প্রতিনিধি ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ , ১০:৪৭:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টবাণী ডেস্ক: কেউ যেন দেশকে বিভক্ত করতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা একটা সুযোগ পেয়েছি। সে জন্য আমি সরকারি কর্মকর্তা, পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ সব বাহিনীকে অনুরোধ করতে চাই—আসুন, এই সুযোগ আমরা কাজে লাগাই।
আবার আমরা বাংলাদেশকে সমস্ত বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গড়ে তুলি।সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শিবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, জনগণকে বোকা বানিয়ে তিনটা নির্বাচন করে জোর করে ক্ষমতায় ছিলেন শেখ হাসিনা। তিনি ভেবেছিলেন, কোনোদিন ক্ষমতা থেকে যাবেন না। কিন্তু দেখেন, কীভাবে মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে পরিবারের সবাইকে নিয়ে হাসিনাকে পালিয়ে যেতে হয়েছে; যেই নেত্রী বলেছিলেন—আমি পালাই না, আমি ভয় পাই না, আমি মুজিবের বেটি, আমি পালাই না।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ বলেন, দেশ ছেড়ে ওপারে পালিয়ে গিয়ে হাসিনা ওখান থেকে ষড়যন্ত্র করছে, চক্রান্ত করছে। একটা মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে—এখানে নাকি আমাদের হিন্দু ভাইদের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে। আমরা খুব শান্তিপ্রিয় মানুষ। আমরা সব সময় হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলমান একসঙ্গে বসবাস করি।
তিনি আরও বলেন, কাহাও কাহাও (কেউ কেউ) কহচে (বলছে) যে, একাত্তর ভুলে যাবে। একাত্তরকে আমরা ভুলতে পারি না। একাত্তরে আমাদের স্বাধীন দেশের জন্ম হয়েছে। আমি আমার নিজেকে চিনতে পেরেছি ৭১ সালে। আমরা নিজের একটা ভূখণ্ড তৈরি করতে পেরেছি। আমরা ওপরে ওঠার একটা সুযোগ পেয়েছি। সেই সুযোগটা আমাদের কাজে লাগাতে হবে।
ছাত্র-জনতাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমি ছাত্র-জনতাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, আমাদের ভাইয়েরা যারা ১৫ বছর লড়াই করেছেন, তাদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। তারা নিজেদের বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে আমাদের জন্য আবার একটা সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। যেন আমরা দেশে আবার একটা গণতান্ত্রিক পথ সৃষ্টি করতে পারি। আমরা এখানে সব মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে চাই। কেউ তিনবার ১৫ বছর ধরে ভোট দিতে পারেন নাই। এই ভোটের অধিকারটা আমরা ফিরিয়ে দিতে চাই।
দলের সংস্কার প্রস্তাবের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০১৬ সালে ‘ভিশন বাংলাদেশ টুয়েন্টি-থার্টি’ দিয়েছিলেন। আর আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব ২০২২ সালে ৩১ দফা দিয়েছেন। সেই ৩১ দফা কী, সংস্কার প্রস্তাব। এই সংস্কারটা আমরা চাই। এই সংস্কার বলতে বুঝি, আমরা যেন ভোটটা দিতে পারি, আমাদের দেশে যেন শান্তি থাকে, জিনিসপত্রের দাম যেন কম হয়, মারামারি যেন না হয়, চুরি–ডাকাতি যেন না হয়। আর কথায় কথায় ঘুষ যেন দিতে না হয়। এরকম একটা বাংলাদেশ আমরা চাইছি।
সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমীন বিএনপির ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।