চট্টবাণী ডেস্ক: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ ২৬টি দলের কাছে মতামত না চাওয়ার কারণ জানিয়েছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ক কমিশন। কমিশন প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার জানান, সরকার নির্ধারিত কার্যপরিধির ভেতর থেকে কাজ করাই তাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রসির (আরএফইডি) সদস্য সাংবাদিকদের সঙ্গে সংস্কার কমিশন আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য শুধু ২২টি দলের কাছে প্রস্তাব চাচ্ছেন। দলতো ৪৮টি, এটা কি বৈষম্য হলো না—এমন প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এটা নিয়ে আমরা আরেকদিন সংবাদ সম্মেলন করব। আপনারা সরকারকে জিজ্ঞেস করেন। আমরা অনেকের কাছে মতামত নিচ্ছি। আমরা সরকারের অভিপ্রায়... সরকারকে জিজ্ঞেস করেন। আমরা চেষ্টা করছি, সব দল-মতের ঊর্ধ্বে থেকে একটা সুপারিশ যেন করতে পারি।
সরকারের সিদ্ধান্ত যদি আপনার কমিশনের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে আমরা কেমন সংস্কার পাব—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার এই কমিশনগুলো গঠন করেছে। সরকার একটা কার্যপরিধি নির্ধারণ করে দিয়েছে। আমাদের করণীয় নির্ধারণ করে দিয়েছে। প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। অবশ্যই সরকারের অভিপ্রায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সব মত-পথের ব্যক্তির মতামত নেওয়ার চেষ্টা করছি। প্রত্যেকের মতামত দেওয়ার সুযোগ থাকবে। কারণ আমাদের কোনো নিজস্ব এজেন্ডা নেই। কারো পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো বিশেষ দলের বা বিশেষ গোষ্ঠীর আমরা স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য একত্রিত হয়নি। এই যে টিম আমাদের, আমরা বলিষ্ঠভাবে কাজ করছি।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান আরও বলেন, অনেকের মতামত, সুপারিশ নেওয়ার আমাদের সুযোগ হবে। ওয়েবসাইট ও ই-মেইলে মতামত দেওয়া যাবে। আমরা কোন প্রেক্ষাপটে এখানে এসেছি, প্রেক্ষাপট হলো—দেড় হাজারের মতো প্রাণহানি হয়েছে। ২০-৩০ হাজার ব্যক্তি আহত হয়েছে। তাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আমরা এই সব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছি। আমরা যেন তাদের রক্তের প্রতি বিশ্বাস ঘাতকতা না করি। আমরা তাদের রক্তের ঋণ শোধ করার জন্য বদ্ধপরিকর। আমাদের কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা আগামী নির্বাচনের কথা শুধু চিন্তা করছি না। অনেক অন্যায়, অপকর্ম হয়েছে অতীতে, এগুলো যাতে বন্ধ হয়, নির্বাচন ব্যবস্থা যাতে কার্যকর হয়, তার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা যাতে দীর্ঘমেয়াদে শক্ত হয়, সেই ব্যবস্থা করব।
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রসঙ্গে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, ইভিএম ত্রুটিপূর্ণ, দুর্বল যন্ত্র ছিল। এগুলো এখন অকেজো হয়ে গেছে বোধ হয়। সবচেয়ে বড় কথা, এটার জন্য রাজনৈতিক ঐক্য এবং আস্থাশীলতা দরকার। রাজনীতিবিদদেরই এ বিষয়ে ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রসির (আরএফইডি) সভাপতি একরামুল হক সায়েমসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও সদস্য সাংবাদিক এবং নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ক কমিশনের সদস্যরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।