চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের ৬ নেতাসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে অজ্ঞাতনামা মামলা করা হয়েছে।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) হাটহাজারী থানায় বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
অভিযুক্তরা হলেন, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মচারী ও ছাত্রলীগের সিএফসি গ্রুপের অনুসারী শরিফ উদ্দিন, লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী ও সিক্সটি নাইনের অনুসারী সাইদুল ইসলাম সাইদ, সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী ও সিএফসি গ্রুপের অনুসারী আরিফুল ইসলাম আরিফ; ইতিহাস বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিজয় গ্রুপের অনুসারী এইচটি ইমাম, লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিজয় গ্রুপের অনুসারী জজ মিয়া ওরফে মাজহারুল ইসলাম, আইন বিভাগের বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী ও সিএফসি গ্রুপের অনুসারী ইয়াসিন আরাফাতসহ অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৪০ জন।
এছাড়া কনকর্ড গ্রুপের নেতা, অর্থনীতি বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী আবরার শাহরিয়ারসহ বেশ কয়েকজনের নাম মামলা দায়েরের পর নিশ্চিত হয়েছেন বলে জানান মামলার বাদী সাব্বির হোসেন রিয়াদ।
মামলার এজহারে বলা হয়, গত জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে আমি (বাদী) সহ আমার অন্যান্য সহযোদ্ধারা ক্যাম্পাসে সমন্বয় করে মিছিল মিটিং, সমাবেশ করেছি। এরই ধারাবাহিকতায় ১৪ জুলাই (রোববার) রাত আনুমানিক ১১টা ১০মিনিটের সময় জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন এলাকায় আমি ও আমার অন্যান্য সহযোদ্ধারা মিছিলে জড়ো হয়ে "চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার" শ্লোগান দিচ্ছিলাম। ওই সময় বর্ণিত বিবাদীগণসহ অজ্ঞাত ৩০ থেকে ৪০ জন রাত সাড়ে ১১টার দিকে দলবদ্ধভাবে দেশীয় অস্ত্র হাতে হামলা ও ককটেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এসময় আমরা ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যাই।
এজহারে আরও বলা হয়, বর্ণিত বিবাদীগণ ও আরো অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৪০ ছাত্রলীগের চিহ্নিত নেতাকর্মী আমাদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বানচাল করার জন্য পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ বিষয়ে সাব্বির হোসেন রিয়াদ (বাদী) বলেন, ১৪ জুলাই ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্টে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনায় এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। স্বৈরচারের সহযোগী এ ছাত্রলীগ বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হুমকি ধামকি ও ভয়ভীতি দেখাতো। ওই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও তদন্তের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান থাকবে। মামলায় উল্লেখিত আসামীদের বাইরেও অনেকে এ ঘটনায় জড়িত ছিলো। সবাইকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
হাটহাজারী থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হাসান এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিবো।