চট্টবাণী ডেস্ক: চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে সেচ প্রকল্প এলাকায় বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক মাছের ঘের। মৎস্য চাষে দেশের চতুর্থতম উপজেলা চাঁদপুর।
ঘেরের চার পাশে জাল দিয়ে মাছ আটকে রাখার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। যে কারণে কোটি টাকার মাছ এখন পাশের ডাকাতিয়া নদীতে। এমন পরিস্থিতিতে ডাকাতিয়া নদীর পাড় এবং পাম্প হাউজের পাশে শত শত মানুষ ঘের থেকে বেরিয়ে আসা মাছ ধরার উৎসবে মেতে উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত সেচ প্রকল্প এলাকার বাগাদি, ফরিদগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে শত শত একরের মাছের ঘেরগুলো রক্ষায় কাজ করছেন শ্রমিকরা। চারপাশে উঁচু করে জাল টানানো হচ্ছে। মাছের খাবার দেওয়া হচ্ছে। খামারিরা দিন-রাত মাছ রক্ষা কাজ করে যাচ্ছেন।
উপজেলার সবচাইতে বড় মাছের ঘের হচ্ছে ধানুয়া গ্রামে ডাকাতিয়া নদী সংলগ্ন। এখানে ১৩ জন অংশীদারের ৪টি মাছের ঘের আছে। তারা উপজেলার মৎস্য খামারিদের মডেল। তাদের দেখাদেখি উপজেলায় অর্ধশতাধিক ছোট বড় মৎস্য খামার তৈরি হয়েছে।
এদের মধ্যে মূল উদ্যোক্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় অর্ধশতাধিক মাছের ঘের আছে। এর মধ্যে ৪০ জন হচ্ছেন মাছের বড় খামারি। এসব খামারে কয়েক শ’ কোটি টাকার মাছ আছে। আমরা কয়েক লাখ টাকার জাল দিয়েও মাছ রক্ষা করতে পারিনি। সব ডাকাতিয়া নদীতে চলে গেছে। আমরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন।
একই এলাকার খামারি হেলাল উদ্দিন কবির ও নাঈম জানান, তারা ১৩ জন উদ্যোক্তা প্রায় ২৫ কোটি টাকা খরচ করে খামার করেছেন। রুই, কাতল, মৃগেল, তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছ রয়েছে খামারে। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে অনেক মাছ নদীতে চলে গেছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য পাম্প হাউজের দায়িত্বরতদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
উপজেলার বালিথুবা ইউনিয়নের সেকদি চরে দুটি ঘের। এর মধ্যে একটি প্লাবিত। আরেকটি রক্ষায় কাজ করছেন শ্রমিকরা। ওই খামারের দায়িত্বরত প্রতিনিধি মিজানুর রহমান বলেন, আরও কয়েকদিন বৃষ্টি হলে এই ঘেরের মাছও রক্ষা করা যাবে না। এই খামারে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় অর্ধকোটি টাকার মাছ রয়েছে।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, বৃষ্টি মৌসুমের পূর্ব থেকেই আমরা উপজেলা মৎস্য খামারিদেরকে নেট ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছি। সে আলোকে তারা ব্যবস্থা নিয়েছেন। তারপরেও গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে অনেক খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাব।