• জাতীয়

    প্রেমের টানে আফ্রিকান তরুণী নারায়ণগঞ্জে

      প্রতিনিধি ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ১১:১৬:৩০ প্রিন্ট সংস্করণ

    ডেস্ক রিপোর্ট: গভীর ভালোবাসা ও প্রেমের টানে সুদূর আফ্রিকা থেকে নারায়ণগঞ্জের বন্দরে স্বামীর বাড়িতে ছুটে এসেছেন ফান্সসিসকা নামে আফ্রিকার বংশোদ্ভূত এক তরুণী। তিনি দেশটির স্থানীয় একটি বিমানবন্দরের সিনিয়র ম্যানেজার ও একটি ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুর প্রতিষ্ঠানে সহকারী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদে কর্মরত আছেন। সুন্দরী, উচ্চশিক্ষিতা ও প্রতিষ্ঠিত এ বিদেশি তরুণীকে নিয়ে রীতিমতো হৈচৈ পড়ে গেছে স্বামীর বাড়িতে।




    গত শুক্রবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের বন্দরে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখা মেলে এ দম্পতির। তখন দেখে মনে হয় কোনো বিবাহোত্তর অনুষ্ঠানে বর-বধূ বা নব দম্পতির আনন্দমুখর সময় কাটানোর দৃশ্য। বিদেশি তরুণীর মায়াভরা কণ্ঠে টুকটাক কথাও বলছেন বাংলা ভাষায়। বন্দর উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ত্রিবেনী গ্রামের বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে ও তিন বোনের আদরের একমাত্র ভাই সাজেন হোসেন (২৭) উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পাড়ি দেন বাহরাইনে।

    সেখানে কয়েক বছর কাটিয়ে ২০১৮ সালে চলে যান আফিকার সি সেলস আইল্যান্ডে। সেখানে একটি পাঁচ তারকা হোটেলে সেফ হিসেবে চাকরি নেন তিনি। দীর্ঘ আলাপচারিতায় ফান্সসিসকার সঙ্গে পরিচয়ের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত নিজের জীবনের মধুর গল্পটা এভাবে বর্ণনা করেন সাজেন হোসেন। তিনি বলেন, হোটেলটিতে অফিসের কাজে প্রায় সময় আসা যাওয়ার সুবাদে ২০২০ সালের নভেম্বরে সাজেনের পরিচয় হয় সি সেলস বিমানবন্দরের সিনিয়র ম্যানেজার ফ্রান্সসিসকার (৩০) সাথে। উচ্চ বিলাসিতা ও অহংকার বিহীন সুন্দর মনের এই আফ্রিকান তরুণীর সঙ্গে অল্পদিনেই বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে হোটেলটির সুদর্শন সেফ বাংলাদেশি যুবক সাজেনের সঙ্গে।




    এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে ২০২১ সালে নিজ নিজ পরিবারের মতামত নিয়ে সেখানে বিয়ে করেন তারা। স্বামীকে খুশি করতে তার নামের অংশ যুক্ত করে নিজের নাম পরিবর্তন করে রাখেন ফ্রান্সসিসকা হোসাইন। গত তিন বছর ধরে সাজেন-ফ্রান্সসিসকার দাম্পত্য জীবন বেশ সুখ-শান্তিতেই কাটছে।

    তবে দীর্ঘ ৭ বছর প্রবাসে থাকা সাজেন নিজের বাবা-মা ও বোনদের দেখতে কর্মস্থল থেকে কয়েক মাসের ছুটি নিয়ে গত ১৬ জানুয়ারি বাংলাদেশে নিজ বাড়িতে আসেন। দেশে এসে স্ত্রী ফ্রান্সসিসকার সাথে নিয়মিত যোগাযোগও রেখেছেন। তবে স্বামীর অনুপস্থিতিতে গভীর শূন্যতা অনুভব করেন ফ্রান্সসিসকা। স্বামীকে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেন তিনি। স্বল্প সময়ের ছুটি পেয়েই গত ২ ফেব্রুয়ারি ছুটে আসেন বাংলাদেশে। ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে এ বিদেশি বধূকে সাদর সম্ভাষণ জানিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন সাজেন ও তার পরিবারের সদস্যরা।




    ফ্রান্সসিসকা বলেন, স্বামীর বাড়ির মানুষ আমাকে এত আদর-যত্ন করছে, এত ভালোবাসা দিচ্ছে, এতে আমি মুগ্ধ। আমি ভাবতেই পারিনি বাংলাদেশের মানুষ এত ভালো, এত আন্তরিক ও এত উদার।’ এমন পুত্রবধূ পেয়ে খুশির সীমা নেই সাজেন হোসেনের বাবা-মায়ের। বিদেশি পুত্রবধূকে খুব আপন করেই সাজেনের বাবা আবদুস সাত্তার বলেন, ছেলে ও বৌমাকে দেখে আমি অনেক খুশি। আমার খুব আনন্দ লাগছে। বৌমা অনেক ভালো মেয়ে।’ সাজেনের মা আফসানা আক্তার বলেন, ছোটবেলা থেকে আমার ছেলে বলত তার খুব শখ সে বিদেশে যাবে, বিদেশে গিয়ে বিদেশি মেয়ে বিয়ে করবে। আল্লাহ তার ইচ্ছা পূরণ করেছেন। বিদেশি স্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ আফ্রিকাপ্রবাসী বাংলাদেশি যুবক সাজেন হোসেনও।

    আরও খবর 17

    Sponsered content