চট্টবাণী ডেস্ক: যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি সেটা যেন হেলায় না চলে যায় এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র যেন পুনঃপ্রতিষ্ঠা হয় তাই ২০১৬ সালে ভিশন ২০৩০ দিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া।
বছর দুই এক আগে আমরা ৩১ দফা দিয়ে লড়াই সংগ্রাম করেছি। গত ১৬ বছরে আমাদের অনেক নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপির বহু নেতা নির্বাসিত হয়েছে। আজকে আমরা যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি সেটা যেন হেলায় না চলে যায়।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
গণতন্ত্র আর বিএনপি দুটি সমার্থক উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশের মানুষ শুধু ৫২ ও ৭১ সালে নয়, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সবসময় লড়াই করেছেন। গণতন্ত্র আর বিএনপি দুটি সমার্থক। জিয়াউর রহমান এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতি শাসন থেকে প্রধানমন্ত্রীর শাসন এনেছিলেন। পাশাপাশি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তিনি প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সরকারে যারা আছেন তাদের বলব এখনো ফ্যাসিস্ট সরকারের অনেকে তাদের চেয়ারে বসে আছে। এরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বাধা হয়ে নানা ষড়যন্ত্র করতে চাচ্ছে। তাদের দ্রুত চেয়ার থেকে সরাতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, পাশাপাশি এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করতে যারা আহত হয়েছে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে পুনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছি বর্তমান সরকারের প্রতি।
সমাবেশে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি প্রমাণ করে বিএনপি গণতান্ত্রিক দল। বিএনপি মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা করেছিল। অর্থাৎ বিএনপির ইতিহাস হচ্ছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ইতিহাস তাই গণতন্ত্র দিবস পালনের অধিকার বিএনপি রাখে।
তিনি বলেন, বিএনপি যতদিন পর্যন্ত গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে না পারবে তত দিন রাজপথে থাকবে।
সমাবেশে বিএনপির আরেক জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, ৫ হাজার কিলোমিটার দূরে বসে যে নেতা বাংলাদেশ থেকে স্বৈরাচার বিদায় করেছেন, সে নেতা হচ্ছে তারেক রহমান।
বাংলাদেশের মুক্তিকামী ছাত্র-জনতা যে ইতিহাস তৈরি করেছেন তা বিশ্বের ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে উল্লেখ করে আবদুল মঈন খান বলেন, তবে একটা কথা না বললে আমার বক্তব্য অসমাপ্ত থাকবে, এ আন্দোলনের যে অগ্নি স্ফুলিঙ্গ উঠেছে তাতে যে লাভা বয়ে গেছে তার মাধ্যমে স্বৈরাচার বিদায় হয়েছে। দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য ছাত্র-জনতা যে সংস্কার করছে তা অবশ্যই দরকার। কিন্তু এ কথা মাথায় রাখতে হবে, এই সংস্কার শেষ হওয়ার পর দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সমাবেশের সমন্বয় করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন্নবী খান সোহেল।
সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ সদস্য সচিব আমিনুল হক, তানভীর আহমেদ রবিন।