চট্টবাণী ডেস্ক: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমরা বাংলাদেশকে আজ স্বৈরাচারমুক্ত করেছি। স্বৈরাচারকে বিতাড়িত করার মাধ্যমে আমাদের লক্ষ্যের অল্প একটু অংশ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।
আমাদের আরও বহু সামনে যেতে হবে। অনেক পথ চলা বাকি রয়েছে। এই পথ আমাদের পাড়ি দিতে হবে। এই পথ যদি আমরা সঠিকভাবে পাড়ি দিতে পারি, তাহলেই দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার যেটিকে খর্ব করা হয়েছিল, সেটা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হব। ঐক্যবদ্ধভাবে যদি পথ পারি দিতে পারি, তাহলে মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পারব।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে আয়োজিত ঐতিহাসিক স্মরণসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করার আন্দোলনে যারা আত্মত্যাগ করেছেন, তাদের স্মরণ করার জন্য আমাদের আজকের এ সভার আয়োজন। যে মানুষগুলো সামনে রেখে আমরা এ সভার আয়োজন করেছি, এই মানুষগুলোর মধ্যে অনেকেই হারিয়ে গেছেন আমাদের মাঝ থেকে, অনেকেই বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এই মানুষগুলোর আত্মদান দেশের কোটি কোটি মানুষের জন্য। কিছুদিন আগেও যাদের কথা বলার অধিকার ছিল না।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগে আমরা দেশের বিভিন্ন বিষয়ে সামগ্রিকভাবে দেশের মানুষের সামনে আমাদের দলের পক্ষ থেকে অন্যান্য আন্দোলনকারী দল জাতির সামনে একত্রিতভাবে ৩১ দফার একটি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেছি। আজকে আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, দেশের মানুষের যদি ভাগ্য পরিবর্তন করতে হয়, তাহলে আজকে শুধুমাত্র আমরা যে সব সংস্কার প্রস্তাব করেছি তাতেই থেমে থাকলে চলবে না। দেশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকার অর্জন যেমন আমাদের করতে হবে, একইভাবে আমাদের জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির বিষয়েও চিন্তা করতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা বিশ্বাস করি, যখন দেশে জনগণের সামনে একটি জবাবদিহিতামূলক একটি ব্যবস্থা থাকবে, তখন যারাই সরকার পরিচালনা করবে, তারা জনগণের কথা চিন্তা করবে। সেই কারণে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করাই হচ্ছে আমাদের মূল লক্ষ্য। সেজন্যই এত ত্যাগ, এত তিতিক্ষা, এত সংগ্রাম-আন্দোলন।
তিনি বলেন, আমরা আন্দোলন করেছি, স্বৈরাচারকে বিদায় করেছি, মানুষের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করব -ইনশাল্লাহ। কয়দিন আগে বলেছিলাম, মানুষের ভোটের অধিকার যতদিন প্রতিষ্ঠা না হবে বিএনপির আন্দোলন ততদিন অব্যাহত থাকবে। শুধু আন্দোলনে সংগ্রাম নয়, মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামেও আমাদের সফল হতে হবে। এর জন্য ধৈর্য ধারণ করতে হবে। আইন নিজের হাতে তুলে নিলে চলবে না। আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তবেই আমরা দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে সক্ষম হবো।
তারেক রহমান বলেন, গণআন্দোলনে আত্মত্যাগ করা মানুষগুলো সেদিনই সফল হবে, যেদিন আমরা মানুষের রাজনৈতিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার পাশাপাশি দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে সক্ষম হবো।
বেলকুচি, চৌহালী ও এনায়েতপুর থানা বিএনপি আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম। এতে প্রধান বক্তা হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন বিএনপির স্থায়ী কমিটির ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
এনায়েতপুর থানা বিএনপির সদস্য সচিব মনজুরুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু প্রমুখ।