চট্টবাণী ডেস্ক: সোমালিয়া উপকূলে জলদস্যুদের হাতে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ আবদুল্লাহতে মজুদ খাবার পানি ফুরিয়ে আসছে। ২০০ টন বিশুদ্ধ পানি মজুদ ছিল জাহাজে।
ইতিমধ্যে নাবিকদের রেশনিং করে পানি সরবরাহের ধাপটি শুরু হয়েছে।জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকেরা পরিবারের সদস্যদের এসব তথ্য জানিয়েছেন।
সূত্র জানায়, ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করেছিল সোমালিয়ার জলদস্যুরা। চট্টগ্রামের কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন জাহাজটি বর্তমানে সোমালিয়ার গদভজিরান জেলার জিফল উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে আছে।
এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করার সময় জাহাজটিতে নাবিকদের জন্য প্রায় ২৫ দিনের হিমায়িত খাবার মজুদ ছিল। তবে শুকনো খাবার অনেক দিনের জন্য মজুদ রয়েছে।
এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করার সময় জাহাজটিতে ২০০ টন বিশুদ্ধ পানি ছিল।
জানতে চাইলে জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, আবদুল্লাহ জাহাজে পানি রেশনিং করা হচ্ছে। নাবিকদের খাবার নিয়ে আশা করি সমস্যা হবে না। কারণ জাহাজে মজুদ খাবার ফুরিয়ে এলে জলদস্যুরা নাবিকদের খাবার সরবরাহ করে থাকে।
তিনি বলেন, জিম্মি নাবিকসহ জাহাজটি মুক্ত করার লক্ষ্যে তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এখনো চূড়ান্ত সমঝোতা হয়নি। যত দ্রুত সম্ভব নাবিকদের ফিরিয়ে আনাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আনাম চৌধুরী বলেন, গত বৃহস্পতিবার আমাদের সঙ্গে এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা সবাই ভালো আছেন। জলদস্যুরা মঙ্গলবারের দিকে নিজেরা খাবার জন্য স্থানীয়ভাবে কিছু ভেড়ার (দুম্বা/ছাগল) মাংস সংগ্রহ করেছে। এক্ষেত্রে তারা নাবিকদেরও কিছু খেতে দিয়েছে। এর কারণ হচ্ছে জাহাজের খাবারের মজুদ শেষ হলে জলদস্যুদের সরবরাহ করা খাবারই খেতে হবে নাবিকদের। এর জন্য অভ্যস্ত করার চেষ্টা। কারণ জলদস্যুদের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য হলেও নাবিকদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যদি জাহাজ মালিকপক্ষ, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে জলদস্যু পক্ষের (তৃতীয় পক্ষ) আলোচনা চূড়ান্ত হয় তখনই কেবল জাহাজটি কাছের কোনো বন্দরে যেতে পারবে। মেরিটাইম বিশ্বের অনুশীলন হচ্ছে সেক্ষেত্রে জাহাজটির বর্তমান নাবিকদের প্লেনে নিজ দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। কারণ তারা শারীরিকভাবে ফিট থাকলেও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকে। অন্যদিকে জাহাজ মালিক পক্ষ আরেকটি টিম পাঠাবে জাহাজটি পরবর্তী বন্দরে পণ্য খালাসের জন্য। সব কিছু হয় বোঝাপড়ার মাধ্যমে প্রয়োজন অনুযায়ী। এক্ষেত্রে আমরা আশাবাদী এমভি আবদুল্লাহর জিম্মি নাবিকরা যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরে আসবেন।
সুত্র: বাংলানিউজ