প্রতিনিধি ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ , ১২:২৩:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টবাণী: নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে কালীরছড়াসহ সব খাল উদ্ধারের পাশাপাশি পাহাড়খেকোদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) আকবরশাহ এলাকার লেকসিটি আবাসিকের কালীরছড়া পরিদর্শনকালে এ ঘোষণা দেন মেয়র।
মেয়র বলেন, আমরা এখানে কালীরছড়া খাল দেখতে এসেছি। একসময় চট্টগ্রামে প্রায় ৫৭টি খাল ছিল।
কিন্তু আজ এই সংখ্যা নেমে এসেছে মাত্র ৩৬টিতে। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সিডিএর উদ্যোগে যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, সেখানে ৫৭টি খাল থেকে কাজের জন্য ৩৬টি খাল চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে এখনো ২১টি খাল অবহেলিত রয়ে গেছে। আমরা এই ২১টি খাল উদ্ধার করার চেষ্টা করছি।
কালীরছড়া খালটি চট্টগ্রামের আকবরশাহ এলাকায় অবস্থিত। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে পাহাড় কাটার কারণে এই খালের অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এখানে পাহাড় যারা কেটেছে তারা দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের পোষ্য ছিল। একেকজন কাউন্সিলর ছিল ভূমিদস্যু, একেকজন ডাকাতের সরদার ছিল। এই যে জসিম সে একজন ভূমিদস্যু। পাহাড় কাটার জন্য সে বিখ্যাত ছিল কিন্তু তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকার আইনি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি তারা তাকে গ্রেপ্তারও করেনি এবং শাস্তির আওতায় আনতে পারেনি।
পাহাড়কাটার পেছনে অনির্বাচিত শক্তি কাজ করেছে দাবি করে মেয়র বলেন, রাষ্ট্র এ সমস্যার জন্য দায়ী। ভোটের অধিকার হরণ করে অপরাধীদের কাউন্সিলর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই অপরাধীদের মাধ্যমে দখল, লুটপাট ও দুর্নীতির শিকার হয়েছে শহরটি। গত ১৬ বছর ধরে চলা এ অব্যবস্থাপনার কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বাড়ছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না যদি আমরা তাদের জন্য বাসযোগ্য পরিবেশ রেখে যেতে ব্যর্থ হই।
আমাদের লক্ষ্য খালগুলো পুনরুদ্ধার করা। ইতিমধ্যে আমরা কালীরছড়া খালের কিছু অংশ দখলমুক্ত করেছি এবং আরো উচ্ছেদ কার্যক্রম চলছে। চট্টগ্রামের ২১টি খাল, যেমন পতেঙ্গার গুপ্ত খাল, বাকলিয়ার বীর্জা খাল এবং কৃষি খাল পুনরুদ্ধারের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই খালগুলো চিহ্নিত করে খনন কর্মসূচি শুরু করতে হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে এটি একটি স্থায়ী সমাধান হয়ে উঠবে।
আমরা দৃঢ় সংকল্প করেছি যে, দখলদারদের আইনের আওতায় এনে খালগুলো পুনরুদ্ধার করব। খাল থাকবে খালের জায়গায় এবং নালা থাকবে নালার জায়গায়। পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ইনশাল্লাহ, আমরা চট্টগ্রামকে বাসযোগ্য শহরে পরিণত করব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম, মাহমুদ শাফকাত আমিন, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী, জনসংযোগ কর্মকর্তা আজিজ আহমদ প্রমুখ।