চট্টবাণী ডেস্ক: নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, জাতি হিসেবে এত অধৈর্য হওয়ার কোনো কারণ নাই। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ দেওয়ার মতো বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করতে পারব।
রোববার (২৪ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় নির্বাচন, নাকি স্থানীয় নির্বাচন আগে করবেন এবং নির্বাচন কবে নাগাদ করবেন—এই প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আজকে মাত্র দায়িত্ব নিলাম। একটা দিনক্ষণ দিয়ে বলতে পারব না। তবে যে কোনো নির্বাচন করতে গেলে আমাদের কিছু প্রস্তুতিমূলক কাজ তো থাকে। এ ছাড়াও কিছু সংস্কার তো থাকে। সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এটা তো চলতেই থাকবে। তবু প্রয়োজনীয় সংস্কার তো করতেই হবে।
তিনি বলেন, আমাদের যেমন তরুণ প্রজন্ম, যারা তাদের ভোটাধিকারের জন্য এত আত্মত্যাগ করল, তাদের ভোট দেওয়ার জন্য ভোটার তালিকায় আনতে হবে। অনেকেই বলেন ভুয়া ভোটার আছে। আমাকে অনেকেই বলেন, রোহিঙ্গা ভোটার ঢুকে গেছে অনেক। সত্য-মিথ্যা জানি না। চেয়ারের বসার আগে অনেক তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছি। অনেকে অনেক রকম তথ্য দেন। কেউ কেউ বলছেন, রোহিঙ্গা ঢুকে গেছে। আবার গণমধ্যমে এসেছে, কেউ বলছেন সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন হোক, কেউ বলছেন আগের মতো হোক। কেউ বলছেন যে দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, কেউ বলছেন আগের মতোই। এখন সংখ্যানুপাতিক সিস্টেম আসে তাহলে সেই ভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে। এই ধরনের জিনিসগুলো ফয়সালা না হলে আমরা কীভাবে ভোটটা করব। সুতরাং সরকার তো অনেকগুলো সংস্কার কমিশন করে দিয়েছে।
সিইসি আরও বলেন, নির্বাচনের জন্য যে কমিশনগুলো সম্পৃক্ত তাদের যে সাজেশন আসবে, নির্বাচন করার জন্য যা যা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়, তা আমরা নেব। তারপর ভোট করার মতো সবকিছু যখন প্রস্তুত হবে তখনই আমরা নির্বাচনের জন্য তারিখ দেওয়ার মতো বিষয়গুলো চিন্তা করতে পারব। এখন বলে দিলাম যে, এক বছর পর নির্বাচন হবে। কিন্তু এক বছর পর দেখা গেলো কোন পদ্ধতিতে হবে, সেটাই ফয়সালা করতে পারে নাই।
তিনি বলেন, কেউ বলেন যে, স্থানীয় সরকারের ভোট আগে করেন, কেউ বলেন জনগণের হাতে ক্ষমতা দিয়ে চলে যান। ...তো কমিশনগুলো এখন কী রিপোর্ট দেয়, উনারা কী পরামর্শ দেন, সরকার কতটুকু গ্রহণ করে, সেগুলো ফয়সালা না হলে আমি নির্বাচন করব কীভাবে? এগুলো একটার সঙ্গে আরেকটার সম্পর্ক আছে। আর জাতি হিসেবে এত অধৈর্য হওয়ার কোনো কারণ নাই। কারণ ডেডলাইন দিয়ে দিয়েছে, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কমিশনগুলোকে সুপারিশ দেওয়ার জন্য। আমাদের বাঙালিদের জন্য ডেট একটু বাড়াই দিতে হয়। ৩১ ডিসেম্বর হচ্ছে শেষ সময় সংস্কার প্রস্তাব দেওয়ার। আর প্রধান উপদেষ্টা তো বলেছেন—আপনারা সুপারিশগুলো দেন, এগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসব। তারা যে বিষয়গুলো নিয়ে একমত হবে, সেগুলো আমরা গ্রহণ করব। আর যেগুলো নিয়ে বিতর্ক হবে, সেগুলো আমি পরবর্তী সরকারের জন্য রেখে দিয়ে যাব।
সিইসি বলেন, যে সংস্কারগুলো গ্রহণ হবে, সেগুলো নিয়ে আমরা কাজে নেমে পড়ব। তবে আমাদের তরফ থেকে আমরা যথাসম্ভব আজ থেকেই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেব। কিন্তু পারব না তো। সংস্কার না আসলে পারব না। নির্বাচন করার জন্য যে সংস্কারগুলো প্রয়োজনীয়, সেগুলো করতে হবে। ওগুলো ছাড়া করা যাবে না। ওগুলো হলে নির্বাচন হবে। অনেকগুলো সংস্কার ইন্টাররিলেটেড (আন্তঃসম্পর্কিত)। এখন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন একটা সুপারিশ দিলেও তো আমরা করতে পারব না, যদি সেটা অন্য কমিশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়।
এ সময় অন্য চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।