প্রতিনিধি ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ , ৯:৫৫:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টবাণী ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের গর্ব ও আকাঙ্ক্ষার প্রতীক মেট্রোরেল বাংলাদেশের নগর গণপরিবহন ব্যবস্থায় একটি অনন্য মাইলফলক।
বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬ বা বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের উদ্বোধন ঢাকা মহানগরবাসীর বহু প্রতীক্ষিত স্বপ্ন। এমআরটি লাইন-৬ এর উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের শুভ উদ্বোধনের মাধ্যমে আজ মহানগরবাসীর সেই স্বপ্ন পূরণ হলো। মেট্রোরেল উদ্বোধনের এ মাহেন্দ্রক্ষণে আমি দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় দেশের পরিবহন ও যোগাযোগ খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠনের উন্নয়ন যাত্রার সূচনা করেছিলেন। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকার যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।
আগামী মাসেই বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ শুরু হতে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচনী ইশতেহারে আমরা ঢাকা মহানগরী ও তৎসংলগ্ন পার্শ্ববর্তী এলাকার যানজট নিরসন ও পরিবেশ উন্নয়নে মেট্রোরেল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছিলাম। বর্তমান সরকার সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ছয়টি মেট্রোরেল লাইনের সমন্বয়ে সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা ২০৩০ নিয়েছে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের আওতায় ৪টি মেট্রোরেল লাইনের নির্মাণ বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে এবং দুটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের উদ্যোগ প্রক্রিয়াধীন।
শেখ হাসিনা বলেন, সবার জন্য মেট্রোরেল- এই স্লোগানকে সামনে রেখে ঢাকা মেট্রোরেলে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য উন্নত বিশ্বের ন্যায় প্রয়োজনীয় সকল সুবিধাদি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মেট্রোরেলে মহিলা যাত্রীদের নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্য যাতায়াত নিশ্চিত করার জন্য প্রতিটি মেট্রো ট্রেনে একটি স্বতন্ত্র নারী কোচ রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশান হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে এক অনাকাঙ্ক্ষিত বিয়োগান্তক ঘটনায় এমআরটি লাইন-১ এবং এমআরটি লাইন-৫ এ কর্মরত ৭ জন জাপানী পরামর্শক জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাদের স্মরণে বাংলাদেশ ও জাপান সরকারের যৌথ উদ্যোগে উত্তরা দিয়াবাড়িতে মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্যকেন্দ্রে স্মৃতিস্মারক স্থাপন করা হয়েছে, যা পরবর্তী সময়ে এমআরটি লাইন-১ এবং এমআরটি লাইন-৫: নর্দার্ন রুটের নতুন বাজার আন্তঃলাইন সংযোগ স্টেশনে স্থানান্তর করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী তাদের পরিবারের সদস্যদের আন্তরিক সমবেদনা এবং জীবন উৎসর্গকারীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা মহানগরবাসী ও অংশীজনের সর্বাত্মক সহযোগিতা ছাড়া মেট্রোরেল নির্মাণ একটি দুরূহ কাজ ছিল। একটি সুন্দর মহানগর বিনির্মাণে তাদের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। করোনার বৈশ্বিক মহামারি পরিস্থিতিতেও নির্ধারিত সময়ের পূর্বে বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন আওয়ামী লীগ সরকার, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকা, টিম ডিএমটিসিএল, প্রকল্প কর্তৃপক্ষ, নিয়োজিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের একীভূত প্রচেষ্টার ফসল।
তিনি বলেন, আগামী প্রজন্মের জন্য ঢাকা মহানগরীকে বাসযোগ্য করে গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় আমরা এগিয়ে যাবো নিরন্তর- ইনশাল্লাহ।
প্রধানমন্ত্রী মেট্রোরেলের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন।