নিজস্ব প্রতিবেদক:: একুশ আমাদের মননের বাতিঘর তাই একুশের চেতনায় জাতি বিনির্মাণে এগিয়ে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে অমর একুশে বই মেলা মঞ্চে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মেয়র বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস আমাদের জাতিসত্তার বিকাশে এক অনবদ্য সংযোজন। অসাধারণ আত্মত্যাগের এক বিশাল অর্জন।
পৃথিবীর ইতিহাসে বাঙালি এক অনন্য জাতি। পৃথিবীতে খুব কম জাতি আছে যারা ভাষা, সংস্কৃতি রক্ত দিয়ে রক্ষা করেছে। রক্ত দিয়ে বাঙালি নিজের রাষ্ট্র তৈরি করেছে, তার নিজস্ব সংস্কৃতিকে বিকশিত করছে, অসম্প্রদায়িক চেতনা তুলে ধরছে। একুশের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। একুশের চেতনা হারিয়ে ফেলা যাবে না। বিশেষ করে তরুণ সমাজকে একুশের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের কোনো সিটি করপোরেশন বই মেলার আয়োজন করেনা। একমাত্র চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এই বইমেলার আয়োজন করে। চট্টগ্রামের এই বই মেলা এখন তরুণ তরুণী, কিশোর কিশোরী, লেখক, সাহিত্যিকদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। আমাদের লোক সংস্কৃতি হারিয়ে যেতে বসেছে। পুঁথি পাঠ হারিয়ে গেছে। কবি গান,যাত্রা গান বিলুপ্ত প্রায়। এজন্য আগামীতে আঞ্চলিক গানের উৎসব করব।
প্রধান আলোচক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভাষা বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. সৌরভ সিকদার বলেন, ভাষা একটি জাতির পরিচয়ের অনেক বড় একটি বাহন। ভাষাগত পরিচিতি একটি জাতিকে স্বতন্ত্র মর্যাদায় ভূষিত করে। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবে। অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে শহিদ মিনার প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, বিদেশি ভাষা শিখা কোনো বৈরিতা নয় কিন্ত আগে আমাদের বাংলা ভাষা শুদ্ধভাবে লিখতে ও পড়তে জানতে হবে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে বই মেলার আয়োজনকে একটি মহতি উদ্যোগ বলে অভিহিত করেন তিনি।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর রেজাউল করিম এবং কাউন্সিলর নুরুল আমিন বক্তব্য রাখেন।
এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক, আবদুল মান্নান, সংরক্ষিত কাউন্সিলর আনজুমান আরা, প্রধান প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম মানিক এবং প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ও মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম।
আলোচনা সভা শেষে মহান একুশ উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন, উপস্থিত বক্তৃতা ও দেশের গান প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাত পুরস্কার তুলে দেন মেয়র ও অতিথিবৃন্দ। মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, দ্য ক্লাসিকাল এন্ড ফোক ডান্স, চারুতা ললিতকলা একাডেমি, বেতার ও টিভি শিল্পী ঐশী কর,নুসরাত জাহান রিনি,রিমি সিনহা, মোঃ জাহেদ হোসেন ও আলপনা দেব।