোচনার জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারব বলেই আমরা দিয়েছি। ’

    অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নবনির্মিত ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভবন উদ্বোধন করেন এবং অফিসের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন।

    নবনির্মিত কার্যালয় ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা গণভবন থেকে তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

    এ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা বক্তব্য রাখেন।