চট্টবাণী: মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ বলেছেন, দেশের অন্যান্য স্থানের মতো চট্টগ্রামেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য পতিত স্বৈরাচারের দোসররা নানা ধরনের জঘন্য অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। চট্টগ্রামেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার যে চেষ্টা করা হচ্ছে তা প্রতিহত করতে হবে।
সোমবার (১২ আগস্ট) বিকেলে নগরের লালখান বাজার একটি রেস্টুরেন্টে দেশেরে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ইতিমধ্যেই পুলিশ প্রশাসন সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের কর্মস্থলে যোগদান করেছেন জানিয়ে এরশাদ উল্লাহ বলেন, সেজন্য আমরা তাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তবে আমরা অতীতের মত আওয়ামী দানবীয় পুলিশ বাহিনী চাই না। আমরা চাই, মানবীয় পুলিশ প্রশাসন। যারা দেশ ও জনগণের সেবায় নিয়োজিত থাকবে এবং পুলিশের আইন অনুযায়ী পুলিশ প্রশাসন পরিচালিত হবে।
বিএনপির নামে কেউ কোনো ধরনের অপকর্ম করলে আইনের হাতে তুলে দিতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবার জান মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের প্রত্যেকের কর্তব্য। তাদের ওপর যে কোনো ধরনের আঘাত প্রতিরোধ করতে হবে। যে কোনো অপপ্রচার ও অপচেষ্টার বিরদ্ধে চট্টগ্রামবাসীকে সচেতন থাকতে হবে। আমরা আমাদের বিজয়ী ছাত্র জনতাসহ চট্টগ্রামবাসীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।
১৫ বছর আওয়ামী লীগ থেকে শিক্ষা নিয়েছেন বলেন উল্লেখ করে এরশাদ বলেন, বিএনপির মিছিলের নাম দিয়ে তারা এসব ভাঙচুর করতেছে, তাই আমরা মিছিল বন্ধ করে দিয়েছি। গত ১৫ বছর আমরা যে শিক্ষা নিয়েছি। আমরা চাই না আওয়ামী লীগ যে কাজ করেছে সেই কাজ আমরা করি। তাইলে তো বারবার একই ঘটনা ঘটবে। আমরা যদি ভালো করি তা পত্রিকায় লিখবেন, খারাপ করলেও খারাপটা লিখবেন। আমরা অন্যায় করলে সেটিও লেখেন। আমরা আত্মসমালোচনায় বিশ্বাস করি।
লুটপাটের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আহবায়ক এরশাদ উল্লাহ বলেন, যারা লুটপাট করে চাঁদাবাজি করে তাদের কোনো পরিচয় নেই। তারা না বিএনপির, না আওয়ামী লীগ, না জামায়াতের ও জাতীয় পার্টির কেউ না। তারা হচ্ছে লুটেরাজ পার্টি। লুটেরাজ পার্টি নাম দিয়ে যদি কেউ কাজ করে। আমাদের একটিং চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন সঙ্গে সঙ্গে তাদেরকে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। আর্মির কাছে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। ১৯৭১ সালেও পুলিশ প্রশাসন ছিল। এরশাদ যাওয়ার পরও পুলিশ প্রশাসন ছিল। বিভিন্ন আন্দোলনের পরও পুলিশ প্রশাসন ছিল। কিন্তু এবারের আন্দোলনে বিশেষ করে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের সঙ্গে পুলিশ যে অত্যাচার করেছে। আমাদের বিরোধীদল তো বাদ দিলাম। জনগণের উপর যে অত্যাচার করেছে- চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানা জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনা এটা প্রথম দেখলাম। যদি এসব ঘটনায় আমাদের কেউ জড়িত থাকে তাহলে তাদেরকে সঙ্গে সঙ্গে বহিষ্কার করা হবে। কিন্তু আমার জানামতে এই সব ঘটনায় আমাদেরও জড়িত ছিল না। কিশোর গ্যাং ,ইয়াবা পার্টি ও লুটরাজ পার্টি- এই তিনটা গ্রুপ এসব কাজ করছে। ’
১৫ বছর আওয়ামী লীগ থেকে শিক্ষা নিয়েছেন বলেন উল্লেখ করে এরশাদ বলেন, বিএনপির মিছিলের নাম দিয়ে তারা এসব ভাঙচুর করতেছে, তাই আমরা মিছিল বন্ধ করে দিয়েছি। গত ১৫ বছর আমরা যে শিক্ষা নিয়েছি। আমরা চাই না আওয়ামী লীগ যে কাজ করেছে সেই কাজ আমরা করি। তাইলে তো বারবার একই ঘটনা ঘটবে। আমরা যদি ভালো করি তা পত্রিকায় লিখবেন, খারাপ করলেও খারাপটা লিখবেন। আমরা অন্যায় করলে সেটিও লেখেন। আমরা আত্মসমালোচনায় বিশ্বাস করি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমি নির্দিষ্ট করে বলি, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে এ ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তারা আমাদের দেশের হিন্দুদের ইন্ধন দিচ্ছে। যেন অস্থিতিশীল একটা পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়।
সাবেক আহ্বায়ক কমিটির সঙ্গে বর্তামান আহবায়কে কমিটির দূরত্ব প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান বলেন, আমাদের আগের কমিটিতে যারা ছিলেন বা এখনো যারা আছেন সবার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। কিন্তু কে কোথায় থাকবে সেটা একান্ত আমাদের নিজেদের বিষয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপি নেতা এম এ আজিজ, অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার, সৈয়দ আজম উদ্দিন, হারুন জামান, শফিকুর রহমান স্বপন, নিয়াজ মো. খান, এস এম সাইফুল আলম, কাজী বেলাল উদ্দিন, মো. শাহ আলম, ইস্কান্দার মির্জা, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, মো. কামরুল ইসলাম, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, ছাত্রদলের আহবায়ক সাইফুল আলম ও সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিন প্রমুখ।