• উত্তর চট্টগ্রাম

    ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে দপ্তরি নুরুল করিমের দাপট: গড়ে তুলে সিন্ডিকেট

      প্রতিনিধি ২৪ অক্টোবর ২০২৪ , ১১:০৪:২৯ প্রিন্ট সংস্করণ

    নুরুল আবছার নুরী : প্রতি ৩ বছর পর সরকারি কর্মচারীদের বদলির বিধান রয়েছে তবে ভিন্ন বিধান বাস্তবায়ন করেছে ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের দপ্তরি মোঃ নুরুল করিম।

    তিনি ২০১৭ সালে যোগ দিয়ে টানা ৭ বছর চাকরি করছে এক উপজেলাতেই।এই সুয়োগে তিনি কিছু অসাধু কর্মচারীর যোগসাজেশে গড়ে তুলে সিন্ডিকেট। উপজেলা বিভিন্ন দপ্তর থেকে মাসোয়ারাসহ চাঁদাবাজি করে চলছে এই সিন্ডিকেট। বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেট। তারপর ও বহাল তবিয়তেই বছরের পর বছর ধরেই একই উপজেলায় চাকুরি করেই চলেছেন নুরুল করিম।

    এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, আমার নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি করে তা অবশ্যই জঘন্যতম কাজ করেছেন। তিনি ইতিমধ্যে চাঁদাবাজির বিষয়ে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    এই অভিযোগের কথা বেমালুম অস্বীকার করে দপ্তরি নুরুল করিম বলেন, আমি কোন অনিয়মে জড়িত নই।আমরা যে সম্পত্তি আছে তা আমার পারিবারিক। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নামে আমি কারো কাছে চাঁদা দাবি করিনি। একটি কুচক্রিমহল আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে এসব অসত্য তথ্য ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে।

    স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঙ্গে থাকার সুবাদে এবং জামাল নামের এক বড় ভাই চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নাজির হওয়ার দিনকে কাজে লাগিয়ে দিন দিন নুরুল করিম ক্ষমতার দাপট বেড়েই চলেছে। অবৈধ উপার্জন মধ্যে দিয়ে তিনি বানিয়েছেন অঢল টাকা। নিজের পাকা বাড়িসহ নামে-বেনামে রয়েছে অঢেল সম্পত্তি।

    সম্প্রতি নুরুল করিমের ক্ষমতার দাপটে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অনিয়মের অনুসন্ধান করতে গিয়ে এমন তথ্যের সন্ধান মিলেছে। অনুসন্ধানে জানা যায় করিম উপরি আয়ের জন্য বদলী হননা, নেন না পদোন্নতি ও। বিগত ৭ বছরে তার কয়েক বার বদলির আদেশ হয়।কিন্তু একবার ও তিনি বদলী হননি। বিভিন্ন তদবির করে তিনি ফটিকছড়িতে থেকে গেছেন। দাপটের সঙ্গেই তিনি কর্মস্থলে রয়েছেন। মানতে শুনতে চান না কারো কথা।

    চলতি অক্টোবর মাসের শুরুর দিকে ফটিকছড়ি উপজেলা সদর বিবিরহাট বাজারের ঢাকাইয়া ফুড নামের একটা রেষ্টুরেন্টে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে অভিযান চালিয়ে সেটি বন্ধ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। কিছু দিন পর সেটি খুলে দেবার আশ্বাস দিয়ে লাখ টাকা উপরি চান করিম।বিষয়টি জানতে পেরে তাকে নিজ কার্যালয়ে ডেকে অনেক গালমন্দ করেন নির্বাহী কর্মকর্তা। পরে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ধরিয়ে দেন নির্বাহী কর্মকর্তা।

    অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, নুরুল করিমের বাড়ি চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার গাছবাড়িয়া ইউনিয়নের তালুকদার পাড়ায়।২০১৩ সালে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হিসাবে নিয়োগ পান করিম।চাকুরি জীবনের শুরুতেই তার বেতন ছিল ১০ হাজার ৭শত ২৫ টাকা। পরবর্তী সময়ে বদলী হয়ে চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে যোগ দেন। এরপর বদলী হয়ে ফটিকছড়িতে এসে কাটিয়ে দিয়েছেন ৭বছর।

    নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক উপজেলার এক কর্মচারী বলেন, বিগত সময়ে যতবার বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালিয়েছেন ততবার করিম আগে থেকে দূর্নীতিবাজদের অবহিত করেছেন। এর বিনিময়ে করিম তাদের নিকট থেকে আর্থিক ভাবে সুবিধা নিতেন। এসব বিষয় তিনি খুবই গোপন রাখতেন। কেউ জেনে গেলে তাকে ম্যানেজ করে ফেলতেন।এভাবে দিনের পর দিন বেড়ে গেছে তার অনিয়ম ও দুর্নীতি। রীতিমত বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। নামপ্রকাশ অনিচ্ছুক ওই কর্মচারী আরো বলেন, একজন দফতরি কিভাবে এত টাকার মালিক হন।তার বেতন সর্বসাকুলার ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা। অথচ তার চলাফেরা লাখপতির মতো।তার সম্পদের উৎস খুঁজে বের করার দাবি জানাচ্ছি আমি।




    আরও খবর 27

    Sponsered content