ডেস্ক রিপোর্ট: ৪৭তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার থিমকান্ট্রি যুক্তরাজ্য হলেও রিকশাচিত্রে নজর কেড়েছে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন। আর তাই থিম-সজ্জা আর মেলা প্রাঙ্গণে বেচাকেনায় সবচেয়ে জনপ্রিয় দেশ হওয়ার কারণে ‘বিশেষ সম্মানে’ ভূষিত হয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে বাংলাদেশি বইয়ের জনপ্রিয়তা প্রতিবারই থাকে। সারা বছর বঙ্গবাসী অপেক্ষা করেন এই সময়টার জন্য। একমাত্র এ সময়টায়, এক বাংলার লেখকের সৃষ্টির শিহরণ তোলে আরেক বাংলার পাঠকদের মনে। আর দিনদিন বাংলাদেশি বইয়ের জনপ্রিয়তার জন্য গত ১১ বছর ধরে শুধু বাংলাদেশের বইয়ের পসরা নিয়ে কলকাতায় হয়ে থাকে বাংলাদেশ বইমেলা।
তবুও কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশি বইয়ের বেচাকেনা সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। আর সেই উন্মাদনা এবং সেরা প্যাভিলিয়ন সজ্জার জন্যে বইমেলার আয়োজক কমিটি পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মাননায় সম্মানিত হলো বাংলাদেশ। সম্মাননা তুলে দেন বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী। তা গ্রহণ করেন কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের দূতালয় প্রধান (এইচওসি) সিকদার মহম্মদ আশরাফুর রহমান।
এইচওসি বলেছেন, দুই বাংলার মেলবন্ধনের অন্যতম সেতু হলো সাহিত্য এবং সংস্কৃতি। আর তা ধারণ করে বই। আর সেই বইয়ের মাধ্যমেই দুই বাংলার যোগসূত্র আরও দৃঢ় হয়েছে। ফলে প্রথমবারের মতো বইমেলায় যোগদান করতে পেরে আমরা আন্দিত। এবারের বাংলাদেশ প্যাভেলিয়ন রিকশাচিত্রে সাজিয়ে তোলা হয়েছে, যা বঙ্গবাসীর মনে ধরেছে। শুধু তাই নয়, প্যাভিলিয়নে পশ্চিমবঙ্গের পাঠকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আমাদের আনন্দিত করেছে। এ ধরনের সম্মান আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে আরও সহযোগিতা করবে।
ডেপুটি হাইকমিশনের সহকারী কর্মী শেখ আব্দুস সামাদ বলেন, সমাপনী দিনে কর্তৃপক্ষের বিশেষ সম্মানে আমরা আনন্দিত। এই পুরষ্কার আগামী দিনে বড় পরিসরে অংশগ্রহণ করতে আমাদের আরও উৎসাহিত করবে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বইমেলা হিসেবে বহুকাল আগেই স্বীকৃতি পেয়েছে কলকাতা বইমেলা। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) রাত শেষ হলেই পর্দা নামবে ৪৭তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার। এবারে মেলা প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন সেজে উঠেছিল সম্প্রতি ইউনেস্কো স্বীকৃতি পাওয়া ঢাকার রিকশা ও রিকসাচিত্রে। সেই ঐতিহ্যগত কারুশিল্পকে প্রাধান্য করে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন সাজিয়ে তোলা হয়েছিল।
৩,২০০ স্কয়ার ফুটের এই প্যাভিলিয়নে অংশ নিয়েছিল ১২টি সরকারি ও ৩৩টি বেসরকারি প্রকশনা সংস্থা। মেলায় অংশ নেওয়া সরকারি সংস্থাগুলো হলো: গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন। প্যাভিলিয়ন উদ্বোধন করেছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমেদ। ২০ জানুয়ারি মেলা প্রাঙ্গণে পালিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ দিবস’।
১৮ জানুয়ারি শুরু হয়েছিল কলকাতা বইমেলা। ওই দিন বিকেলে বইমেলা প্রাঙ্গণে (সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্ক) মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ বিশিষ্টরা। এবারের থিমকান্ট্রি ছিল যুক্তরাজ্য। মেলায় অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ, আমেরিকা, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, পেরু ও কলম্বিয়া। প্রায় ১২ বছর পর অংশ নিয়েছে জার্মানি। অংশ নিয়েছিল ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের প্রকাশনা সংস্থা। রয়েছে তিনশোর বেশি লিটন ম্যাগাজিন স্টল।