• জাতীয়

    জনগণের সঙ্গে প্রতারণার কোনো সুযোগ আর নেই: সাকি

      প্রতিনিধি ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ , ১০:৫৪:১২ প্রিন্ট সংস্করণ

    চট্টবাণী ডেস্ক: গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, একটি রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আজ স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে। একদিকে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন, আপাতত দানবীয় স্বৈরচারের শাসন নেই কিন্তু স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা রয়েছে পরতে পরতে।

    তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দাঁড়িয়ে আছে ওই অভ্যুত্থান এবং রক্তাক্ত আত্মত্যাগের ওপর। পূর্বতন সরকার যে দখল ও জবরদস্তির রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু করেছিল, ভবিষ্যতে কেউ যেন সেরকম করতে আর না পারে, সেই অনুযায়ী এখন আমাদের রাষ্ট্র সংস্কার করতে হবে, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

    কাজেই এমন নির্বাচন আয়োজন করতে হবে, যাতে প্রত্যেক নাগরিক যেন স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারে, এমন আইনের শাসন লাগবে যেন কেউ দুর্নীতি-লুণ্ঠন করে কেউ পার পেতে না পারে, বলেন জোনায়েদ সাকি।

    শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহের মুক্তমঞ্চ টাউন হল চত্বরে গণসংহতি আন্দোলন ময়মনসিংহ জেলা কমিটির উদ্যোগে ‘রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা’র দাবিতে গণসংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

    গণসংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার, বিচার বিভাগ, সংসদ ও গণমাধ্যম—এই চারটি স্তম্ভকে এমনভাবে পরিচালনা করতে হবে যেন কেউ ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে না পারে। সরকারকে অবশ্যই জবাবদিহির মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। সরকার যা বলে, জনগণের কাছে এর ব্যাখ্যা দিতে হবে। বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগ আলাদা থাকবে। গণমাধ্যমকে অবশ্যই পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে। এই চারটি প্রতিষ্ঠান যখন সঠিকভাবে কাজ করতে পারবে তখনই রাষ্ট্র ভালোভাবে পরিচালিত হবে।

    তিনি আরও বলেন, যে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য এত বছর ধরে চলেছে, সেটা এখনই এমনভাবে বন্ধ করার ব্যবস্থা করতে হবে যেন আর লাল ফিতার দৌরাত্ম্য দেখা না যায়।

    গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, ৭ জানুয়ারির আগে আমরা বহুবার বলেছি, জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে ফ্যাসিস্ট শাসকরা পালানোর জায়গা পাবে না। শুধুই সংবিধানে কতগুলো গণতান্ত্রিক সংস্কার করলেই হবে না, সেই সংস্কার রক্ষার জন্য জনগণের পক্ষের রাজনৈতিক শক্তি গড়ে না তুলতে পারলে রাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিক করা যাবে না। জনগণের পক্ষে পরিচালিত করা যাবে না। নিছক সংবিধানে কতগুলো ভালো কথাই কথার কথা হয়ে থাকবে। স্বৈরতন্ত্র যেন কোনোভাবেই আর ফিরতে না পারে, স্বৈরাচারী ব্যবস্থা যাতে বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে আর কব্জা করতে না পারে সেই লড়াই এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থা জনগণকে প্রতিষ্ঠার দিকে যেতে হবে।

    গণসংলাপে আরও বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য দেওয়ান আবদুর রশীদ নীলু, রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য মনির উদ্দীন পাপ্পু, জাতীয় পরিষদ সদস্য শামসুল আলম, সম্মিলিত পেশাজীবী সংহতির আহ্বায়ক মির্জা নাজমুল হুদা, জাতীয় পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট অমিত হাসান দিপু, ব্রহ্মপুত্র সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রাহাত জাহান হোসেন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ময়মনসিংহ জেলা সভাপতি মাহবুব আলম জুয়েল, জেএসডির জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতানা তরফদার, সেচ্ছাসেবী সংগঠক আলী ইউসুফ এবং স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠকসহ থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে নেতৃবৃন্দ।

    সভায় এ আর এম মুসাদ্দিক আসিফের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন গণসংহতি আন্দোলন ময়মনসিংহ জেলার আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান।