• মহানগর

    প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ মেয়র শাহাদাতের

      প্রতিনিধি ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ১১:৫০:৫১ প্রিন্ট সংস্করণ

    0Shares

    চট্টবাণী: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চসিক মেয়র ডা. শাহাদাতকে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।

    মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ আশ্বাস দেন।

    এ সময় তারা চট্টগ্রামের উন্নয়ন সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেন।

    চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন

    মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন চট্টগ্রামের অন্যতম প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা নিয়ে আলোচনা করেন।

    তিনি বলেন, নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ (চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) বর্তমানে ৩৬টি খালে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, তবে এ প্রকল্পের আওতার বাইরে আরও ২১টি খাল রয়েছে, যা জলাবদ্ধতা সমস্যার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেয়র এসব খালেরও উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য নতুন প্রকল্প গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
    তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে নদী, খাল, ও নালাগুলো সচল রাখতে হবে এবং দখল ও দূষণ রোধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এই সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধানে সরকারের অর্থায়ন ও কারিগরি সহায়তা প্রয়োজন।

    বন্দর থেকে ১ শতাংশ মাসুল

    বৈঠকে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আদায়ের জন্য ১ শতাংশ মাসুল নিয়েও আলোচনা হয়। মেয়র বলেন, এই মাসুলের একটি অংশ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় করা হবে। চট্টগ্রাম দেশের প্রধান বন্দরনগরী হওয়ায় এখানকার রাস্তাঘাট, অবকাঠামো ও পরিষেবার ওপর অতিরিক্ত চাপ থাকে। তাই বন্দরের রাজস্ব থেকে নগর উন্নয়নে বরাদ্দ দেওয়া হলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সড়ক উন্নয়ন আরও সহজ হবে।

    জলাবদ্ধতা নিরসনে জনসচেতনতা বৃদ্ধি

    মেয়র মনে করেন, শুধু অবকাঠামো উন্নয়ন করলেই জলাবদ্ধতার সমাধান হবে না। নগরবাসীর মধ্যেও যথাযথ সচেতনতা তৈরি করতে হবে যাতে তারা খাল ও ড্রেনে ময়লা না ফেলে, প্লাস্টিকের ব্যবহার কমায় এবং পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন চর্চা করে। এ জন্য সিটি করপোরেশন নিয়মিত সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান চালানোর পরিকল্পনা করছে।

    বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সম্পদে রূপান্তর

    নগরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বৈঠকে। মেয়র বলেন, প্রতিদিন চট্টগ্রাম শহরে প্রতিদিন যে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য বের হয়, এর সঠিক ব্যবস্থাপনা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। উন্নত দেশগুলোর মতো বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করার উদ্যোগ নেওয়া হলে এটি পরিবেশের জন্য যেমন ভালো হবে, তেমনি নগরের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

    মেয়র আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর জোর দিয়ে বলেন, চট্টগ্রামে ওয়েস্ট প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট প্লান্ট প্রকল্প গ্রহণ করা হলে নগরবাসীর সুবিধা হবে। এ ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগ ও সরকারি সহায়তা প্রয়োজন।

    গ্রিন, ক্লিন, হেলদি সিটি

    মেয়র চট্টগ্রামকে গ্রিন, ক্লিন, হেলদি সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে চান বলে জানান। এ জন্য তিনি পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো, বনায়ন ও পরিচ্ছন্ন নগর ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

    তিনি জানান, নগরে নতুন পার্ক ও উন্মুক্ত স্থান তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ ছাড়া, নিয়মিত রাস্তা পরিষ্কার রাখা ও স্বাস্থ্যসম্মত ড্রেনেজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা তার পরিকল্পনার অংশ।

    প্রকল্পের অর্থ ছাড় নিয়ে আলোচনা

    বৈঠকের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর অর্থ ছাড়। মেয়র বলেন, সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন কার্যক্রমে গতি বাড়বে অর্থ ছাড় দ্রুত হলে।

    তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সহযোগিতা কামনা করেন, যাতে দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের অর্থ অনুমোদন হয় এবং নগর উন্নয়ন কার্যক্রম ত্বরান্বিত হয়।

    মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, নগরবাসীর স্বার্থে সিটি করপোরেশন প্রতিটি উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ এবং তিনি সরকারের সহায়তা নিয়ে চট্টগ্রামকে একটি আধুনিক, পরিবেশবান্ধব ও বাসযোগ্য নগরে পরিণত করতে চান।

    0Shares

    আরও খবর 25

    Sponsered content