চট্টবাণী: নগরে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে বাংলাদেশের কোনো শহরের দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এটিই প্রথম চুক্তি।

মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়ের উপস্থিতিতে মঙ্গলবার (৭ মে) টাইগারপাসের চসিক কার্যালয়ে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম এবং সিএমপির ডেপুটি কমিশনার আব্দুল ওয়ারিশ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

মেয়র বলেন, চসিক ও সিএমপি যানজটমুক্ত চট্টগ্রাম গড়তে একসঙ্গে কাজ করছে৷ ইতোমধ্যে উচ্ছেদ কার্যক্রমের কারণে শহরে যানজট কমেছে৷ এই চুক্তির আওতায় পারস্পরিক তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে আমরা নিরাপদ নগর পরিকল্পনায় আরো এগিয়ে যাব৷

সিএমপি কমিশনার বলেন, তথ্যের এই আদান-প্রদান ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা আরো বেশি বিজ্ঞানভিত্তিক ও গতিশীল করবে, ভূমিকা রাখবে সড়ক আরো নিরাপদ করতে৷

ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি (বিআইজিআরএস) বিশ্বের ২৮টি শহরে রোড ক্র্যাশে মৃত্যু ও হতাহতের সংখ্যা কমাতে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করেছে। চট্টগ্রামেও বিআইজিআরএসের কারিগরি সহায়তায় চসিক ও সিএমপি নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে যৌথভাবে কাজ করবে।

চুক্তির লক্ষ্য চট্টগ্রামে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার জন্য দায়িত্বশীল দুটি প্রধান সংস্থা সিএমপি এবং চসিকের মধ্যে একটি সমন্বয় প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করা। নগরের সড়ক ব্যবস্থাপনা, সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য লিপিবদ্ধ করা এবং তদন্তের দায়িত্ব সিএমপির। অন্যদিকে নিরাপদ সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিদ্যমান রাস্তাগুলোর দেখভালের কাজটি চসিকের।

এই চুক্তির মাধ্যমে, উভয় সংস্থাই নগরে সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার জন্য তথ্য আদান-প্রদান এবং সমন্বয় করবে। এই চুক্তি দুর্ঘটনার তথ্য আদান-প্রদান, ব্যবস্থাপনা এবং বিশ্লেষণ, রাস্তার ডিজাইন এবং তথ্য-উপাত্ত যথাযথভাবে ব্যবহারের জন্য একটি প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করবে। এর ফলে প্রতিটি সংস্থা কার্যকরভাবে তথ্যগুলো কাজে লাগিয়ে সড়ক নিরাপত্তায় শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে। এ ছাড়া সড়ক অবকাঠামোর নকশা, নির্মাণ, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ে উভয় সংস্থা একে অপরের সঙ্গে পরামর্শ করবে।

চুক্তির অধীনে চসিক ও সিএমপি দুর্ঘটনার তথ্য- প্রমাণ বিশ্লেষণ করে শহরে দুর্ঘটনা ও হতাহতের ঘটনা কমিয়ে আনতে একটি সমন্বিত ব্যবস্থা নেবে। তারা তথ্য বিশ্লেষণ করবে এবং যৌথভাবে বার্ষিক সড়ক নিরাপত্তা প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। সংস্থাগুলো শহরের সড়ক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান এবং সড়কগুলো চিহ্নিত করতে একত্রে কাজ করবে, যেখানে নকশা পরিবর্তন, পরিমার্জন করা দরকার। বৃহত্তর অর্থে, এই চুক্তি সড়ক নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য চসিক ও সিএমপির মধ্যে একটি সমন্বিত পদ্ধতির বিকাশ ঘটাবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম বাহাদুর, আবুল হাসনাত মো. বেলাল, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আকবর আলী, ফরহাদুল আলম, জসিম উদ্দিন প্রমুখ।