প্রতিনিধি ১ নভেম্বর ২০২২ , ১১:০৩:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ
খেলাধুলা ডেস্ক: সাকিব আল হাসান এমনই। সব সময় মাটিতেই পা রাখেন। প্রত্যাশার লাগামটা রাখেন নিজের হাতে। ভারত-পাকিস্তানের মতো দুটো বড় দলের সঙ্গে লড়াইয়ের আগে মাথা বেশ ঠান্ডা রাখছেন তিনি। নিজেদের সামর্থ্যের ব্যাপারটা এক মুহূর্তের জন্যও ভুলে যাচ্ছেন না।
সমর্থকরা যতই ভারত-পাকিস্তান বধের চিন্তায় ব্যস্ত থাকুন, সাকিব কিন্তু বুঝে শুনে কথা বলছেন। বুধবার ভারতের সঙ্গে লড়াই। অ্যাডিলেড ওভালে সেই ম্যাচটি খেলার আগে জয়-পরাজয়ের চিন্তা দূরে রেখে সাকিব জানিয়ে দিলেন ভারত-পাকিস্তান দুই দলের একটির বিপক্ষে জিততে পারলে সেটিই হবে অঘটন!
অবশ্য পরিসংখ্যানে চোখ রাখলে এমনটা মনে হতেই পারে। বাংলাদেশ-ভারত টি-টোয়েন্টি লড়াইয়ের গল্পটা বড্ড একপেশে। দুই দলের ম্যাচ হয়েছে ১১টি। বাংলাদেশ মাত্র ১টি জয়েই থেমে আছে। বাকি দশটিতেই জিতেছে ভারত।
মঙ্গলবার ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে অ্যাডিলেড ওভালের প্রেস কনফারেন্স রুমে বসে সাকিব বললেন, ‘পরবর্তী টার্গেট দুটো ম্যাচ খুব ভালোভাবে খেলা। যদি কোনো ম্যাচ জিততে পারি সেটা আপসেট হিসেবেই গণ্য হবে। এবং সে আপসেটটা যদি করতে পারি তাহলে আমরা খুশি হব। আর না করতে পারলেও খুব বেশি কিছু বলার নেই।’
কেন এমন ভাবনা সেটিও পরিস্কার করলেন সাকিব। জানালেন, এটাই বাস্তবতা। নিজেদের লক্ষ্য শুধুই ভাল ক্রিকেট খেলা, ‘বাকি দুই দল যদি দেখেন তারা আমাদের থেকে অবশ্যই ভালো। কিন্তু আমরা যদি ভালো খেলি, দিনটা যদি আমাদের থাকে, কেন জিততে পারব না। এই বিশ্বকাপে আমরা দেখেছি আয়ারল্যান্ড ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দিয়েছে, পাকিস্তানকে জিম্বাবুয়ে হারিয়ে দিয়েছে। ওরকম একটা রেজাল্ট হলে আমরা অবশ্যই খুশি হব।’
দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে চাপে আছে ভারতও। এ অবস্থায় তাদেরও জয় চাই। বিরাট কোহলিরা একটা জয়ের জন্য কতটা মরিয়া সেটা আঁচ করতে পারছেন সাকিব।
বাংলাদেশ অধিনায়ক বলছিলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় ভারতীয় দল খুবই ভালো একটা বোলিং অ্যাটাক। আপনি যদি দেখেন প্রতিটা ম্যাচই তারা ১৬০-১৭০ রানের মধ্যেই প্রতিপক্ষকে বেঁধে রেখেছে। তার মানে খুবই ভালো বোলিং করছে। আমাদের অবশ্যই খুব ভালো ব্যাটিং করতে হবে, ১৬০ বা ১৭০ রান করতে গেলে। যেটা দেখা যাচ্ছে এই বিশ্বকাপে একটা পার স্কোরের মত। যারা বেশি করছে তারাও এরকম করছে, যারা কম করছে তারাও এর থেকে ১০-১৫ রান কম করছে। এরকম একটা অবস্থায় আমার কাছে মনে হয় আমাদের ভারতের বোলিং লাইন আপের বিপক্ষে ভালো করতে হবে। কেননা তাদের বিশ্বমানের খেলোয়াড় রয়েছে। আমাদের সেরা ক্রিকেটটাই খেলতে হবে আসলে।’
সেই ভাল খেলার অস্ত্র আছে সাকিবের কাছে। নেদারল্যান্ডস আর জিম্বাবুয়ে দুটো দলের বিপক্ষে চলতি বিশ্বকাপে জয়ের নায়ক তাসকিন আহমেদ। বল হাতে এই পেসার অজি কন্ডিশনে রীতিমতো আগুন ঝরাচ্ছেন। সঙ্গে মুস্তাফিজুর রহমানও ফিরে এসেছেন চেনা ছন্দে। আছেন হাসান মাহমুদও। সবচেয়ে বড় কথা দুঃসময় কাটিয়ে নাজমুল হোসেন শান্তও যোগ্যতার পরিধিটা দেখিয়েছেন। খেলেছেন ৫৫ বলে ৭১ রানের দেখার মতো এক ইনিংস।
হাসান মাহমুদের প্রসঙ্গ উঠতেই সাকিব বললেন, ‘হাসান মাহমুদ এত অল্প বয়সে বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে প্রতিনিধিত্ব করছে এটা ওর জন্য একটা বড় ব্যাপার। আমরা সবাই বিশ্বাস করি, ওর বয়সটা না যত বেশি তার থেকে ওর অনেক ভালো মাথা। গেম সেন্স এবং গেম রিড করতে পারে ভালো। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের একটা বড় প্রত্যাশা হচ্ছে বলে মনে করি।’
ভারতের পর পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ কেমন করে সেটা সময়ই বলে দেবে। তবে দুটো জয় পুরো দলটার চেহারাই পাল্টে দিয়েছে। নির্ভার হয়েই মাঠে নামার অপেক্ষায় টাইগাররা। কিছু হারানোর ভয় যখন সঙ্গে না থাকে তখন তো উপভোগের একটা মন্ত্রও মেলে! সেই মন্ত্রেই আপসেটের প্রতীক্ষায় সাকিব, গোটা বাংলাদেশও!