নুরুল আবছার নূরী : ওমান প্রবাসী মো.আলাউদ্দিন (৩৫)। মৃত্যুর কয়েক ঘন্টা আগেও সাথে থাকা মামাতো ভাই এনামের সাথে খোশগল্পে মেতেছিলেন। এমনকি রাত একটা পর্যন্ত স্ত্রীর সাথে ফোনালাপও করেছিলেন। স্ত্রী নিজ থেকে নাকি বিদায় দিয়েছিলেন ঘুম পাচ্ছে বলে। এরপর ঘুমাতে যাওয়ার আগে নিজে নিজে গোসল সেরেছিলেন। রাতের খাবার খেয়ে, ফ্রেশ হয়ে পরিবারের সাথে কথা বলে ঘুমাতে যাবে এমন মুহুর্তে দাঁড়ানো থেকে নিচে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন।
পাশে থাকা রুমমেট হাবিব তার এমন অবস্থা দেখে আশপাশে থাকা স্বজনদের ডাকতেই নিস্তেজ হয়ে পড়েন আলাউদ্দিন। তবু্ও নিয়ম রক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক জানালেন তিনি আর বেঁচে নেই।
তার মৃত্যুর খবরটি যেনো কেউ বিশ্বাস করতে পারছে না। না দেশে, না প্রবাসে। কি করে বিশ্বাস করবে! এমন টগবগে যুবক মুহূর্তে 'নাই' হয়ে যাওয়া অবিশ্বাস্য বটেই।
আলাউদ্দিন ফটিকছড়ি উপজেলার রোসাংগীরি ইউনিয়নের উত্তর রোসাংগীরি গ্রামের আনোয়ারুল আজিম মাস্টার বাড়ির রফিকুল আলমের প্রথম পুত্র। সে দীর্ঘ ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ওমানের মাস্কাট সিটি থেকে দুইশ কি.মি দুরে ওয়াদি তায়েন নামক স্থানে বসবাস করতেন। সেখানে তার ব্যবসা বানিজ্য রয়েছে। মঙ্গলবার ভোর চারটার দিকে তার মৃত্যু হয়।
তার মামাতো ভাই সাংবাদিক মাহফুজ আনাম বলেন, 'আলাউদ্দীন খুবই মিশুক প্রকৃতির ছিল। মৃত্যু-র কয়েকদিন আগে দেখা হলে সে তার বুকের একপাশে ব্যাথা অনুভব হচ্ছে বলেছিল। স্থানীয় একটি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহন করে। তবে, কিন্তু কোনভাবেই তাকে দেখে মনে হয়নি মারা যাবে এমন অসুস্থ সে।'
আলাউদ্দিনের চার বছরের এক ছেলে ও দেড় বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। অবুঝ সন্তানগুলো এখনো জানেনা বাবা নামক বটবৃক্ষ চীরতরে হারিয়ে গেছে। প্রিয় সন্তানকে হারিয়ে মা এখন পাগল প্রায়। শুক্রবার সকালে লাশ দেশে নিয়ে আসার কথা রয়েছে।