প্রতিনিধি ২৭ অক্টোবর ২০২২ , ৯:৫৮:২১ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টবাণী ডেস্ক: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তিনটা সমাবেশ করে ক্ষমতায় চলে গেছি বলে মনে করছি না। কিন্তু এসব সমাবেশের কারণে আপনাদের কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গেছে। যে কারণে সমাবেশগুলো বন্ধ করার জন্য আপনারা পরিবহন ধর্মঘট করাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর নয়া পল্টনে যুবদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত যুব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
‘দু-তিনটা সমাবেশ করে ফখরুলের ভাবখানা এমন যে, ক্ষমতায় এসেই গেছে’- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে এসব কথা বলেন ফখরুল।
‘অনেকেই জানতে চায়, রিজার্ভের টাকা গেল কোথায়। তাদের বলতে চাই, এটা কেউ চিবিয়ে খায়নি। রিজার্ভের টাকা পায়রা বন্দরে খরচ করা হয়েছে’ -প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, রিজার্ভের টাকা পায়রা বন্দরে খরচ করার জন্য নয়। রির্জাভের টাকা হচ্ছে বিদেশ থেকে যে আমদানি করবেন, তা ডলার দিয়ে পরিশোধ করবেন। দেশে যখন ক্রাইসিস দেখা দেবে তখন খরচ করবেন।
‘খেলা হবে’ -আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, খেলা তখনই হয়, যখন লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকে। খেলা তখন হবে যখন সরকার পদত্যাগ করবে এবং মধ্যবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেবে। তখন সেই নির্বাচনী খেলা হবে। এছাড়া কোনো খেলা খেলতে দেওয়া হবে না। দেশের মানুষ আর কখনো সেটা দেবে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনায় ধর্মঘট ডেকেছে। সেই ধর্মঘট দিয়ে কি গণতন্ত্রকামী মানুষকে আটকে রাখতে পেরেছে? পারেনি। জনগণ তাদের দাবি জানাতে হেঁটে বিভিন্নভাবে সমাবেশে এসে উপস্থিত হয়েছে। বরিশালে ধর্মঘট দিয়েছে, রংপুরে ধর্মঘট দিয়েছে। কেন? যাতে জনসমাবেশ বন্ধ করা যায়।
মুন্সীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জে যুবুদল নেতা নিহত হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার অবৈধ সরকার গুলি করে আমাদের দমন করতে চায়। তারা অত্যাচার, নির্যাতন করে দমন করতে চায়।
নির্বাচন ব্যবস্থাকে আওয়ামী লীগ ধ্বংস করে দিয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন কমিশন করেছে, যাকে ডিসি-এসপিরা মানে না। তারা নির্বাচন করতে পারে না। সুতরাং নির্বাচনের প্রশ্নই উঠতে পারে না। আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলেছি, হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। নির্বাচনের আগে হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে, তার সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। পরিষ্কার কথা, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা না দিলে এখানে কোনো নির্বাচন হবে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের সামনে অনেক কঠিন সময়, অনেক পরীক্ষা, অনেক যুদ্ধ। আজকে যে চেয়ারটি খালি রেখেছি দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার জন্য। তিনি তার সারাটা জীবন সংগ্রাম- লড়াই করেছেন গণতন্ত্রের জন্য। এখনও তিনি অসুস্থ শরীর নিয়ে বন্দি হয়ে রয়েছেন। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা, মিথ্যা সাজা দিয়ে দেশের বাইরে রাখা হয়েছে। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। অসংখ্য নেতা কর্মীদের গুম-হত্যা করা হয়েছে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।
যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না।