প্রতিনিধি ২৫ মার্চ ২০২৫ , ১১:২৩:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টবাণী: স্থানীয় জনগোষ্ঠী বিষেশত নারী,প্রতিবন্ধী, সংখ্যালঘু সহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর বিচারিক সেবা নিশ্চিত করতে সরকার চালু করেছে গ্রাম আদালত। এ লক্ষ্যে ২০০৬ সালে প্রণয়ন করা হয়েছে গ্রাম আদালত আইন। ২০১৩ ও ২ ০২৪ সালে এ আইন সংশোধন করে যুগোপযোগী করা হয়েছে। গ্রাম আদালত আইন বাস্তবায়নের জন্য ২০১৬ পাশ করা হয়েছে গ্রাম আদালত বিধিমালা। গ্রাম আদালত সক্রিয়করা হলে প্রান্তিক জন গোষ্ঠীর নিশ্চিত হবে বিচারিক সেবা একই সাথে উচ্চ আদালতে কমবে মামলার জট।
মঙ্গলবার ২৫ মার্চ, ২০২৫ দুপুরে নগরীর এশিয়ান এস আর হোটেলের ব্যাঙ্কুইট হলে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত গ্রাম আদালত বিষয়ক প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার চট্টগ্রাম মো: নোমান হোসেন।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ,ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন, ইউএনডিপি বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় স্থানীয় সরকার বিভাগ বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ ৩য় পর্যায় প্রকল্প। এ প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম জেলার ১৯১ টি ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে ৪দিন ব্যাপি ৮ ব্যাচ গ্রাম আদালত বিষয়ক প্রশিক্ষণ গত ১০ মার্চ শুরু হয়ে আজ সমাপ্ত হয়েছে।
প্রকল্পের চট্টগ্রাম ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার জনাব সাজেদুল আনোয়ারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্টগ্রাম জেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সহযোগী সংস্থা ই্পসার প্রধান নির্বাহী জনাব মো: আরিফুর রহমান।
এতে সেশন পরিচালনা করেন ডিস্ট্রিক্ট রিসোর্স টীমের সদস্য ও জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ জনাব রুপন কান্তি দাশ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাটহাজারী সাকেল জনাব মো: তারেক আজিজ, উপপরিচালক সমাজ সেবা অধিদপ্তর জনাব ফরিদুল আলম, উপপরিচালক যুব উন্নয়ন জনাব খন্দকার জাকির হোসেন, উপপরিচালক মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর জনাব আতিয়া চৌধুরী। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে গ্রাম আদলত সক্রিয়করণ ৩য় পর্যায় প্রকল্পের সমন্বয়কারী জনাব ফারহানা ইদ্রিস, উপজেলা সমন্বয়কারী জনাব ওসমানগ গনি, আখিবড়ুয়া, মিল্টন চাকমা, ফখরুল ইসলাম খালিদবিন ওয়ালিদ প্রমুখ।
গ্রাম আদালত বিষয়ক প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন গ্রাম আদালতের মাধ্যমে সবোচ্চ ৩০০০০০ (তিন লক্ষ)টাকা মূল্যমানের ছোটখাটো দেওয়ানী ও ফৌজদারী বিরোধ গ্রাম আদালতের মাধ্যমে নিস্পত্তি করার বিধান আছে। গ্রাম আদালত আইনে। চুরি,মারামারি,ঝগড়া,ভয়ভীতি প্রদর্শন, নারীর শ্লীলতাহানী, অর্থ আত্মসাৎ ,স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ, দখলকৃত সম্পত্তি পূণরুদ্ধার সহ ২৭টি ফৌজদারী ও ৭টি দেওয়ানী বিষয় সংক্রান্ত বিরোধ নিস্পত্তির সুযোগ রয়েছে গ্রাম আদালতে।
গ্রাম আদালতে স্থানীয় ভাবে স্থানীয় বিরোধ নিস্পত্তি হলে বিচার প্রার্থীর টাকা ,শ্রম ও কষ্ট সবই কম হয়। তাই বলা হয় আল্প সময়ে স্বল্প খরচে দ্রুত বিচার পেতে চলো যাই গ্রাম আদালতে। গ্রাম আদালতের এ সেবা সম্পকে এখনো জানে না। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বিশেষ ভাবে নারী প্রতিবন্ধী, সংখ্যালঘু দলিত হরিজন সহ দরিদ্র মানুষজন। না জানার কারণে ভূক্তভোগীরা বিচার চাইতে চলে যা্য় থানা কিংবা জেলা আদালতে। সহযোগিতা নিতে হয় আইনজীবির। ফলে নতুন করে ভোগান্তির শিকার হতে হয় বিচার প্রার্থীদের । স্থানীয় পর্যায়ে ছোট খাটো দেওয়ানী ও ফৌজদারী বিরোধ নিস্পত্তির এ বিচারিক কাঠামো গ্রাম আদালতকে সক্রিয়করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ইউপি সদস্যসহ গ্রাম আদালতের সাথে সংশ্লিষ্টদের গ্রাম আদালত আইন ও বিধিমালা বিষয়ক প্রশিক্ষণের গুরুত্বারোপ করেন সংশ্লিষ্ট সকলে।