• জাতীয়

    নতুন বই কেজি দরে বিক্রি করে দিলেন প্রধান শিক্ষক

      প্রতিনিধি ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ , ৯:৩০:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ

    চট্টবাণী ডেস্ক: গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে নতুন শিক্ষা বছরের মাধ্যমিকের সরকারি বিনামূল্যের বই ফেরিওয়ালাদের কাছে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। পরে জরুরি সহায়তা নম্বর ৯৯৯ এর মাধ্যমে খবর পেয়ে গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে ফেরিওয়ালার কাছে থেকে বইগুলো জব্দ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।

    এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা অফিস। নোটিশে তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সামনে এ ঘটনা ঘটে।



    মাধ্যমিক স্তরের বাংলা, ইরেজি, গণিত, সাধারণ বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচিতি, ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, ক্যারিয়ার শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, চারুপাঠ, কৃষি শিক্ষা, আনন্দপাঠ, গার্হস্থসহ বিভিন্ন বিষয়ের বই ছিল সেখানে।



    জানা গেছে, উপজেলার শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জগবন্ধু বিশ্বাস সোমবার দুপুর ২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে দেন। এরপর তিনি গোপনে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রণীত ২০২২ ও ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির বিভিন্ন বিষয়ের সরকারি বিনামূল্যের প্রায় ত্রিশ কেজি বই ৩০ টাকা কেজি দরে দুই ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি করেন। স্থানীয় লোকজন সরকারি বইগুলো ফেরিওয়ালাদের কাছে দেখতে পেয়ে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে বইগুলো কিনেছেন বলে জানান।



    স্থানীয় ইমদাদুল হক বলেন, আমি জমির কাজ করে দুপুরে বাড়ি ফেরার পথে স্কুলের সামনে ভাঙারি বোঝাই ফেরিওয়ালাদের একটি ভ্যান ও দুইজন লোককে দেখতে পাই। তাদেরকে জিজ্ঞাসা করি এখানে কি করেন। তারা জানায়, এই স্কুল থেকে কিছু বই কিনেছি। বইগুলো দেখতে চাইলে তারা উপস্থিত লোকজনের সামনে বইগুলো দেখান। বইগুলোর গায়ে ‘২০২২ শিক্ষাবর্ষ’ ও ‘২০২৩ শিক্ষাবর্ষ’ লেখা রয়েছে। পরে আমরা এলাকাবাসী বইসহ তাদেরকে আটক করি এবং ৯৯৯ নম্বরে কল করে বিষয়টি জানাই। পরে ইউএনও স্যারের নির্দেশে গ্রাম পুলিশের কাছে বইগুলো হস্তান্তর করি।

    বই ক্রেতা ফেরিওয়ালা কাওছার শেখ জানান, তিনি বইগুলো শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জগবন্ধু বিশ্বাসের কাছ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে কিনেছেন।



    প্রধান শিক্ষকের কাছ বই বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোনো বই বিক্রি করিনি। একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আপনারা কিছু কইরেন না। আমি আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবো।

    কাশিয়ানী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহফুজা বেগম বলেন, আমরা বিক্রি করা বইগুলো জব্দ করেছি। প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছি। তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। এরপর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে বিষয়টি শুনেছি। গ্রামপুলিশ পাঠিয়ে বইগুলো জব্দ করা হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



    গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) একেএম হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বই বিক্রির ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

    আরও খবর 17

    Sponsered content