প্রতিনিধি ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ৮:৩৩:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ
এস.ডি.জীবন: আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বর্জ্য থেকে সার ও বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চান বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
বুধবার “চট্টগ্রাম নগরীতে সমন্বিত বর্জ্য শোধনের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এ মন্তব্য করেন।
মেয়র বলেন, বর্জ্য সংগ্রহের পর তা ল্যান্ডফিল্ডে নিয়ে বছরের পর বছর পচনের জন্য ফেলে রাখার নীতিতে আমি বিশ্বাসী নই। বিভিন্ন আধুনিক দেশে আমি বর্জ্যকে ব্যবস্থাপনা করে কীভাবে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ ও সার উৎপাদন করে তা দেখেছি। এই অভিজ্ঞতাকে আমি চট্টগ্রামে কাজে লাগাতে চাই। প্রতিদিন চট্টগ্রামে যে বিপুল বর্জ্য উৎপাদিত হয় তা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তা থেকে সার ও বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চাই, চট্টগ্রামকে পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যকর আর টেকসই শহরে পরিণত করতে চাই।
সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বর্জ্য যথাযথভাবে ব্যবস্থাপনা না করলে তা যে কেবল নগরীকে অপরিচ্ছন্নই করে তা নয় বরং বর্জ্য জনমানুষের স্বাস্থ্যের জন্যও ভয়াবহ হুমকি হয়ে ওঠে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে গবেষণা ও প্রযুক্তিভিত্তিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।
মেয়রের একান্ত সচিব ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেম বলেন, আমরা এখন বর্জ্য পৃথকীকরণে জোর দিচ্ছি।এর মাধ্যমে বর্জ্য থেকে সার উৎপাদনযোগ্যতা, রিসাইকেলযোগ্যতা ইত্যাদির ভিত্তিতে প্রথমেই আলাদা করে ফেলছি। এরপর সে বর্জ্যগুলোকে কাজে লাগাচ্ছি। ইতোমধ্যে নগরীর শুলকবহর ওয়ার্ডে একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে যেটির সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে পূর্ব ষোলশহর, পশ্চিম ষোলশহর এবং উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ডে পৃথকীকরণ শুরু করেছি।
সেমিনারে জাপানের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় দুটি জাপানী কোম্পানি, জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন (ঔঋঊ ঊহমরহববৎরহম ঈড়ৎঢ়ড়ৎধঃরড়হ) এবং ইয়চিও ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন (ণধপযরুড় ঊহমরহববৎরহম ঈড়. খঃফ.) একটি সমীক্ষাপর ফলাফল তুলে ধরেন। সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন দৈনিক এক হাজার টন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করে তা থেকে ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রস্তাব করেছে।
জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন একটি বৃহৎ অবকাঠামো কোম্পানি যা বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু সহ পরিবেশ সংক্রান্ত অনেকগুলো বড় বড় প্রকল্পে কাজ করছে। ইয়াচিও ইঞ্জিনিয়ারিং বাংলাদেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে বহু বছর ধরে জাইকার সঙ্গে পরামর্শক হিসেবে সহযোগিতা করে আসছে। চসিক সম্ভাব্যতা সমীক্ষার ফলাফল বাস্তবায়নের জন্য অভিপ্রায় পত্র (খবঃঃবৎ ড়ভ রহঃবহঃ) জারি করেছে।
চসিকের সহযোগিতায়, জাপানি দলটি ২০২২ সালের আগস্ট থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারী পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের পর “একটি সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা” বাস্তবায়নের প্রস্তাব তুলে ধরে। দলটি বিদ্যমান বর্জ্য শোধনাগারের যথাযথ ব্যবস্থাপনারও প্রস্তাব করেছে। সমীক্ষা অনুসারে, চট্টগ্রামের প্রতিদিন আনুমানিক ২ হাজর ১শ টন বর্জ্য উৎপাদিত হয় যার ৬৮ শতাংশই খাদ্য সংশ্লিষ্ট।
সেমিনারের সঞ্চালনা করেন চসিক প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম।
আরো উপস্থিত ছিলেন-পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সহ-সভাপতি সুভাষ বড়ুয়া, চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আকবর আলী, জনসংযোগ ও প্রটোকল কর্মকর্তা আজিজ আহমদ, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি হারুনুর রশিদ সহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জাপান বর্জ্য গবেষণা ফাউন্ডেশন কর্পোরেশনের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিঃ নাওয়া সুকামোতো, জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের মহাব্যবস্থাপক জেন তাকাহাশি, ইয়চিও ইঞ্জিনিয়রিং এর মাসাহিরো সাইতো।