প্রতিনিধি ১৯ নভেম্বর ২০২৩ , ৯:৫৭:১৩ প্রিন্ট সংস্করণ
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : যে কবিতা শুনতে জানে না/ সে ভালোবেসে যুদ্ধে যেতে পারে না/ যে কবিতা শুনতে জানে না/ সে সূর্যকে হৃদপিণ্ডে ধরে রাখতে পারে না।
একবিংশ শতাব্দীর এই অস্থিরতার যুগে মানুষ যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রবলভাবে আসক্ত; বই পড়া থেকে শুরু করে সৃজনশীল চর্চায় যখন নিদারুণ দুর্ভিক্ষ-তখনই ফেসবুককে ব্যবহার করে যে ধর্মীয় ও সমসাময়িক বিষয়াবলি নিয়ে কবিতা লিখে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছেন পাহাড়ের এক তরুণ লেখক ও সাংবাদিক। তার নাম আবদুল জলিল। জন্ম খাগড়াছড়ির দীঘিনালার মধ্য বোয়ালখালী গ্রামে। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০১৬ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। বর্তমানে দৈনিক বাংলা ও নিউজ বাংলায় খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন।
তার লেখা “প্রার্থনা” ও “মানবতা” কবিতা দু’টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
আপাদমস্তক শুদ্ধ সংস্কৃতির ধারক এই মানুষটি পেশাগত জীবনে একজন সাংবাদিক হলেও, কবিতাকে ভালোবেসে শুদ্ধ সংস্কৃতির চর্চা ও সুন্দর জীবনবোধকে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়াও তিনি ভালো আবৃত্তিও করতে জানেন। ২০০৬ সালে ইসলামি ফাউন্ডেশন আয়োজিত জেলা পর্যায়ে কবিতা আবৃত্তি অনুষ্ঠানে ২ বার প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন।
জানতে চাইলে আবদুল জলিল বলেন, মন ভালো থাকুক অথবা খারাপ, কবিতা এমন এক অনুভূতি, যা মনকে প্রশান্তি দেবেই। আমি শুধু চেয়েছি, যে মনের কথাটুকু বলতে চাচ্ছে অথবা বলতে চেয়েও পারছে না, সে শুধু কবিতা দিয়ে তার অনুভূতিটা বুঝিয়ে দিক। এই দীর্ঘ পথচলায় সবসময়ই একটা আকাঙ্ক্ষা ছিল, ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে কীভাবে মানুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটানো যায়। তারই অংশ হিসেবে এ কবিতা লেখা।
কবিতা:(১)
প্রার্থনা
–আবদুল জলিল
আত্মার সব কপাট ভেঙ্গে মুক্ত করো খোদা মোরে,
জাগতিক সব পাপ-জঞ্জাল রয়েছে আমায় ঘিরে।
ভূলোকে আসায় ধরেছে আমায় বিতারিত ইবলিশ,
পাপে করছে নিমজ্জিত পূণ্যের নাই হদিস।
হয়েছি পাপী হয়েছি তাপী হয়েছি পূণ্যহারা,
মনের সিংহাসনে ইবলিশ বসিয়া দেয় নাড়া।
জীবনে যতো রয়েছে গুনাহ্ মার্জনা কর প্রভূ
দূরভীত করো মনের জঞ্জাল ভ্রষ্ট করোনা কভূ।
আত্মাকে মোর শুদ্ধ করে পূণ্যের পথ দেখাও
তোমার মনোনীত পথে চালিয়ে মোরে নাও।
যতোদিন রবো এ ধরায় করবো তোমার উপাসনা
তোমার প্রেমে হবো নিমজ্জিত করি তোমারই প্রার্থনা।
খালেস দিলে কইগো খোদা করো ক্ষমা মোরে
ক্ষমা করো সব পাপীষ্ঠদের করো ক্ষমা সবারে।
কবিতা:(২)
মানবতা
–আবদুল জলিল
চারদিকে অসংখ্য ধার্মিক
ভবে মানুষ দেখি কম
অমানুষদের ভীড়ে জন্মে
মিলছেনা উপশম।
ধরায় করো মানবের ক্ষতি
শিখিয়েছে কোন ধর্ম?
ধর্মের অপব্যখ্যায় চালাও
অবিরাম কুকর্ম।
ধর্ম শেখায় মানবিক হও
শান্তি প্রতিষ্ঠা করো
এ মানবতার দোহাই দিয়ে
মানুষ কেমনে মারো?
দিনশেষে মোরা সবাই মানুষ
একপাতে খাই-চলি
অজ্ঞদের নির্দেশনায়
কেনো মানবতার দাও বলি।
সৌহার্দ্য সম্প্রীতিতে সকলে
হও মানবতাগামী
দ্যুলোক-ভূলোকে মিলবে শান্তি
বলেছেন অন্তর্যামী।
অন্ধত্ব গোঁড়ামী নয়
ধর্ম আগে জানো
মানবতাই খাঁটি ধর্ম
অনন্তর সব মানো।