• মহানগর

    দাঙ্গা-হাঙ্গামা করে মেলার প্রয়োজন নেই: ডিসি

      প্রতিনিধি ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ , ১১:৩১:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ

    চট্টবাণী ডেস্ক: চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেছেন, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাউজান উপজেলাসহ বিভিন্ন উপজেলায় বিজয় মেলার আয়োজন নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। দাঙ্গা-হাঙ্গামা করে মেলার প্রয়োজন নেই।

    মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

    তিনি বলেন, রাউজান কলেজ মাঠে মাসব্যাপী বিজয় মেলা ঘিরে বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

    উভয় পক্ষের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, চার্জশিট হয়েছে। বিজয় মেলা নিয়ে কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হোক তা আমরা কখনো চাই না। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের দিন জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শুধু দিনব্যাপী বিজয় মেলা অনুষ্ঠিত হবে। কোনোভাবেই এক দিনের বেশি বিজয় মেলা হবে না এবং আর কোনো মেলার অনুমতি দেওয়া হবে না। ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের দিন শুধু তোপধ্বনি, স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জাতীয় সংগীতের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সালাম গ্রহণ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে।

    জেলা প্রশাসক বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, অনিবন্ধিত সিএনজি অটোরিকশা নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসা, রাস্তা দখল করে হাট-বাজার স্থাপন না করা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, খুন, ডাকাতি,চাঁদাবাজি, নারী ও শিশু নির্যাতন, রেল, নৌ ও সড়কপথে মাদক পাচার রোধ, কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ, যানজট এবং বন্যহাতির উপদ্রব থেকে জানমাল রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

    কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর টোল প্লাজায় সিস্টেমে টোল আদায়ে ধীরগতির কারণে উভয় পাশে যানজট লেগে থাকে। পাশাপাশি নির্দেশনা না মেনে টোল প্লাজা লাগোয়া ফুটপাত দিয়ে অবৈধ ব্যাটারি রিকশা ও ভ্যানগাড়ি পারাপারের কারণে সেতুতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। সড়কে শৃঙ্খলা আনয়নে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ আন্তরিক হলেও পরিবহন চালকদের অসহযোগিতার কারণে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। টোল প্লাজা লাগোয়া উভয় পাশের ফুটপাতের মাঝখানে দু’টি পিলার স্থাপন করে দিলে অবৈধ ব্যাটারি রিকশা ও ভ্যানগাড়ি পারাপার হতে পারবে না। এ জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগকে উদ্যোগ নিতে হবে।

    সভায় জেলা পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান বলেন, জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ বাহিনী কাজ করছে। সাম্প্রতিক সময়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলার খামার থেকে বেশ কিছু গরু চুরি হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ইতোমধ্যে চাঁদপুর থেকে ১৪টি গরু উদ্ধারসহ চোর চক্রের কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করে তাদের বিভিন্ন থানা এলাকার গরু চুরির মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। কোনো জিনিস চুরি-ডাকাতির পর মালামাল উদ্ধার ও আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হলে অপরাধীদের গ্রেফতার করা পুলিশের দায়িত্ব। থানা পুলিশ আইনগত সাপোর্ট না দিলে, কারও সাথে দুর্ব্যবহার কিংবা অসহযোগিতা করলে সরাসরি এসপিকে জানাবেন।

    এসপি বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মেলা হবে একদিন। এর ব্যত্যয় ঘটবে না। মেলায় চাঁদাবাজি, মাদক, ইভটিজিং, জুয়া খেলা ও কোনো ধরনের অনৈতিক কার্যকলাপ করতে দেওয়া হবে না।

    মেলাকে ঘিরে কোনো ধরনের আইন-শৃঙ্খলার অবনতি দেখা দিলে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ১৪৪ ধারা জারির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

    সভায় ডেঙ্গুর প্রকোপ প্রসঙ্গে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওসিএস ডা. মোহাম্মদ নওশাদ খান বলেন, চট্টগ্রামে ডেঙ্গুর প্রকোপ উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। গত নভেম্বরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামে মারা গেছে ১৬ জন, এর মধ্যে ১৩ জন চট্টগ্রাম জেলার ও ৩ জন অন্যান্য জেলা থেকে এসে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। গত জানুয়ারি থেকে চলতি ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৪ হাজার ১৩২ জন, মারা গেছে চট্টগ্রাম জেলার ২৩ জনসহ মোট ৪২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৫ জন, নারী ২৩ জন ও শিশু ৪ জন। আক্রান্তরা বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছে।

    চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাহবুবুল হকের সঞ্চালনায় সভায় ডিজিএফআই’র উপ-পরিচালক কাজী রাজীব রুবায়েত, এনএসআইর যুগ্ম পরিচালক শাহ সুফী নুর নবী, মেট্টো এনএসআইর উপ-পরিচালক নূর মোহাম্মদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগাজাই মারমা (রাউজান), এবিএম মশিউজ্জামান (হাটহাজারী), মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী (ফটিকছড়ি), মু. ইনামুল হাছান (লোহাগাড়া), মাসুমা জান্নাত (কর্ণফুলী), মাহমুদুল হাসান (রাঙ্গুনিয়া), মাহফুজা জেরিন (মিরসরাই), রিগ্যান চাকমা (সন্দ্বীপ), কেএম রফিকুল ইসলাম (সীতাকুণ্ড), আলাউদ্দিন ভূইয়া জনী (পটিয়া), রাজীব হোসেন (চন্দনাইশ), হিমাদ্রী খীসা (বোয়ালখালী), জেসমিন আক্তার (বাঁশখালী), মিল্টন বিশ্বাস (সাতকানিয়া), তাহমিনা আক্তার (আনোয়ারা), মোহাম্মদ জামশেদ আলম (বাঁশখালী) প্রমুখ অংশ নেন।

    আরও খবর 25

    Sponsered content